কথিত আছে বাগদাদ থেকে ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্যেশ্যে ১৬৩৭ খ্রিস্টাব্দে এদেশে আসেন নিরগিন সাহা বাবা । দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ধর্ম প্রচার করে তিনি বাঁকুড়ায় এসে বীরসিংহপুর গ্রামে স্থায়ী ভাবে বসবাস করতে শুরু করেন । সেসময় চিকিৎসা শাস্ত্র এত উন্নত ছিল না । নিরগিন সাহা বাবার বিপুল ওষধি জ্ঞ্যান থাকায় অল্প দিনেই এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি । নিজের জ্ঞান ও অসাধারণ ব্যবহারে ধর্ম বর্ন নির্বিশেষে অসংখ্য মানুষের মন জয় করে অল্প দিনেই তিনি মানবতার প্রতীক হিসাবে এলাকায় পরিচিতি পান । বর্ধমান রাজার দেওয়ান কৃষ্ণ দত্ত নিরগিন সাহা বাবার ব্যবহার ও জ্ঞানে আপ্লুত হয়ে বীরসিংহপুর গ্রামে দারকেশ্বর নদের তীরে তাঁর বসবাসের জন্য জায়গা দান করেন । ১৬৫৭ সালের মাঘ মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার নিরগিন সাহা বাবা সেখানেই মারা যান ।
advertisement
তাঁর মৃত্যুর পর এলাকার হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের সকলে মিলে নিরগিন সাহা বাবার বসত বাটিতে মাজার স্থাপন করেন । তারপর থেকেই নিরগিন সাহা বাবার স্মৃতিতে প্রতি বছর মাঘ মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার শুরু হয় উৎসব । ধীরে ধীরে সময় যত গড়িয়েছে ততই পরিধি বেড়েছে উৎসবের । এখন শুধু এলাকার মানুষ নয় আশপাশের জেলা এমনকি ভিন রাজ্যের হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে বহু মানুষ মাঘ মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার ছুটে আসেন নিরগিন সাহা বাবার মাজার সরিফে । দুই ধর্মের মানুষই নিরগিন সাহা বাবার মাজারে চাদর চড়িয়ে পরিবার ও জগতের মঙ্গল কামনা করেন । এই উপলক্ষে বীরসিংহপুরের কাছে দারকেশ্বর নদের চরে রীতিমত মেলা বসে যায় । স্থানীয় মানুষের দাবি এই উৎসব কোনও ধর্ম বা বর্ণের নিজস্ব উৎসব নয় । এই উৎসব মানবতার ।