এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই বিভিন্ন পরামর্শ পেতে শুরু করেন, যেমন – অ্যাক্সিলারেটর ছেড়ে বাইক চালানো, ব্রেক না দিয়ে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত গিয়ারে গাড়ি থামানোর চেষ্টা করা বা পেট্রোলের সঙ্গে অ্যাডিটিভ মেশানো ইত্যাদি।
এর সঙ্গে আরেকটি পরামর্শ দেওয়া হয় যে, পেট্রোল ভর্তি করার সঠিক সময় কী হওয়া উচিত। এই প্রসঙ্গটি আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্রমশ ভাইরাল হচ্ছে।
advertisement
আরও পড়ুন- উচ্চমানের ফোন সস্তায়! ক্যামেরা দেখলে কেউ বলবে না বাজেট ফোন, কিনে ফেলুন জলদি!
আসলে এখন একটি গুজব ছড়ানো হচ্ছে যে, সকালে বা রাতে পেট্রোল বা ডিজেল ভরা গাড়ির ক্ষেত্রে বেশি উপকারী এবং সেই গাড়িটি ভাল মাইলেজ দেয়। এর পিছনে যুক্তি হল যে, এই সময়ে কম তাপমাত্রার কারণে জ্বালানির ঘনত্ব ভাল থাকে এবং বেশি পরিমাণে পেট্রোল বা ডিজেল পাওয়া যায়।
দিনের বেলা বেশি গরমের কারণে জ্বালানির ঘনত্ব কমে যায় এবং সঠিক পরিমাণে পেট্রোল পাওয়া যায় না। এই কারণে আজকাল সকালে ও গভীর রাতে পেট্রোল পাম্পে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিন্তু, এই বিষয়টি সম্পূর্ণ ভুল।
যে কোনও সময় গাড়িতে পেট্রোল ভরা হলেও, সবসময় একই ঘনত্ব পাওয়া যাবে যা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত। যদি ঘনত্বের মধ্যে কিছু পার্থক্য থাকে, তাহলে দিন বা রাতের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। যদি ঘনত্ব কারও কাছে সঠিক না হয় তাহলে ধরে নিতে হবে যে তিনি পাম্পে প্রতারিত হচ্ছেন।
পেট্রোল এবং ডিজেলের ঘনত্ব কত –
সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পেট্রোলের ঘনত্ব প্রতি ঘনমিটারে ৭৩০ থেকে ৮০০ কেজি এবং ডিজেলের ঘনত্ব প্রতি ঘনমিটারে ৮৩০ থেকে ৯০০ কেজি। এই ঘনত্বের পেট্রোল এবং ডিজেল সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ বলে মনে করা হয় এবং এতে তাপমাত্রার কোনও প্রভাব নেই।
আরও পড়ুন- বর্ষায় এই ভুলে বাড়ির টিভি হয়ে যেতে পারে খারাপ! এখনই সতর্ক থাকুন
পেট্রোল এবং ডিজেল ভর্তি করার সময় যে কেউ পাম্প মেশিনে এই ঘনত্বটি পরীক্ষা করতে পারেন। এই প্রসঙ্গে ভরতপুরের পেট্রোল পাম্পের অপারেটর ভরত মীনা জানিয়েছেন যে, এর কোনও সত্যতা নেই। কোম্পানি থেকে আসা পেট্রোল ও ডিজেলের ঘনত্ব কোনওভাবেই কমানো যাবে না। এতে তাপমাত্রার কোনও প্রভাব নেই এবং ঘনত্ব একই থাকে।
এখন গুজব হল তাপমাত্রা পেট্রোল, ডিজেলকে প্রভাবিত করে। কিন্তু কীভাবে করে তা কারও জানা নেই। কারণ পেট্রোল পাম্পে থাকা পেট্রোল ও ডিজেল ট্যাঙ্কগুলি ভূগর্ভস্থ এবং তাদের তাপমাত্রা ইতিমধ্যেই খুব কম। এমন পরিস্থিতিতে দিনের বাড়তি তাপমাত্রা বা রাতের শীতলতা কোনওভাবেই ঘনত্বকে প্রভাবিত করে না।
তেল ভরার সময় অপচয় –
গাড়িতে পেট্রোল বা ডিজেল ভরার সময় একটু অপচয় হয়, এটা একেবারেই সত্য। পেট্রোল এবং ডিজেল বাতাসের সংস্পর্শে এলে বাষ্পে পরিণত হয়। তবে এটি এত অল্প পরিমাণে যে এটি মাইলেজের উপর প্রভাব ফেলবে না এবং এটি গাড়ির কোনও ক্ষতিও করবে না।
গুজবে ক্ষতি –
এই গুজবের কারণে মানুষের সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিষয়টি ইন্টারনেটে ভাইরাল হওয়ার পর সকাল-সন্ধ্যায় বিপুল সংখ্যক মানুষ পেট্রোল ভরতে পাম্পে যাচ্ছে। যার কারণে অনেক পেট্রোল পাম্পে দীর্ঘ লাইন তৈরি হয় এবং মানুষ দীর্ঘক্ষণ জ্বালানির জন্য অপেক্ষা করে। অন্য দিকে, দিনের বেলা পেট্রোল পাম্পে খুবই কম ভিড় দেখা যাচ্ছে।