মোটা মোটা বেগুনে ছেয়ে যাবে গাছ...! মাটিতে 'অ্যাড' করে দিন ম্যাজিক 'টোটকা', টবে নির্ঝঞ্ঝাটে করুন বেগুন চাষ, ১০০% অরগ্যানিক, গ্যারান্টি

কথায় বলে বেগুনের গুণ নেই। কিন্তু গরমে হোক বা শীতে বেগুন লাগে না কোনও পদে এমন দিন যায় কী বাঙালির? আসলে বাঙালি রসনায় বেগুনের মতো দরকারি সবজি আর দুটি খুঁজে পাবেন না। আবার এই বেগুনেই পুষ্টিরও শেষ নেই।

যদি আপনি স্বাস্থ্যকর এই সবজি দিয়ে সুস্বাদু বেগুন ভর্তা খেতে চান, অথবা ইলিশের ঝোলে ফেলে দিতে চান কয়েকটুকরো বেগুন, আবার সুক্তো রান্নাতেও দিতে চান এই- সবজি তাহলে এবার নিজের বাড়িতেই পুঁতে দিন বেগুন গাছ। কী ভাবে বাগানী বলে দিলেন দুর্ধর্ষ টোটকা। এই সিজনেই পাবেন ফল।

বাজারে দিন দিন বাড়ছে ফল ও সবজির দাম। আবার যখন স্বাস্থ্যের কথা আসে, তখন বাজার থেকে কেনা বেগুন স্বাস্থ্যকর কিনা তা জানা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। অনেক সময় বেগুন দেখতে বাইরে থেকে তাজা মনে হলেও ভেতর থেকে তা রাসায়নিক পদার্থে ভরা থাকে।

তাই এবার চাইলে বাজার থেকে কেনার পরিবর্তে, আপনি সহজেই বাড়িতে টবে বেগুন চাষ করতে পারেন। শুধু জানতে হবে সঠিক পদ্ধতি। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে বাড়িতে সহজেই রাসায়নিকমুক্ত অরগ্যানিক বেগুন চাষ করা যেতে পারে।

আজ এই প্রতিবেদনে আমরা আপনাকে শেয়ার করব কী ভাবে সহজেই বাড়িতে টবে রাসায়নিকমুক্ত এবং স্বাস্থ্যকর বেগুন চাষ করা যায়। জানলে অবাক হবেন, মাত্র দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে, আপনি একেবারে টাটকা এবং রাসায়নিকমুক্ত বেগুন চাষ করতে পারেন।

উপাদানের জন্য প্রয়োজনীয়:বীজসারটবমাটিজল

বীজটি অবশ্যই সঠিক হতে হবে:সঠিক বীজ থাকা মানেই ফসল ভাল হবে। যে কোনও ফসলের সাফল্য বা ব্যর্থতা অনেকটাই বীজের উপর নির্ভর করে। অতএব, টবে বেগুন চাষ করতে হলে প্রথমে সঠিক বীজ নির্বাচন করতে হবে। ভাল বীজ পেতে আপনি বীজের দোকানেও যেতে পারেন।

অনেকে বীজের পরিবর্তে ছোট বেগুন গাছের চারা দিয়ে চাষ করতে পছন্দ করেন। তবে টবে চাষের জন্য গাছের বীজ বেছে নিলে ভাল হবে। এটি আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করা থেকে রক্ষা করবে। আপনি বীজের দোকান থেকেও গাছের বীজ কিনতে পারেন।

মাটি প্রস্তুত করুন:যে কোনও ফসলের বীজ বপনের পর, এটি মাটির ধরণের উপর নির্ভর করে। অতএব পাত্রে কেবল তাজা মাটি রাখা উচিত। মাটি যোগ করার পর, একবার বা দুবার খুঁড়ে দিন যাতে মাটিতে উপস্থিত আর্দ্রতা চলে যায় এবং মাটি নরম হয়ে যায়।

মাটি ঘষে পরিষ্কার করার পর, কিছুক্ষণ রোদে রাখুন। নরম মাটির অর্থ হল বীজগুলি দ্রুত অঙ্কুরিত হবে এবং বেগুন শীঘ্রই শিকড় থেকে গজাতে শুরু করবে। মনে রাখবেন আপনার কেবল মাটির পাত্র বেছে নেওয়া উচিত।

এভাবে সার ব্যবহার করুন:মাটি প্রস্তুত করার পর, সার সঠিক হওয়াও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখবেন যে যখন আপনি মাটি খনন করবেন, তখন তা করার আগে অবশ্যই সার যোগ করুন। এর মাধ্যমে সার মাটির গভীরে পৌঁছে যায় এবং গাছ ভাল পুষ্টি পায়।

গাছের জন্য কখনও রাসায়নিক সার ব্যবহার করবেন না। এর জন্য, রান্নাঘরে পাওয়া যেকোনও জৈব সার, বাড়তি ফুল-পাতা বা কম্পোস্ট ব্যবহার করুন। মাটিতে সার মিশিয়ে দেওয়ার পর, বীজগুলি প্রায় ৩-৪ ইঞ্চি গভীরে রোপণ করতে ভুলবেন না। এতে শিকড় মজবুত হবে এবং ফসল ভাল হবে।

সেচ এবং আবহাওয়ার বিবেচনা:বীজ রোপণ এবং সার যোগ করার পর, পরবর্তী সময় জল দেওয়ার। প্রথমত, পাত্রে বীজ রোপণের পর, আপনাকে প্রায় এক থেকে দুই মগ জল ঢালতে হবে। পরেও, মাঝে মাঝে গাছে জল দিতে থাকুন।

জল দেওয়ার পাশাপাশি, আবহাওয়ারও যত্ন নিন। প্রাথমিকভাবে, বীজ রোপণের পর, পাত্রটি তীব্র রোদে রাখা উচিত নয়। কারণ এটি করলে ছোট গাছপালা দ্রুত মরে যায়। এর জন্য, আপনার পাত্রটি এমন জায়গায় রাখা উচিত যেখানে খুব বেশি সূর্যের আলো পড়ে না।

আগাছানাশক এবং ওষুধ স্প্রে:সাধারণত, টবে অতিরিক্ত ঘাস বা আগাছা জন্মে যায় অচিরেই। সেদিকে লক্ষ্য রাখা জরুরি। এমন পরিস্থিতিতে, সময়ে সময়ে পাত্র থেকে ঘাস বা আগাছা অপসারণ করতে ভুলবেন না।

এর পাশাপাশি, পোকামাকড়ের হাত থেকে গাছকে রক্ষা করার জন্য সময়ে সময়ে ওষুধ স্প্রে করাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে পোকামাকড় দূরে থাকে এবং ফসল ভাল হয়। তাই টবে বেগুন লাগানোর পর এই কথাটি মনে রাখবেন।

প্রায় তিন মাসের মধ্যে রেডি:হ্যাঁ, বেগুন চাষের মজা হল প্রায় তিন থেকে চার মাসের মধ্যেই প্রস্তুত হয় এই গাছ। আপনি চাইলে বেগুন গাছ থেকে তুলে সবজি হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন নির্দ্বিধায়। মনে রাখবেন, সবজি এবং ভর্তায় ব্যবহারের আগে একবার ভাল করে পরিষ্কার করে তারপর খাবারের জন্য ব্যবহার করুন বেগুন।