দর্শক তাঁকেই 'ঈশ্বর' ভাবত, ২ বার বিয়ে করেও টেকেনি! ৪ সন্তানের বাবা, আজ পাশে কেউ নেই ভগবানের!
- Published by:Tias Banerjee
Last Updated:
সেই কৃষ্ণ আর হাসেন না। হয়ত পর্দার সেই শান্ত হাসি ছিল এক মুখোশ, যার আড়ালে জমে ছিল যন্ত্রণার এক পাহাড়। অথচ, আমরা তাঁকে দেখলে এখনও কৃষ্ণকেই দেখি—দর্শকের মনে এখনও তিনি ঈশ্বরতুল্য। কিন্তু ঈশ্বররাও কি কষ্ট পান না?
advertisement
1/13

এক সময় টিভির পর্দায় যাঁকে দেখলেই মনে হত, যেন ঈশ্বর নিজে এসে দাঁড়িয়েছেন আমাদের সামনে। তাঁর হাসি, তাঁর প্রতিটি সংলাপ—সব কিছুতেই ছিল এক অদ্ভুত শান্তি, এক অনির্বচনীয় মোহ। কিন্তু বাস্তব জীবনে সে শান্তি যেন বহু আগেই মুছে গিয়েছে।
advertisement
2/13
বয়স এখন বাষট্টি। জীবনে দুই বার বিয়ে করেছেন, কিন্তু কোনও সম্পর্কই টেকেনি। আজ তিনি চার সন্তানের বাবা, অথচ পাশে কেউ নেই। একাকীত্ব যেন তাঁকে ধীরে ধীরে গ্রাস করে নিচ্ছে।
advertisement
3/13
কখনও তিনি ছিলেন দর্শকের প্রিয়তম নায়ক। পর্দায় তাঁকে দেখে সবাই আনন্দ পেতেন, উৎসাহ খুঁজে পেতেন, জীবনের অনুপ্রেরণা পেতেন। অথচ আজ তাঁর নিজের জীবনটাই হয়ে উঠেছে এক বেদনার কাহিনি।
advertisement
4/13
এই মানুষটির জীবন যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়—স্ক্রিনে যেটা ঝকঝকে, সেটা বাস্তবে সব সময় সুখের হয় না। যাঁর মুখে একসময় ঈশ্বরের বাণী ফুটে উঠত, আজ তিনিই অবিশ্বাস, যন্ত্রণা আর একাকীত্বের এক জীবন্ত উদাহরণ।
advertisement
5/13
বুঝতেই পারছেন, নাম তাঁর নিতীশ ভরদ্বাজ—এক সময়ের পর্দার কৃষ্ণ, যাঁর মুখের হাসি দেখলে মন শান্ত হয়ে যেত, আজ তিনি নিজেই যেন ভাঙা আয়নায় নিজের জীবনের ছায়া খুঁজে ফেরেন। বয়স এখন ৬২। দু’বার বিয়ে করেছেন, দু’বারই বিবাহবিচ্ছেদ। চার সন্তানের বাবা হলেও, একাকীত্বই তাঁর আজকের সঙ্গী।
advertisement
6/13
এক সময়, যখন তিনি টেলিভিশনের পর্দায় মহাভারতের কৃষ্ণ রূপে আবির্ভূত হতেন, তখন তাঁর মুখের হাসিতে যেন ঈশ্বরেরই আভাস পাওয়া যেত। দর্শকদের মনে যিনি আনন্দ ও শান্তির বার্তা পৌঁছে দিতেন, আজ সেই মানুষটি নিজেই যন্ত্রণায় বিদ্ধ এক যোদ্ধা। এমনটা হয়ত পর্দার পেছনের গল্পেই হয়, যেখানে বাস্তব কখনও কখনও কল্পনার থেকেও বেশি নির্মম।
advertisement
7/13
নিতীশ ভরদ্বাজ ১৯৯১ সালে বিয়ে করেছিলেন মনীষা পাতিলকে, যিনি বিখ্যাত ম্যাগাজিন এডিটর বিমলা পাতিলের কন্যা। তাঁদের একটি পুত্র ও একটি কন্যা রয়েছে। প্রায় ১৪ বছর তাঁদের দাম্পত্য জীবন স্থায়ী হয়। কিন্তু মতবিরোধ ধীরে ধীরে সম্পর্কে ফাটল ধরায় এবং শেষপর্যন্ত বিচ্ছেদ ঘটে। কেন বিচ্ছেদ ঘটেছিল তা স্পষ্টভাবে কখনও সামনে আসেনি, তবে এই ঘটনাই তাঁর ব্যক্তিজীবনে নেমে আনে প্রবল অস্থিরতা।
advertisement
8/13
২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন আইএএস অফিসার স্মিতা গেটেকে। তাঁদের ঘরে জন্ম নেয় যমজ কন্যা। কিন্তু এই সম্পর্কও টিকল না। ২০১৯ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ ঘটে এবং এইবারের বিচ্ছেদ ছিল আগের থেকে অনেক বেশি প্রকাশ্য এবং কষ্টদায়ক। নিতীশ স্বীকার করেন, এই আলাদা হওয়া তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।
advertisement
9/13
নিতীশ পরে স্মিতার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানান। তাঁর দাবি, স্মিতা তাঁকে মানসিকভাবে অত্যাচার করতেন এবং মেয়েদের সঙ্গে দেখা করতেও বাধা দিতেন। নিতীশ বলেন, তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী স্কুল বদলে বদলে মেয়েদের লুকিয়ে রাখতেন, যাতে তিনি দেখা না করতে পারেন। এক সাক্ষাৎকারে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি নিতীশ। বলেছিলেন, তাঁর মেয়ের মুখে, “তোমাকে বাবা বলতে ঘেন্না হয়”—এই কথা শুনে যেন হৃদয় চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়।
advertisement
10/13
তিনি অভিযোগ করেন, স্মিতা ইচ্ছাকৃতভাবে মেয়েদের মনের মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে ঘৃণা তৈরি করেছেন। প্যারেন্টাল এলিয়েনেশন ও মানসিক হস্তক্ষেপের ভয়ঙ্কর উদাহরণ হয়ে উঠেছে এই সম্পর্ক।
advertisement
11/13
স্মিতা গেটে পাল্টা প্রেস কনফারেন্স করে সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দেন। বলেন, নিতীশ জনসমক্ষে তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চাইছেন এবং অসত্য কথা বলছেন। তিনি দাবি করেন, নিতীশ নিজেকে “ভিকটিম” হিসাবে উপস্থাপন করতে ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্য বিকৃত করছেন।
advertisement
12/13
মূলত পশু চিকিৎসাবিদ্যায় স্নাতক হলেও, সে পেশায় আনন্দ না পেয়ে অভিনয়ের জগতে পা রাখেন। প্রথমে মারাঠি থিয়েটার, তারপর হিন্দি নাটকে অভিনয় শুরু করেন। মাত্র ২৩ বছর বয়সে বিআর চোপড়ার ‘মহাভারত’-এ কৃষ্ণের চরিত্রে সুযোগ পান। সেই এক চরিত্রই তাঁকে রাতারাতি তারকা করে তোলে। এরপর ‘রামায়ণ’, ‘বিষ্ণুপুরাণ’-এর মতো ধারাবাহিকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন।
advertisement
13/13
আজ, সেই কৃষ্ণ আর হাসেন না। হয়ত পর্দার সেই শান্ত হাসি ছিল এক মুখোশ, যার আড়ালে জমে ছিল যন্ত্রণার এক পাহাড়। অথচ, আমরা তাঁকে দেখলে এখনও কৃষ্ণকেই দেখি—দর্শকের মনে এখনও তিনি ঈশ্বরতুল্য। কিন্তু ঈশ্বররাও কি কষ্ট পান না?