মধুচন্দ্রিমা কাটাতে গিয়েছিল ছেলে-বৌমা...! হঠাৎ ফোন বাড়িতে, "বাবা আমায় বাঁচাও...!" কেঁপে উঠবেন শুনলেই

বিবাহের সম্পর্ক বলতেই বলে শত জন্মের বন্ধন। বিয়ের পর প্রত্যেক স্ত্রী ও স্বামীর মধ্যেই ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে সেই বাঁধন যা বিয়ের মাঙ্গলিক ক্ষণে সাত পাকের পবিত্র বন্ধনের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়।

ভারতীয় সমাজে সম্বন্ধ করে বিয়ের পাশাপাশি প্রেম ভালবাসার সম্পর্কের পরিণতিতেও বিয়ের পিঁড়িতে বসেন দুই পরিবারের সন্তানরা। আর তাঁদের ঘিরেই দুটি পরিবারও এক নতুন বন্ধনে আবদ্ধ হয়। পুত্রবধূ ও জামাই হিসেবে দুই পরিবারে জুড়ে যায় দুই নতুন সদস্য।

কিন্তু এমন বিয়ের উৎসব ও পবিত্র বন্ধনের আচার অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়েও কিন্তু সংসারে নেমে আসতে পারে অঘটন। এমনই এক অঘটনের ঘটনা ঘটেছে সম্প্রতি রাজস্থানের আলওয়ার জেলায়। যে ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে সকলকে।

আলওয়ার জেলার একটি বাজারের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে ঘটেছে এই চমকে ওঠা ঘটনা যা সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসে। আর যা শুনে সবাই এককথায় হতবাক।

রামবতার গুপ্ত নামের ওই ব্যবসায়ী জানান, সেদিন সকাল ১১টার দিকে তিনি একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন পেয়ে হকচকিয়ে যান। ফোনে জানতে পারেন তাঁর ছেলেকে অপহরণের মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। ফোন পেয়ে মুহূর্তে পায়ের তলা থেকে যেন মাটি সরে যাচ্ছিল তাঁর।

রাজস্থানের আলওয়ার জেলার বাজারের ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে যা ঘটেছে তা এককথায় বিশ্বাস করা রীতিমত কঠিন। প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, ওই ব্যবসায়ীকে ভয়ঙ্কর ভাবে প্রতারণা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। যদিও শেষমেষ তাঁর সতর্কতা এবং এক প্রতিবেশীর সহায়তায় এই ঘটনাটি এড়াতে পারেন তিনি।

ঘটনাটি ঘটে ৭ ডিসেম্বরে। জানা যায় একজন সাইবার জালিয়াত হঠাৎ ব্যবসায়ী রামবতার গুপ্তকে ডেকে জানায় একটি অপহরণের মামলায় তাঁর ছেলেকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। যদিও এটি ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা গল্প।

পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রামবতার গুপ্তা জানান, সকাল ১১টায় একটি অপরিচিত নম্বর থেকে হঠাৎ ফোন আসে। নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ওই ব্যক্তি বলেন, তার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে।

সেই সঙ্গে ফোনে এক ব্যক্তি তাঁর ছেলে সেজে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে বলে... "বাবা, আমাকে বাঁচাও... নইলে এরা আমাকে মেরে ফেলবে...।" এখানেই শেষ নয়, এরপর ওই প্রতারক অবিলম্বে তিন লাখ টাকা পাঠানোর দাবি করে এবং না পাঠালে তাকে ফাঁসানোরও হুমকি দেয়।

ফোন পেয়ে স্বভাবতই ঘাবড়ে যান ব্যবসায়ী। এরপর ব্যবসায়ী রামবতার সাহায্যের জন্য এলাকার আরেক ব্যবসায়ী সত্য বিজয়ের কাছে যান। সত্য বিজয় পুরো বিষয়টি শুনে বুঝতে পারেন 'ডাল মে কুছ কালা হ্যায়'।

কলারের নম্বর ও ডিপি দেখে সবাই কিছুক্ষণের মধ্যেই বুঝতে পেরে যান এটি আসলে একটি প্রতারণার মামলা। সত্য বিজয় রামবতারকে জানান যে কিছুদিন আগে তাঁর ভাগ্নেও একই রকম একটি ফোন পেয়েছিল, যাতে তাঁকে টাকা পাঠানোর হুমকি দেওয়া হয়েছিল।

রামবতার জানান, দু'দিন আগেই তাঁর ছেলের বিয়ে হয়েছে। আর ওইসময় তাঁর সদ্য বিবাহিত ছেলে ইয়াতিন তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে মধুচন্দ্রিমায় শ্রীনগরে গিয়েছিল, যার কারণে তাঁর ফোন বন্ধ ছিল। আর প্রতারক ঠিক এই তথ্যের সুযোগ নিয়েই একটি সাজানো গল্প তৈরি করে ফেলে।

আর বেশ দক্ষতার সঙ্গেই প্রতারণা করার চেষ্টা করে রামবতারকে। এরপরে বুদ্ধিমত্তা দেখিয়ে প্রতারকের ফোন পেয়ে রামবতার তাকে বলেন, তিনি ফোন কলে পুলিশকেও সংযুক্ত করেছেন। আর সে কথা শুনেই তৎক্ষণাৎ কলটি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় জালিয়াত। বড় রকমের বিপদের হাত থেকে বেঁচে যান রামবতার।