রাজধানীতে অবশ্য জল্পনা, নরেন্দ্র মোদি সরকারের সঙ্গে আর্থিক নীতির বিষয়ে দূরত্বের কারণেই ইস্তফা দিতে হল উর্জিতকে। আর্থিক নীতির বিষয়ে অর্থ মন্ত্রক এবং প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সঙ্গে দূরত্ব ভালমতোই বাড়ছিল উর্জিতের। মঙ্গলবার পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল কেমন হবে তা নিয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে উর্জিতের পদত্যাগ মোদি সরকারের কাছে অবশ্যই বড় একটা ধাক্কা।
advertisement
উর্জিতের ইস্তফা ভারতীয় বাজারের জন্য মোটেই ভাল খারাপ নয় ৷ অর্থনীতি বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ফলে ভারতীয় বাজার সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা জন্মাতে পারে বিদেশি লগ্নিকারীদের ৷ মঙ্গলবারই আবার রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীশগঢ়, মিজোরাম, তেলেঙ্গনা-পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফলাফল ৷ এমন সময় উর্জিতের ইস্তফা মোটেই স্বস্তি দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকারকে ৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, আরবিআইয়ের গভর্নরের পদে উর্জিতের উত্তরসূরী কে হবেন, তা যতো তাড়াতাড়ি ঠিক করবে সরকার, ততোই মঙ্গল ভারতীয় বাজারের জন্য ৷ নাহলে সর্বত্রই নেতিবাচক প্রভাবই পড়বে ৷
২০১৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের দায়িত্ব গ্রহণ করেন রঘুরাম রাজন ৷ মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তাঁর উত্তরসূরীকে নিয়ে যখন জল্পনা তুঙ্গে, তখন কয়েক মাস আগে রাজন জানান, দ্বিতীয় বার তিনি এই পদে থাকতে চান না। ফিরে যেতে চান পড়াশোনার জগতে। এরপরই শুরু হয় নতুন গভর্নরের খোঁজ। উঠে আসে বেশ কয়েকটি নাম। তালিকায় একেবারে ওপরের দিকে ছিলেন আরবিআই-এর চার ডেপুটি গভর্নরের একজন উর্জিত প্যাটেল। সেই তালিকায় ছিলেন নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান অরবিন্দ পানাগারিয়া, আরবিআই-এর প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নর সুবীর গোকর্ণ, রাকেশ মোহনও। ইউপিএ আমলে প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৌশিক বসু, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার সিএমডি অরুন্ধতী ভট্টাচার্যও। শেষমেশ অবশ্য উর্জিতকেই আরবিআইয়ের গর্ভনর হিসেবে বেছে নেয় কেন্দ্র। ২০১৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব নেন তিনি ৷ কিন্তু নিজের মেয়াদ কালের গোটা সময়টা থাকতে পারলেন না তিনি ৷ মেয়াদ শেষ হওয়ার অনেক আগেই বাধ্য হয়েই ইস্তফা দিতে হল উর্জিতকে ৷
গত বেশ কয়েকদিন ধরেই একের পর এক প্রশ্ন ধেয়ে আসছিল উর্জিতের দিকে। শীর্ষ ব্যাঙ্কের স্বাধীনতায় কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের চেষ্টা থেকে শুরু করে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারে মোদি সরকারের ভাগ বসানোর চেষ্টা— বাদ যাচ্ছিল না কিছুই। কিন্তু এই সমস্ত প্রশ্নবাণ থেকে অক্ষত থাকতে নীরবতাকেই শেষপর্যন্ত হাতিয়ার করেছিলেন উর্জিত। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ১০-১৫ দিনের মধ্যে সমস্ত প্রশ্নের লিখিত উত্তর পাঠিয়ে দেবেন তিনি। শেষপর্যন্ত অবশ্য আরবিআইয়ের গভর্নর পদ থেকে ইস্তফাই দিলেন উর্জিত ৷