পাঁচকুলা থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত হাল্লোমাজরা ৷ সেখানেই একটি বিশাল বস্তিতে প্রতিদিন বিকেল ৫.৩০টা থেকে দেড় ঘণ্টার জন্য ক্লাস নেন অমিতা ৷ তাও সম্পূর্ণ নি:খরচায় ৷ চণ্ডীগড়ের এই পাঠশালায় ১৮ জন শিশুকে ক্যারাটে প্রশিক্ষণ দেন ৷ সেই সঙ্গে চলে অল্পবিস্তর পড়াশুনাও ৷ তবে, নিখরচায় এই সমাজসেবা বিফলে যায়নি অমিতার ৷ এই সমস্ত ছোট ছোট শিশুরাই আজ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন ক্য়ারাটে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ৷ কিছু কিছু ক্ষেত্রে পুরষ্কারও জিতে আনে তারা ৷ আর শিশুদের সেই সাফল্যই অমিতার কাছে এক পরম প্রাপ্তি ৷ যা টাকা পয়সার থেকেও অনেক বেশি আনন্দের ৷
advertisement
প্রমোদ কুমার এবং সুরাজ কুমার ৷ হাল্লোমজরার দুই খুদে পড়ুয়া ৷ যারা Third Heroes Taekwondo International Championship এবং Para-Taekwondo 2017-তে যোগ দিয়েছিল ৷ থনবুড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে এই চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজন করা হয়েছিল ব্যাঙ্ককে ৷ হংকং, চিন, উজবেকিস্তান, ইরান, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ফিলিপিনস, লাওস, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ইথিওপিয়া, নেপাল এবং কাতার ৷ এই দশটি দেশ যোগ দেয় এই প্রতিযোগিতায় ৷ সেই প্রতিযোগিতাতেই মেডেল জিতে আনে তারা ৷
একাদশ শ্রেণীর ছাত্র প্রমোদ ৷ তার বাবা স্থানীয় একটি ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন ৷ কিন্তু সেই টাকায় সংসার চলে না ৷ তাই স্কুলের পাট চুকিয়ে প্রমোদও কাজে লেগে পড়ে ৷ একটি ক্যাটারিং কোম্পানিতে ওয়েটারের কাজ করে প্রমোদ ৷ অন্যদিকে, সুরাজের বাবাও একটি মেডিকেল শপের সামান্য কর্মী ৷ ছেলের সাফল্যে বেজায় খুশি সুরাজের বাবা ৷ ব্যাঙ্ককে যাওয়ার আগে নেপাল, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ডেও বিভিন্ন ক্যারাটে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন সুরাজ ৷
অমিতা নিজে মেডিকেল ল্যাব টেকনলজি নিয়ে সায়েন্স গ্র্যাজুয়েট করেন ৷ স্কুলে পড়াকালীনই তিনি ক্যারাটে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেছিলেন ৷ এরপরই বিয়ের পর শুরু করেন তিনি অমিতা মারওয়াহ অ্যাক্টিভিটি সোশ্যাইটি ৷ যে সোশ্যাইটিরই সদস্য এখন বিভিন্ন বস্তির ছোট্ট ছেলেমেয়েরা ৷ এই কাজ শুরু করার পর বাধাও পেয়েছেন অমিতা ৷ কিন্তু সেই সমস্ত বাধাকে অতিক্রম করে স্বামীর সাহায্যেই এগিয়ে চলেছেন অমিতা ৷