Murshidabad Folk Rituals : গাছের বিয়ে উপলক্ষে এলাহি ভুরিভোজে কব্জি ডুবিয়ে খেলেন ২০০ জন!

আষাঢ় মাস শেষ হতে চললেও দক্ষিণ বঙ্গে বৃষ্টির দেখা নেই। আবার লাগাতার বৃষ্টিতে উত্তরপূর্বে ভয়ংকর বন্যা। আবহাওয়াবিদরা কারণ হিসেবে দায়ী করছেন বিশ্ব উষ্ণায়নকে। বেড়ে চলা বিশ্ব উষ্ণায়নের (global warming and deforestation)অন্যতম কারণ হল নির্বিচারে গাছ কেটে ফেলা। বিশ্ব উষ্ণায়ন রুখতে ও সমাজে বৃক্ষচ্ছেদন প্রতিরোধে দুটি গাছকে কনে ও বর সাজিয়ে বিয়ে (Marriage between two trees)দেওয়া হল মুর্শিদাবাদ জেলার হরিহরপাড়ায় (Murshidabad district Hariharpara)। (প্রতিবেদন - কৌশিক অধিকারী)

পাকুড় গাছকে কনে ও বটগাছকে পাত্র বানিয়ে বিয়ে দেওয়া হল হরিহরপাড়া চোঁয়ার ঘোষপাড়া এলাকায়। হঠাৎ করে দেখে মনে হবে আসলেই বিয়ে হচ্ছে পাত্র পাত্রীর মধ্যে। পাত্র পাত্রীর বিয়ে বটে তবে মানুষের নয় । পাত্র ও পাত্রীর পুতুল তৈরি করে গাছের বিয়ে আয়োজন করা হল। তবে গাছের বিয়ে বলে এলাহি আয়োজন কিছু কম ছিল না। পাশাপাশি বট-পাকুড় গাছ থাকলে তাদের বিয়ে দিতে হয়। এই রীতি মেনেই ধুমধাম করে বিয়ে দেওয়া হলো গাছ দুটির।

বিয়েতে আমন্ত্রণ ছিল আত্মীয় স্বজন ও গ্রামের শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশুদের। দূর দূরান্ত থেকে এই বিয়ে দেখতে এসেছিলেন সাধারণ মানুষও। বিয়ে উপলক্ষে ভুরিভোজের আয়োজন ছিল প্রায় ২০০ মানুষের। বিয়ের রীতি মেনে নতুন কাপড় পড়িয়ে বিয়ে সম্পন্ন হয় বট ও পাকুড় গাছের। এমনকি দুটি পুতুল বর ও কনেকেও হাজির করা হয় মণ্ডপে।

অনুষ্ঠানটি জাঁকজমকভাবে করা হয়েছে, যাতে মানুষ সহজেই আকৃষ্ট হয়। এতে মানুষ সচেতন হবে বলে দাবি উদ্যোক্তাদের। গ্রামের বাসিন্দা তুলসী রাণী ঘোষ জানান, ষষ্ঠী গাছ আইবুড়ো ছিল। তাই ষষ্ঠীর গাছে পাশে আরও একটি গাছ লাগিয়ে আমরা বিয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করলাম। সমস্ত কিছু নিয়ম মেনেই হয়েছে। সকালে মেনুতে ছিল ঘুগনি মুড়ি।

বিয়ে উপলক্ষে দুপুরে ছিল ভাত ডাল, আলু পটলের তরকারি, চাটনি পাঁপড় ভাজা। বরযাত্রী কনে যাত্রী সবার জন্য রাতে পোলাও সহ পাঁচ তরকারীর ব্যবস্থা ছিল। পুরোহিত নিয়ামত চক্রবর্তী জানালেন, হিন্দু শাস্ত্রমতে বট ও পাকুড় গাছ পাশাপাশি থাকলে তাদের বিয়ে দিতে হয়। তাই ঘোষপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা এই বিয়ের আয়োজন করেন। যেভাবে পাত্র ও পাত্রীর বিয়ে হয় সেই ভাবেই এই বিয়ের ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।