চকচক করবে মুখ...! রাতে ঘুমোনোর আগে এই 'জিনিস' দিয়ে জাস্ট 'আলতো' ম্যাসাজ, সকালে দেখুন তফাৎ

গ্রীষ্মকাল মানেই ত্বকের সমস্যা। একটু বাইরে বেরোলেই ঘাম, আঠালো ভাব আর কালচে ছোপ বারোটা বাজায় মুখের। এখানেই শেষ নয় মুখের সৌন্দর্যের দফারফা করতে ব্রণ হওয়াও সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়ায় গরমে।

পার্লারে ছুটে বা থেরাপিস্টের দরজায় গিয়েও অনেক সময় এটি কমাতে পারেন না অনেকে। তবে, রাতে ঘুমানোর আগে যদি ছোট্ট একটু কাজ করা যায়, তাহলেই কিন্তু কোনও খরচ ছাড়াই মুখের জেল্লা ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

আজ এই প্রতিবেদনে এমন একটি ছোট্ট টোটকার হদিস দেব যা প্রায় সব বাড়িতেই মজুত থাকে। আপনি এই ছোট ঘরোয়া প্রতিকার দিয়ে রাতে সামান্য একটু সময় খরচ করলেই আপনার ত্বক তার প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা এবং শীতলতা ফিরে পাবে।

নারকেল তেল যে চুলের যত্ন থেকে খাবার, নানা কাজে ব্যবহার হয় তা তো আমরা সবাই জানি। কিন্তু জানেন কী এই তেলে প্রদাহ-বিরোধী এমন বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ত্বকের শুষ্কতা দূর করে এবং ত্বককে আর্দ্রতা ফিরিয়ে দেয়।

এছাড়াও, নারকেল তেলে লরিক অ্যাসিড থাকে এবং এই তেলটি অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যেরও একটি ভাল উৎস। ত্বক যদি শুষ্ক হয়, তাহলে নারকেল তেল লাগালে মুখের শুষ্কতা দূর হয় এবং উজ্জ্বলতা দেখা দিতে শুরু করে।

তবে এই নারকেল তেলেই যদি এমন কিছু যোগ করা যায় যা আপনার হাতের কাছেই আছে, তাহলে ত্বকে এর প্রভাব বৃদ্ধি পায় দশ গুন। এই প্রতিবেদনে চলুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে মুখে নারকেল তেল লাগানো যেতে পারে এবং ত্বকের জন্য এর উপকারিতা কী।

শোয়ার আগে মুখে নারকেল তেল লাগানো ত্বকের জন্য একটি উপকারী বিকল্প। এটি ত্বককে চকচকে, নরম এবং স্বাস্থ্যকর করে তোলে। এই তেল ত্বকে শীতল প্রভাব ফেলে আবার বাড়ায় উজ্জ্বলতা।

১. এর জন্য, এক চামচ খাঁটি নারকেল তেল নিন এবং এটি আপনার মুখে দুই থেকে তিন মিনিটের জন্য বৃত্তাকার গতিতে লাগান, আপনার হাত দিয়ে আলতো করে ম্যাসাজ করুন।

৩০ মিনিটের জন্য রেখে দিন এবং তারপর সাধারণ জল দিয়ে আপনার মুখ ধুয়ে ফেলুন। এতে রক্ত ​​সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে, মৃত ত্বক দূর হবে এবং ত্বক ভিতর থেকে নরম হয়ে যাবে যা মুখে আশ্চর্য ম্যাজিকাল গ্লো আনবে।

২. আরেকটি বিকল্প হল নারকেল তেল এবং গোলাপ জলের মিশ্রণ। দুই টেবিল চামচ নারকেল তেলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা গোলাপ জল মিশিয়ে মুখে লাগান এবং বিশ থেকে পঁচিশ মিনিট রেখে দিন।

এরপর ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। গোলাপ জল ত্বককে ভাল করে তোলে এবং নারকেল তেল ত্বককে গভীরভাবে আর্দ্রতা দিতে পারে। গ্রীষ্মে, এই মিশ্রণ ত্বককে নরম এবং শীতল করে তোলে।

৩. নারকেল তেল এবং মুসুর ডালের গুঁড়ো - দুই টেবিল চামচ মুসুর ডালের গুঁড়ো এবং সমপরিমাণ নারকেল তেল মিশিয়ে মুখে পেস্টের মতো লাগিয়ে আধঘণ্টা রেখে দিন। শুকিয়ে গেলে হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

মুসুর ডালের গুঁড়ো ত্বক পরিষ্কার করে, ট্যান দূর করে এবং উজ্জ্বলতা দেয়। নারকেল তেল ত্বকের আর্দ্রতা বাড়ায়, ফলে ত্বক শুষ্ক লাগে না। এর ফলে মুখ পরিষ্কার, উজ্জ্বল এবং সতেজ দেখায়।

৪. মুলতানি মাটি এবং নারকেল তেল - ত্বক ঠান্ডা করার জন্য, আপনি রাতে ঘুমানোর আগে মুখে মুলতানি মাটি এবং নারকেল তেল লাগাতে পারেন। দুই টেবিল চামচ মুলতানি মাটি নারকেল তেলের সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।

এই পেস্টটি মুখে লাগান এবং সম্পূর্ণ শুকিয়ে যাওয়ার পরে ধুয়ে ফেলুন। মুলতানি মাটি ত্বক থেকে ধুলো, ময়লা এবং তেল দূর করতে সাহায্য করে, নারকেল তেল ত্বককে ঠান্ডা করে এবং পুষ্টি জোগায়। এই মাস্ক গরমে যে জ্বালাপোড়া হয় তাও কমাবে।

৫. স্নানের আগে নারকেল তেল এবং চন্দন কাঠের গুঁড়ো লাগালে ত্বক সতেজ লাগে। দুই চা চামচ চন্দন কাঠের গুঁড়ো নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এটি মুখে লাগান এবং বিশ থেকে পঁচিশ মিনিট রেখে দিন। তারপর মুখ ধুয়ে ফেলুন।

চন্দন ত্বককে ঠান্ডা করে। এটি লালচেভাব, ব্রণ এবং প্রদাহ কমায়। নারকেল তেল ত্বককে তাৎক্ষণিকভাবে উজ্জ্বল করে তোলে। সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজেই চিনতে পারবেন না নিজেকে।