'এই' ব্যবসাতেই আছে 'কুবেরের ধন'...! ১৬ লক্ষ কোটি টাকার বাজার, চমকে দেবে 'নাম'!

ব্যবসা ও বিনিয়োগ নিয়ে দিন দিন মানুষের উৎসাহ বাড়ছে। নতুন প্রজন্মের মধ্যে এই উৎসাহ চূড়ান্ত ভাবে বেড়েছে গত কয়েক বছরে। কিন্তু কোন ক্ষেত্রে ব্যবসা সবচেয়ে বেশি লাভজনক হবে? কোন বিনিয়োগের ভবিষ্যৎ সবচেয়ে উজ্জ্বল? সেটা জানা জরুরি।

এবার উত্তর বলে দিলেন Zerodha-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা নিখিল কামাথ। একটি সাম্প্রতিক পোস্টে কামাথ বলেছেন, "গত দশক পর্যন্ত স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়গুলি মানুষের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ও অপ্রয়োজনীয় মনে হচ্ছিল, কিন্তু এখন শহুরে ভারতে সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু থাকার জন্য চর্চা মূলধারার মানুষের কাছে অগ্রাধিকার হয়ে উঠছে। আর সেই কারণেই সম্ভবত এখনই উদ্যোক্তাদের স্বাস্থ্য খাতে বড় কিছু করার সঠিক সময়।" কিন্তু কী ভাবে আর ঠিক কোন ক্ষেত্রে কুবেরের লাভের সুযোগ? জানুন সবিস্তারে।

ভারতে স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে আলোচনা এখন কেবল চিকিৎসার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, বরং মানুষ অসুস্থ হওয়ার আগেই তাদের স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে শুরু করেছে। আর এখানেই বিনিয়োগের বড় দরজা খুলে যাচ্ছে আগামী কয়েক বছরে।

পরিবর্তনশীল প্রবণতা এবং উঠে আসা নতুন নতুন তথ্য ও চমকপ্রদ কিছু পরিসংখ্যান এই পরিবর্তনকে আরও নিশ্চিত করছে। তথ্য বলছে, ভারতের প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা বাজার ২০২৫ সালের মধ্যে ১৬ লক্ষ কোটিতে (১৯৭ বিলিয়ন ডলার) পৌঁছতে পারে, যার মধ্যে ৮ লক্ষ কোটি (অর্থাৎ ৯৮ বিলিয়ন ডলার) যোগ করবে 'ফিটনেস এবং সুস্থতা' ক্ষেত্রটি।

হিসেব জানলে চমকে যাবেন। দেখা যাচ্ছে গত চার বছরে এই বাজার দ্বিগুণ হয়েছে, কারণ মানুষ এখন কেবল চিকিৎসা নেওয়ার পরিবর্তে স্বাস্থ্যের আগাম যত্নের প্রতি সক্রিয় হয়ে উঠছে।

ভারতে স্বাস্থ্য এবং ফিটনেস সম্পর্কে কী পরিবর্তন হতে চলেছে আগামী দিনে?ভারতীয়দের বার্ষিক ৪,০০০ থেকে ১০,০০০ টাকা স্বাস্থ্য-কেন্দ্রিক ব্যয় বাড়ছে। তবে, এই ব্যয়ের ৯৮% ব্যয় দেশের মাত্র ৩৫% ধনী ব্যক্তিরা করছেন। অন্যদিকে মজার বিষয় হল, ফিটনেস এবং সুস্থতা খাত এক্ষেত্রে কিন্তু সবচেয়ে দ্রুততম বর্ধনশীল খাত হয়ে উঠেছে, এই প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৫১%।

ভারতে ফিটনেস সংস্কৃতি কি সঠিক পথে এগোচ্ছে?ভারতে ৯৬,২৭৮টি জিম আছে, কিন্তু মাত্র ০.২% মানুষ জিমের সদস্যপদ গ্রহণ করে, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই সংখ্যা ২১.২%। যাঁরা জিমে যোগ দেন, তাঁদের মধ্যে ৫০% এরও বেশি নিয়মিত যান না। কারণ কী? জিমে ভিড়, দুর্বল সুযোগ-সুবিধা, পার্কিং সমস্যা এবং গ্রুপ ওয়ার্কআউটের অভাব। এই কারণেই, ৪৪% ভারতীয় এখন বাড়িতে ব্যায়াম করতে পছন্দ করেন।

ভারতে ব্যায়ামের প্রবণতা কেমন?২৯% ভারতীয় সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয়, যেখানে ৫৬% মাঝে মধ্যে ব্যায়াম করেন।যাঁরা ব্যায়াম করেন তাঁদের মধ্যে ৩৮% নারী এবং ৩৪% পুরুষ হাঁটা পছন্দ করেন।যোগব্যায়াম, দৌড়, সাইক্লিং এবং খেলাধুলার প্রতি এখনও তুলনামূলকভাবে কম আগ্রহ দেখা যায় এই দেশে।

স্বাস্থ্য এবং ফিটনেস স্টার্টআপগুলির জন্য কি এটি একটি বড় সুযোগ?নিখিল কামাত ঠিক এইখানেই তাঁর পরামর্শে বলছেন, ভারতে হেলথ অর্থাৎ স্বাস্থ্য এবং 'দীর্ঘায়ু' বা 'লংজিবিটি' শিল্পের উদ্ভাবনের সঠিক সময় এসে গিয়েছে।

ডিজিটাল স্বাস্থ্য প্ল্যাটফর্ম, ফিটনেস অ্যাপ এবং হোম-ওয়ার্কআউট সরঞ্জামের মতো জিনিসের চাহিদা এবার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এই সকল ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করলে আপনার কুবের হওয়া কেউ আটকাতে পারবে না।

মানুষ কেবল ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পরিবর্তে তাঁদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিতে চায়। আর সেখানেই রয়েছে বিনিয়োগের দুর্দান্ত বাজার। সঠিক জায়গায় বিনিয়োগে কোটি কোটি টাকার দরজা খুলে যাবে আপনার সামনে।

তবে এই পরিবর্তন থেকে এটা স্পষ্ট যে, এখন ভারতে স্বাস্থ্যসেবা কেবল রোগের চিকিৎসার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য এবং ফিটনেসের চর্চার উপর মনোযোগ দিয়ে মানুষ আগে থেকেই প্রস্তুত থাকতে আগ্রহী। আর সেখানেই বাড়বে বিনিয়োগের সঠিক ভবিষ্যৎ।