৬ বছরের ছেলেটি মিষ্টি কিনতে দোকানে ঢুকল..., বাড়ি ফিরল ১৭ বছর পর! কী হয়েছিল? শুনলেই পায়ের তলা থেকে সরে যাবে মাটি

ভেবে দেখুন, যদি আপনি মিষ্টি কিনতে যানটি, এবং ১৭ বছর পর বাড়ি ফিরে আসেন তাহলে কেমন হবে? ৬ বছর বয়সি আরিফের সঙ্গেও ঘটেছিল এমনই একটি ঘটনা। ঠিক কী ঘটেছিল ২০০৮ সালের ৮ জুন?

বাড়ি থেকে বিকেল ৪টার দিকে, মিষ্টি কিনতে বেরিয়েছিলেন আরিফ। এরপর সে পথ হারিয়ে ফেলে এবং অদ্ভুত ভাবে নিখোঁজ হয়ে যায়, যা তার বাবা-মা, এহসান এবং আফসানা খানের জন্য জীবনে এক বড় আঘাত নিয়ে আসে। বহু খোঁজ-খবরের পরও তাঁর খোঁজ মেলেনি।

কিন্তু এরপর প্রায় ১৭ বছর পর, ২৩ বছর বয়সি আরিফ হরিয়ানার পঞ্চকুলাতে তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার কথা স্মরণ করে আরিফ বলেন, "মিষ্টি কিনে দোকান থেকে বেরোনোর ​​সময় আমি একজনকে দেখতে পেলাম যিনি আমার বাড়ির কাছেই থাকেন।তাই, আমি তাঁর পিছু নিলাম।"

আরিফ বলেন, "আমি ভেবেছিলাম ওই ব্যক্তি তাঁর বাড়ি যাচ্ছেন। এরপর পথে আমরা অনেক বাঁক নিলাম। কিন্তু, হঠাৎ লোকটি গাড়িতে উঠে চলে যান। আমি বাড়ি থেকে এত দূরে ছিলাম যে বাড়ি কীভাবে যাব বুঝতে পারছিলাম না।"

"এরপর এখানে-সেখানে ঘুরে বেড়ানোর পর, অবশেষে আমি গুরগাঁও পৌঁছে গেলাম।" আরিফ জানান, এইসময় কয়েকজন কলেজ ছাত্র আমাকে দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়।"

আরিফকে মিসিং চিলড্রেন হেল্পলাইনের অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সে সেখানে এক মাস ছিল, এই আশায় যে তার বাবা-মা তাঁকে খুঁজে পাবেন। এরপর, আরিফ বহু বছর ধরে বিভিন্ন অনাথ আশ্রম এবং চাইল্ড কেয়ার সেন্টারে ছিলেন, কিন্তু আশাবাদী ছিলেন যে তিনি তার বাবা-মায়ের সঙ্গে একদিন পুনরায় ঠিক মিলিত হবেনই।

কিন্তু, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, সেই আত্মবিশ্বাস ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে যায়। আরিফ বলেন, "আমি নিখোঁজ হওয়ার কয়েক বছর পর, আমার বাবা-মায়ের সঙ্গে আবার দেখা হওয়ার আশা করেছিলাম মনে মনে কিন্তু একদিন ধীরে ধীরে সেই আশা ম্লান হয়ে যায়"।

এদিকে আরিফের বাবা-মা তাকে খুঁজতে বিভিন্ন রাজ্য এবং বিভিন্ন চাইল্ড কেয়ার সেন্টারে ভ্রমণ করেছিলেন। যখনই কোথাও কেউ তাদের বলেন যে তাঁরা একটি শিশুকে খুঁজে পেয়েছেন, তারা সঙ্গে সঙ্গে সেই জায়গায় ছুটে গিয়ে সেই শিশুকে পরীক্ষা করে দেখতেন।

তাদের সেই নিরলস প্রচেষ্টা অবশেষে ২৪শে মার্চ একটি ফোন কলের মাধ্যমে সার্থক হয়, যেখানে তাঁরা জানান যে তাঁরা অবশেষে ছেলে আরিফকে খুঁজে পেয়েছেন।

আরিফের মা আফসানা বলেন, "আমাদের ছেলে ফরিদাবাদে কাজ করত। আমরা দুজনেই হরিয়ানায় গিয়েছিলাম এবং অবশেষে আমাদের ছেলেকে খুঁজে পেয়েছি"।

জানা যায়, ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত, আরিফ সোনিপতের একটি সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানে ছিলেন। সেখানে তিনি একটি কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে এবং বর্তমানে রেলওয়েতে কর্মরত রয়েছেন।