এই অনুষ্ঠানে অসমের ভাষায় সকলকে অভিনন্দন জানিয়ে এবং দেবী কামাখ্যার কাছে প্রার্থনা করে মুকেশ আম্বানি নিজের বক্তব্য রাখতে শুরু করেন। কীভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্ব অসমকে ভারতের বিকাশের কাহিনির কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে, এরপর সেটাই তুলে ধরেছেন মুকেশ আম্বানি।
advertisement
রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যানের কথায়, “অসমের মানুষ তথা ভারতের প্রতিটি মানুষের সবথেকে বড় সুবিধা হল, তাঁরা প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বের আশীর্বাদ লাভ করেছেন।” মুকেশ আম্বানি আরও বলেন যে, “আপনি অসমে চারটি সুবিধা এনেছেন। আপনি অসমকে একটা জায়গা থেকে ভারতের বিকাশের কাহিনির কেন্দ্রবিন্দুতে এনেছেন। আপনি অসমকে একটা মন্ত্র দিয়ে দিয়েছেন, সেটি হল – ‘অ্যাক্ট ইস্ট, অ্যাক্ট ফাস্ট অ্যান্ড অ্যাক্ট ফার্স্ট’। আপনি উত্তর-পূর্বে সংযোগ তৈরির বিপ্লবের একটি অভূতপূর্ব যুগের সূচনা করেছেন। আপনি প্রযুক্তিকে উন্নয়নের প্রধান চালিকাশক্তি বানিয়েছেন। এত দিন অসম চায়ের স্বর্গ হিসেবে পরিচিত ছিল। আগামী সময়ে এটি প্রযুক্তির স্বর্গ হিসেবে পরিচিত হবে।”
অগ্রাধিকারের মূল ক্ষেত্র:
মুকেশ আম্বানি ঘোষণা করেছেন যে, আগামী পাঁচ বছরে ৫টি অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রে অসমে ৫০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে রিলায়েন্স। তাঁর বক্তব্য, “প্রথম অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র হবে অসমকে প্রযুক্তি এবং এআই-এর জন্য প্রস্তুত করা। জিও অসমকে ২জি মুক্ত এবং ৫জি যুক্ত করেছে। অসমের জনগণ মন থেকে জিও-কে গ্রহণ করেছেন, তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।” তিনি আরও জানান যে, “অসমে একটি এআই রেডি ডেটা সেন্টার স্থাপন করবে রিলায়েন্স। যেটা থেকে উপকৃত হবেন ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, শিক্ষিকা, চিকিৎসক এবং কৃষকরা। সেই সঙ্গে উপকৃত হবে যুব সম্প্রদায়ও। তাঁরা বাড়িতে বসেই শিখে আয় করতে পারবেন।”
এই অগ্রাধিকারের দ্বিতীয় প্রধান ক্ষেত্র হবে ক্লিন এবং গ্রিন এনার্জি। মুকেশ আম্বানির ঘোষণা, “অসমে কম্প্রেসড বায়ো গ্যাসের বিশ্বমানের দু’টি কেন্দ্র গড়ে তুলবে রিলায়েন্স।”
এর পাশাপাশি এটাও রিলায়েন্সের লক্ষ্য যে, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে অসমকে ফুড এবং নন-ফুড কনজিউমার প্রোডাক্টের অন্যতম প্রধান সরবরাহকারী হিসেবে গড়ে তোলা। এই প্রসঙ্গে মুকেশ আম্বানির বক্তব্য, “ইতিমধ্যেই কোলা বটলিং প্ল্যান্ট প্রতিষ্ঠা করেছে এই প্রতিষ্ঠান। এর পাশাপাশি রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড সেখানে ফুড পার্ক তৈরি করবে।” সেই সঙ্গে তিনি এ-ও বলেন যে, “এই রাজ্যে রিলায়েন্স রিটেল স্টোরের সংখ্যা আমরা দ্বিগুণ করে দেব। আর পঞ্চম অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র হল, একটি বিশ্বমানের সাত-তারা ওবেরয় হোটেলের মাধ্যমে রাজ্যের হসপিটালিটি বা আতিথেয়তার বিকাশ ঘটানো। আর এই পাঁচটি উদ্যোগ অসমের যুব সম্প্রদায়ের জন্য হাজার হাজার পরোক্ষ এবং প্রত্যক্ষ কর্ম সংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে।”
আরও পড়ুন-আসাম সফরে উত্তর-পূর্ব ভারতকে বিশেষ ‘গিফট’ নরেন্দ্র মোদির! কী কী বললেন প্রধানমন্ত্রী জানুন…
প্রসঙ্গত ২৫ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ মঙ্গলবার গুয়াহাটিতে ‘অ্যাডভান্টেজ অসম সামিট ২.০’ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরের নেতারা, অ্যাম্বাসাডর, নামীদামি শিল্পপতি এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। এই সামিট আসলে অসমের লগ্নি এবং পরিকাঠামো প্রেক্ষাপটকে রূপ দিতে একটা উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।