Poila Baisakh Hal khata: কেন লাল রঙেরই হয় নতুন বছরের হালখাতা? অনেকেই জানেন না সেই ঐতিহাসিক কারণ
- Published by:Satabdi Adhikary
- news18 bangla
Last Updated:
এখন এই পুরনো ধাঁচের খেরোর খাতা প্রায় তৈরি হয় না বললেই চলে৷ অনেকদিনই হল এই লাল কাপড়ে মোড়া, মোটা সুতোর সেলাই জড়ানো লম্বা খাতার জায়গা করে নিয়েছে লম্বা লম্বা রুল টানা খাতা৷ যার পিচবোর্ডের মলাট কখনও সখনও লাল রঙের হয়৷ আর এখন তো ছোট ছোট লেখাপড়ার চৌকো খাতাই লাল পিচবোর্ডের মলাটে বিক্রি হয় পয়লা বৈশাখের আগে৷
advertisement
1/12

পয়লা বৈশাখ৷ এই দিনটার সঙ্গে বাঙালির এক রাশ আবেগ জড়িয়ে আছে৷ পয়লা বৈশাখ মানেই নতুন পাট ভাঙা সুতির জামা৷ পয়লা বৈশাখ মানেই দোকানে দোকানে নেমতন্ন৷ সবুজ-হলুদ রঙিন শরবত৷ মিষ্টির বাক্স৷ রজনীগন্ধার মালায় সাজানো দোকান৷ বৈশাখকে বরণ করে নেওয়ার দিন৷ পুরনোকে ফেলে শুরু নতুন বছর৷ নতুন বঙ্গাব্দ৷
advertisement
2/12
এই নতুন বছরের সঙ্গে আরও একটা বিষয় অঙ্গাঙ্গি ভাবে জড়িয়ে৷ তা হল হালখাতা৷ অনেক সোনার অলঙ্কার বা অন্যান্য দোকানে অবশ্য অক্ষয় তৃতীয়ার দিনেও হিসেবনিকেশের খাতা দিয়ে ব্যবসার নতুন বছরের শুরু হয়৷ তা-ও বাঙালির পয়লা বৈশাখের সঙ্গে হালখাতার সম্পর্ক অনেক দিনের৷
advertisement
3/12
ঐতিহাসিক দিক থেকে দেখতে গেলে অবশ্য সরাসরি বঙ্গাব্দ শুরুর সঙ্গে হাল খাতার যোগ তেমন পাওয়া যায় না৷ তবে নতুন বছরের হিসেবনিকেশ শুরু করতে গেলে লাল কাপড়ে মোড়া খেরোর খাতা বাঙালির ঐতিহ্য়৷ কিন্তু, প্রশ্ন, হঠাৎ লালই কেন হয় এই হাল খাতা?
advertisement
4/12
অনেকে বলবেন, লাল রঙ শুভ, লক্ষ্মী-গণেশের পুজো করে লাল সিঁদুরের স্বস্তিক চিহ্ন আঁকা দিয়েই তো লেখা শুরু হয় হালখাতার প্রথম পাতায়৷ এছাড়া, আরও একটা কারণ হতে পারে, লাল উজ্জ্বল রঙ। আর লাল রঙ মানেই দৃষ্টি আকর্ষণ৷ যে কোনও জায়গা থেকে অনায়াসেই চোখে পড়ে টকটকে লাল রঙ৷ কিন্তু, জানেন কি, আসলে হালখাতার রঙ লাল হওয়ার একটা ঐতিহাসিক দিকও রয়েছে৷
advertisement
5/12
ঐতিহাসিকদের অনেকেই দাবি করেন, মুঘল সম্রাট আকবরের আমলে বাদশাহকে খাজনা দেওয়ার সময় লাল শালু কাপড়ে বেঁধে দেওয়া হত৷ সেখান থেকেই হিসাবের খাতার রঙ লাল হয়েছে৷
advertisement
6/12
আকবরের নির্দেশ অনুযায়ীই নাকি নতুন বছরের প্রথম দিন ফসল কর আদায় কিংবা রাজস্ব আদায় করা হত। মুঘল রাজ জ্যোতির্বিদ একটি নির্দিষ্ট দিন ঠিক করেছিলেন – তারপর থেকেই ওইদিন হালখাতা উৎসব চালু হয়৷ তৎকালীন সমাজে তা পুণ্যহ বলে পরিচিত ছিল।
advertisement
7/12
আবার, একদল ইতিহাসবিদের দাবি, বাংলার হালখাতার প্রচলন শুরু হয় নবাব মুর্শিদ কুলি খাঁ – এর সময় থেকে। রাজস্ব আদায়ের জন্যই এই হালখাতার প্রচলন করেন তিনি। এটিকে লাল খাতা কিংবা খেরো খাতাও বলা হত। নতুন বছরে খাতার প্রথম পাতায় লাল সিঁদুরের স্বস্তিক চিহ্ন একেই সূচনা করা হত নতুন খাতা কিংবা হালখাতার।
advertisement
8/12
এছাড়া,বহু আগে থেকে বাংলায় এই বৈশাখের প্রথম দিনেই জমিদারদের খাজনা দেওয়ার রেওয়াজ ছিল৷ সেই হিসাব লেখা হত লাল কাপড়ে মোড়া নতুন হাল খাতায়৷
advertisement
9/12
অতীতে মুদি দোকান থেকে শুরু করে বড় বড় আড়ৎদার, সবার একটা বাকির খাতা থাকত। বছরের প্রথম দিন সকলে পুরনো বছরের বাকি চুকিয়ে হিসাব বন্ধ করত। তারপরে নতুন বছরে মিষ্টিমুখ করাতেন ব্যবসায়ীরা। তারপরই খোলা হতো নতুন হিসেবের খাতা।
advertisement
10/12
অনেকে দাবি করেন, 'হাল' শব্দটি নাকি সংস্কৃত ও ফারসি-দুটি ভাষা থেকেই এসেছে। সংস্কৃতে 'হল' শব্দের অর্থ লাঙল৷ সেখান থেকেই উৎপত্তি হয়েছে বাংলা শব্দ 'হাল'। তবে হাল খাতার ‘হাল’ সম্ভবত এসেথে ফারসি 'হাল' শব্দ থেকে৷ ফারসি থেকে আসা 'হাল' শব্দটির অর্থ ‘চলতি সময়’।‘খাতা’, যার অর্থ হিসাবের বই৷
advertisement
11/12
অতীতে মূলত এই খেরোর খাতা তৈরি করা হত বাংলাদেশে। বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই খেরোর খাতা তৈরিতে বিশেষ পারদর্শী ছিলেন। পরে তাঁরা অবশ্য বৈশাখের মাস ছয়েক আগেই কলকাতায় চলে আসতেন খাতা তৈরির জন্য৷ বৈশাখ পেরিয়ে গেলে ফিরে যেতেন গ্রামে৷
advertisement
12/12
এখন এই পুরনো ধাঁচের খেরোর খাতা প্রায় তৈরি হয় না বললেই চলে৷ অনেকদিনই হল এই লাল কাপড়ে মোড়া, মোটা সুতোর সেলাই জড়ানো লম্বা খাতার জায়গা করে নিয়েছে লম্বা লম্বা রুল টানা খাতা৷ যার পিচবোর্ডের মলাট কখনও সখনও লাল রঙের হয়৷ আর এখন তো ছোট ছোট লেখাপড়ার চৌকো খাতাই লাল পিচবোর্ডের মলাটে বিক্রি হয় পয়লা বৈশাখের আগে৷