Train Tragedy || PM Modi: দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছতেই হঠাৎ এই 'দুই' আধিকারিককে ফোন প্রধানমন্ত্রী মোদির! কেন? রইল আসল কারণ

বালাসোর: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শনিবার বিকেলে ওড়িশার বালাসোর জেলার বাহঙ্গায় ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন। এদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। প্রধানমন্ত্রীকে উভয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দলের কর্মকর্তারা বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যাবতীয় বিস্তারিত তথ্য জানা।

ঘটনাস্থলেই ক্যাবিনেট সেক্রেটারি এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। উপস্থিত রেল আধিকারিক ও উদ্ধারকারী দলের প্রধানরা জানান, প্রধানমন্ত্রী আহতদের এবং তাদের পরিবারকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন। শোকাহত পরিবারগুলির কোনও অসুবিধা যাতে না হয় এবং ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হয় তা নিশ্চিত করতেও বলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।

এই দুই প্রধানের সঙ্গে ফোনে ঘটনাস্থল থেকেই কথা মোদির : প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকেই ফোনে কথা হয় ওডিশার রাজস্ব ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী প্রমিলা মালিকের। হয় বিস্তারিত আলোচনা। পাশাপাশি স্থানীয় পুলিশ প্রধানের সঙ্গেও কথা বলেন মোদি। দুর্ঘটনার পরে এই রুটে ট্রেন পরিষেবা পুনরুদ্ধার করার জন্য যে কাজ চলছে তার অগ্রগতি সম্পর্কেও খোঁজখবর নেন মোদি।

অন্যদিকে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং হাসপাতালে হতাহতদের সঙ্গে দেখা করার পরে, প্রধানমন্ত্রী মোদি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, "ট্রেন দুর্ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না।" তিনি আরও বলেন, "আহতদের আমরা সর্বোত্তম চিকিৎসা দেব।"

একইসঙ্গে সাহায্যের জন্য যারা পৌঁছেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় জনগণকে উদ্ধারে সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানান, যাদের অনেকেই রাতভর কাজ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, "ট্রেন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সব ধরনের সাহায্যের জন্য আমি স্থানীয় জনগণের কাছে কৃতজ্ঞ।" দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আমার শোক প্রকাশ করার কোনও ভাষা নেই। ঈশ্বর আমাদের এই অবস্থা থেকে উত্তরণের শক্তি দিন।"

এদিন বাহঙ্গা বাজারে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর আগে প্রধানমন্ত্রী ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে নয়াদিল্লিতে একটি উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন শনিবার সকালে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ট্যুইট করে জানানো হয়, 'প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের সভাপতিত্ব করেছেন। পর্যালোচনা সভায় ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধার, ত্রাণ ও চিকিৎসা সংক্রান্ত দিক নিয়ে আলোচনা হয়।"

২৮৮ যাত্রী নিহত, ৮০০ জনেরও বেশি আহত: প্রসঙ্গত, শুক্রবার সন্ধ্যায় বালাসোর জেলায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস এবং বেঙ্গালুরু-হাওড়া এক্সপ্রেস ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে যায় এবং করমণ্ডল এক্সপ্রেসের একটি পণ্য ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে ঘটে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।

ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা শনিবার সর্বশেষ পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী ২৮৮ এ পৌঁছেছে। এই দুর্ঘটনায় ৮০০ জনেরও বেশি যাত্রী আহত হয়েছেন, যা দেশের অন্যতম ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। আহতদের মধ্যে ৫৬ জন যাত্রী গুরুতর জখম হয়েছেন এবং ৭৪৭ জন সামান্য আহত হন।

দুর্ঘটনার জন্য শোক প্রকাশ করে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল (PMNRF) থেকে মৃতদের নিকটবর্তী আত্মীয়দের জন্য পরিবারপিছু ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের জন্য ৫০,০০০ টাকা অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন।

অন্যদিকে, রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব মৃতদের নিকটাত্মীয়দের জন্য ১০ লক্ষ টাকা, গুরুতর আহতদের জন্য ২ লক্ষ টাকা এবং সামান্য আহতদের জন্য ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক রাজ্যে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন।