চেন্নাইয়ান এফসি ১
(ভাফা)
#কলকাতা: চার ম্যাচে মাত্র একটা জয়। ম্যাচ শুরুর আগে লিগ টেবিলের নবম স্থানে স্টিফেন কনস্টানটাইনের দল। পক্ষান্তরে, এক ম্যাচ কম খেলে চার পয়েন্ট নিয়ে চেন্নাই দলটি ছিল সাত নম্বরে। টুর্নামেন্টের শুরুতে যুবভারতীতে এটিকে মোহন বাগানের বিরুদ্ধে দুরন্ত জয় তুলে নিয়েছিল ব্রাডারিকের দল। তাই প্রতিপক্ষকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছিলেন লাল-হলুদ ব্রিটিশ কোচ।
advertisement
কিন্তু মাঠে তার একফোঁটাও দেখা গেলো না এদিন।ম্যাচের আগে, তিনি বলেন ‘এটিকে মোহন বাগান টুর্নামেন্টের অন্যতম শক্তিশালী দল। তাদের হারিয়েছে চেন্নাই। তাই তাদের হাল্কাভাবে নেওয়া চলবে না। প্রতিপক্ষে একঝাঁক দক্ষ ফুটবলার রয়েছে। তবে লক্ষ্য, জিতে মাঠ ছাড়া। আশা করছি, আজ সমর্থকরা হতাশ হবে না।’
কিন্তু শেষ পর্যন্ত হতাশ হয়েই মাঠ ছাড়লেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা।অজস্র মিস পাস এবং সুযোগ নষ্টের জন্যই ১ গোলে হারতে হল লাল হলুদকে।প্রথম অর্ধেই একাধিক সোনালী সুযোগ হাতছাড়া করেছে ইস্টবেঙ্গল। ২১ মিনিটে ক্লেইটনের বাড়ানো থ্রু বলে ডান দিক থেকে গোলে শট নেন সুহের কিন্তু বল বা দিকের পোস্ট ছাড়িয়ে বেরিয়ে যায়। ৩৬ মিনিটে ঠিক একই রকম মিস করেছেন ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড ক্লেইটন সিলভা।
গোলের ডান দিক থেকে কঠিন অ্যাঙ্গেলে শট নিয়েছিলেন, কিন্তু আগের বারের মতই বা দিকের পোস্ট ছাড়িয়ে বল বেরিয়ে যায়। এই দুটি মিসের পর আঁকড়ে ধরে চেন্নাইয়ান। ছোট ছোট পাস খেলে বলের দখল রেখে গোটা মিডফিল্ড দখল করে নিয়েছিল তারা। বার বার ডিফেন্স ভেদ করে বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল থ্রু বল, কিন্তু শেষ মুহূর্তে আটকে যাচ্ছিলেন তাদের স্ট্রাইকার রহিম আলি।
ইস্টবেঙ্গল একবারই কাউন্টার অ্যাটাকের সুযোগ তৈরি করতে পেরেছিল কিন্তু সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতার অভাবে দুটিই ভেস্তে গেছিল। দ্বিতীয় অর্ধে জঘন্য ফুটবল খেললো ইস্টবেঙ্গল।ম্যাচের বেশির ভাগ সময় পায়ে বল রাখতেই ব্যর্থ হচ্ছিল তারা। বেশিরভাগ বলের দখল চেন্নাইনের ছিল, ইস্টবেঙ্গল বল পেলে সঙ্গে সঙ্গেই হারিয়ে ফেলেছিল।
৬৯ মিনিটে কর্নার থেকে চেন্নাইনের ভাফা হেড দিয়ে গোলে বল ঢুকিয়ে দেন। যদিও জামা খুলে উল্লাস করার জন্য লাল কার্ড দেখানো হয় তাকে। ১০ জনে খেলতে বাধ্য হয় চেন্নাইয়ান কিন্তু কিছুক্ষন পরেই ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্ডার সার্থক ফাউল করে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। গোল খাওয়ার পর ইস্টবেঙ্গলের চেষ্টা চালাতে থাকে সমতায় ফেরার।
ইস্টবেঙ্গলের হয়ে বারবার ক্লেটন আক্রমণ করতে থাকেন।গোলের খোঁজে ব্রাজিলিয়ান এলিয়ান্দ্র কেও নামিয়ে দেন স্টিফেন।কিন্তু মাঝমাঠে প্লেয়ারদের বল ধরে রাখার ক্ষমতার অভাব এবং তার থেকেও বেশি বল কাকে দেবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতার অভাবে কিছু করে উঠতে পারলো না ইস্টবেঙ্গল। প্রতিটা প্লেয়ারের খেলার মান পাতে দেওয়ার যোগ্য ছিল না।
বলের দখল পাওয়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই হারিয়ে ফেলেছিল। মাঝে মাঝে ক্লেইটনের মত বড় প্লেয়ারও মনোসংযোগ হারিয়ে একই ভুল করছিল। ইস্ট বেঙ্গলের প্রতিটা প্লেয়ারের অত্যন্ত খারাপ ফর্ম।আর তারই খেসারত দিতে হলো এদিন তাদের।অন্যদিকে কলকাতার দুই প্রধানকে কলকাতার মাঠে হারিয়ে ঘরে ফিরলো দক্ষিণের দলটি।
জয়ের ফলে পঞ্চম স্থানে উঠে এলো তারা।পয়েন্ট খুইয়ে দশম স্থানে রয়েছে ইস্টবেঙ্গল।ম্যাচের শেষে সহজ গোলের সুযোগ নষ্টকেই হারের প্রধান কারণ হিসেবে তুলে ধরলেন স্টিফেন এদিন।কিন্তু এভাবে আর কতদিন? সমর্থকদের ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙছে।সমর্থকরা তাকে এবং তার মান্ধাতা আমলের ট্যাকটিক্যাল খেলানোর ধরণকেই দায়ী করছেন এই হারের জন্য।