ট্রেনের AC কামরায় চড়েছিলেন দম্পতি, সন্তানদের সামনে এ কী 'নোংরামি'...! রেলকর্মীরা দেখে ফেলতেই...ছিঃ!

ভারতীয় রেলের রন্ধ্রে রন্ধ্রে নানা ঘটনা। রোজ কত কী ঘটে! তবে সম্প্রতি ট্রেনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (AC) কামরায় চড়ে এক দম্পতি যা করলেন, তাতে ভীষণ রকম নিন্দার ঝড়। সন্তান্দের সামনেই এ কী নোংরামি! রেলকর্মীরা দেখে ফেলতেই লজ্জাজনক পরিস্থিতি। জানলে আপনিও অস্বস্তিতে পড়বেন।

অনেকেই ট্রেনে যাত্রা করার সময় নানা ধরনের ভুল করেন। কেউ টিকিট ছাড়া চড়ে বসেন, কেউ অন্যের আসনে বসে ঝগড়া বাধান, কেউ আবার টিকিট পরীক্ষক (TC) এলে মিথ্যা বলে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেন। এসব ঘটনা ট্রেনের অন্যান্য যাত্রী এবং রেল কর্তৃপক্ষের অজানা নয়।

ট্রেন সফর সাধারণত নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময়। সাধারণ, সংরক্ষিত এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (AC) কামরার মতো বিভিন্ন ধরনের কোচ থাকে, যাতে যাত্রীরা তাঁদের সুবিধামতো টিকিট কেটে ভ্রমণ করতে পারেন।

কিন্তু সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও দেখলে মনে হবে, ট্রেনে ওঠা যাত্রীদের মধ্যে কিছু নাছোড়বান্দা মানুষও রয়েছেন। তাঁদের কাণ্ড এবং দুঃসাহস দেখে অবাক হতে হয়!

ট্রেনের AC কামরায় সাধারণত বেশি সংখ্যক মানুষ ভ্রমণ করেন। এর মধ্যে শিশু, মহিলা, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও রোগীরাও থাকেন। তাই যাত্রীদের আরামের জন্য রেল কর্তৃপক্ষ বেডশিট, কম্বল, বালিশ ও তোয়ালে সরবরাহ করে। এগুলো ধুয়ে পরিষ্কার করে প্রতিটি যাত্রীকে দেওয়া হয়, যাতে তাঁরা যাত্রাপথে স্বাচ্ছন্দ্য পান।

সাধারণত, বেশিরভাগ যাত্রী এসব সামগ্রী ব্যবহার করেন এবং ট্রেন থেকে নামার সময় সেগুলো সিটে রেখে যান। কেউ কেউ নিজেদের বাড়ি থেকে কম্বল বা বালিশ নিয়ে আসেন এবং তা ব্যবহার করেন। তবে কিছু যাত্রী এই নিয়ম মানতে চান না। তাঁরা নিজেদের মতো করে ব্যাগভর্তি করে নিয়ে যান রেলের দেওয়া সামগ্রী!

এই ঘটনা কোনও গুজব নয়, বা বানানো কাহিনি নয়। উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ রেল স্টেশনে এ ঘটনা ঘটেছে। রেলকর্মীরা দেখেন, এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে AC কামরায় ভ্রমণ করছিলেন, রেলের দেওয়া কম্বল ও তোয়ালে চুপিচুপি ব্যাগে ভরে নিচ্ছিলেন।

রেলের কর্মীরা সন্দেহজনক যাত্রীদের ব্যাগ চেক করে থাকেন। সেই নিয়ম অনুযায়ী, এক কর্মী ওই ব্যক্তিকে ব্যাগ খুলতে বলেন, কিন্তু তিনি প্রথমে দেখাতে অস্বীকার করেন। শেষ পর্যন্ত রেলকর্মী ব্যাগ খুলে দেখেন, ভিতরে রেলের দেওয়া কম্বল ও তোয়ালে গুছিয়ে রাখা! এরপর সেই কর্মী সেগুলো বের করে নেন এবং অন্য যাত্রীদের সামনে তাঁকে নিয়ে ঠাট্টা করেন।

এক রেলকর্মী গোটা ঘটনাটি ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। মুহূর্তের মধ্যে সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। নেটিজেনরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওই ব্যক্তিকে ধিক্কার জানাচ্ছেন।

কোচ অ্যাটেনডেন্টদের বেতন থেকে কেটে নেওয়া হয় চুরির টাকা। প্রত্যেকটি AC কামরার জন্য রেলওয়ে একজন অ্যাটেনডেন্ট নিয়োগ করে। রেলওয়ের ঠিকাদারি সংস্থার পক্ষ থেকে অস্থায়ী কর্মীরা এই কাজ করে থাকেন।

যদি যাত্রীরা রেলের দেওয়া বেডশিট বা অন্য সামগ্রী চুরি করেন, তাহলে সেটির দাম কোচ অ্যাটেনডেন্টদের বেতন থেকে কেটে নেওয়া হয়। ফলে তাঁদের উপার্জনে বড় ধাক্কা লাগে। অনেক অ্যাটেনডেন্ট অভিযোগ করেন, তাঁদের বেতন এমনিতেই কম, তার ওপর চুরির জিনিসের দাম কেটে নিলে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ে।

রেল কর্তৃপক্ষ ট্রেনের ভিতরে চুরি ও অপরাধ রোধ করতে এখন CCTV ক্যামেরা বসাচ্ছে। এর ফলে অপরাধীরা সহজেই ধরা পড়ছে। নেটিজেনরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা এড়াতে সকলকে সতর্ক থাকা উচিত এবং ট্রেনের সম্পদ সুরক্ষিত রাখা উচিত।