৬ ফুট ২ ইঞ্চি লম্বা, ১২৭ কেজি ওজন, ৫৩ ইঞ্চি ছাতি...! রামায়ণে ছিলেন 'হনুমান'! 'কত' ছিল দারা সিংয়ের একদিনের 'ডায়েট'? চমকে দেবে 'চার্ট'

বিখ্যাত কুস্তিগীর দারা সিংয়ের নাম নিশ্চয়ই শুনেছেন। বলুন তো ৬ ফুট ২ ইঞ্চি লম্বা, ১২৭ কেজি ওজনের এবং ৫৩ ইঞ্চি বুকের ছাতির অধিকারী দারা সিং-এর ডায়েট কী ছিল? গোটা একদিনে কী খেতেন কুস্তিগীর?

বাস্তবেই কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে অনেক বিখ্যাত কুস্তিগীরকে পরাজিত করতেন এই মল্লযোদ্ধা! যখনই দারা সিং কুস্তির আঙিনায় প্রবেশ করতেন, তখনই তার প্রতিপক্ষ লুকোতে পথ পেত না এমনই ছিল তার দঙ্গল ইমেজ।

পঞ্জাবে জন্মগ্রহণকারী দারা সিং ১৯৫০ এবং ১৯৬০ এর দশকে অনেক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কুস্তি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৪৭ সালে প্রথমবারের মতো মালয়েশিয়ান চ্যাম্পিয়নকে পরাজিত করেন দারা সিং।

এর পর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। ১৯৫৯ সালে বিখ্যাত কানাডিয়ান কুস্তিগীর কিং কংকে পরাজিত করে একটি চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিলেন ভারতীয় কুস্তিগীর। ১৯৬৬ সালে রুস্তম-ই-পঞ্জাব এবং ১৯৭৮ সালে রুস্তম-ই-হিন্দ উপাধিতে ভূষিত হন তিনি।

এহেন পরাক্রমশালী কুস্তিগীর দারা সিং-এর ডায়েটও কিছু কম চমকপ্রদ ছিল না। প্রতিদিন তিনি আড়াইশো গ্রাম দেশি ঘি, ৪ লিটার পর্যন্ত দুধ, ১০০ গ্রাম বাদাম, আধাকিলো মাংস এবং ৮ থেকে ১০টি রুটি খেতেন।

দারা সিং তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছেন যে খাবারের পাশাপাশি তিনি নিয়মিত প্রতিদিন ১০০ গ্রাম আপেল এবং গুজবেরি জাম খেতেন। দারা সিং আত্মজীবনীতে আরও লিখেছেন যে তিনি কখনও সকালের 'জলখাবার' বা 'নাস্তা' করতেন না। দিনে মাত্র দুবার খাবার খেতেন।

এখানেই শেষ নয়। ব্যায়ামের পর ঠাণ্ডাই পান করতেন বিখ্যাত কুস্তিগীর দারা সিং। মুরগির স্যুপও পান করা ছিল নিয়মিত রুটিনে। এর পাশাপাশি তিনি সপ্তাহে একবার উপবাস রাখতেন, যাতে তাঁর মেটাবলিজম ভাল থাকে।

তবে এখনকার অনেক কুস্তিগীর বা ব্যায়ামবীরদের মতো দারা সিং কিন্তু কখনই প্রোটিন পাউডার বা কোনও শেক খেতেন না। ওষুধ বা কোনও ধরনের কৃত্রিম খাদ্য গ্রহণ করেননি এই কুস্তিগীর। বরং প্রাকৃতিক জিনিসের ওপর নির্ভর করতেন বরাবর।

দারা সিং ষাটের দশকে এতটাই বিখ্যাত হয়েছিলেন যে তিনি চলচ্চিত্র এবং টিভি সিরিয়ালের অফার পেতে শুরু করেছিলেন। ১৯৫২ সালে পাঞ্জাবি ছবি 'সংদিল' দিয়ে অভিনয় জীবন শুরু করেন দারা সিং।

বিখ্যাত সিরিয়াল 'রামায়ণ'-এ হনুমানের ভূমিকা থেকে তাঁর জনপ্রিয়তা শীর্ষে পৌঁছয়। রামায়ণ দারা সিংকে পৌঁছে দেয় ঘরে ঘরে। এই সময়েই দারা সিং মাংস খাওয়া বন্ধ করে দেন এবং সম্পূর্ণরূপে এক ধার্মিক জীবনধারা অবলম্বন করেন।

দারা সিং কুস্তি ও সিনেমার পর রাজনীতিতেও প্রবেশ করেন। ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দেন এবং অটল বিহারী বাজপেয়ীর সরকার তাঁকে একসময় রাজ্যসভায় পাঠায়। ২০০৩ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন দারা সিং। পদ্মশ্রীতেও সম্মানিত হয়েছেন এই মহান কুস্তিগীর।