পাঁচটা বলয়ই মিলিয়ে দিয়েছে দুই কোরিয়াকে। দক্ষিণ কোরিয়ার ছবির মত সুন্দর শহর পিয়ংচ্যাং। এখানেই বসেছে এবারের শীতকালীন অলিম্পিকের আসর। গেমসের দীর্ঘ ইতিহাসে ২৩-তম সংস্করণ।
উত্তর আর দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক লড়াইটা ৬ দশকেরও বেশি পুরনো। তবু ভাষা, সংস্কৃতি, গায়ের রংয়ের মত একসঙ্গেই বরাবর অলিম্পিকে নেমেছে দুই কোরিয়া। সেটা সামার হোক বা উইন্টার অলিম্পিক। কিন্তু কিম জমানায় পাল্টে যায় ছবিটা। ২০০৬ থেকে অলিম্পিকে আলাদা আলাদা দল নামাতে শুরু করে দুই কোরিয়া। যে ট্র্যাডিশন চলেছে ১২ বছর ধরে।
advertisement
অবশেষে আবার হাত ধরার পালা। এক যুগের রাজনৈতিক ঠান্ডা লড়াই ভুলে এবার অলিম্পিকটা যুগ্মভাবে আয়োজন করছে দুই কোরিয়া। আর পিয়ংচ্যাংয়ে সম্মিলিত দল হিসেবেই নামছে দু’দেশ। আইস হকি দলে ১২ জন উত্তর কোরিয়ানের সঙ্গে দক্ষিণের প্রতিনিধি ১১ জন। তাইকোন্ডোতেও পদকের দাবিদার সংযুক্ত কোরিয়া।
পিয়ংচ্যাংয়ে তাপমাত্রা এখন হিমাঙ্কের নিচে। মাইনাস ২০ ডিগ্রিতে অলিম্পিকের উদ্বোধন। কিন্তু তার পরতে পরতে মিশে রইল কোরিয়ান আতিথেয়তার উষ্ণতা।এবারের শীতকালীন অলিম্পিকে অংশ নিচ্ছে মোট ৯২টি দেশ। সবমিলিয়ে ২৯২০ জন প্রতিযোগী। আর ৭টি খেলার ১৫টি আলাদা ডিসিপ্লিনে থাকছে মোট ১০২টি ইভেন্ট।
শুক্রবার শুরু হওয়া গেমস চলবে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। উদ্বোধনী মার্চপাস্টের সঙ্গেই ছিল কোরিয়ান সংস্কৃতি আর উপকথার মিশেলে টানটান অনুষ্ঠান। মার্চপাস্টে ভারতের পতাকা বইলেন পুরুষদের লুগে অংশ নেওয়া শিবা কেশবন। অলিম্পিকে এবার মাত্র ২ প্রতিযোগীর দল পাঠিয়েছে ভারত।
গ্যালারিতে গেমসের উদ্বোধনে ছিলেন কিমের বোন। সঙ্গে সস্ত্রীক দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি। গেমসের উদ্বোধন হল মুন জাই ই-র হাত ধরেই।খেলোয়াড়দের তরফে অলিম্পিকের শপথ নিলেন মো তাই বুম। আর গোটা স্টেডিয়ামের গর্জনের মাঝে এবারের অলিম্পিক মশাল জ্বলে উঠল কিম ইউনার হাত থেকে।
তবে বর্ণাঢ্য উদ্বোধনে গোটা বিশ্বের নজর কেড়ে নিল দুই কোরিয়ার ড্রোনের খেলা। আকাশে রামধনুর খেলা উপহার দিল ১২১৮টা ড্রোনের কারসাজি। অলিম্পিকের পাঁচটা বলয় ফুটিয়ে তুলল ৩০০ ড্রোন।
সুরে-বর্ণে-সংস্কৃতিতে দুই কোরিয়ার মেলবন্ধন মুগ্ধতা ছড়াল বিশ্ব জুড়ে। কিমের মত রণং দেহি মিসাইলের গর্জন নয়। নিজস্ব সংস্কৃতির সঙ্গে প্রযুক্তির যুগলবন্দীতেই অনন্য হয়ে থাকল পিয়ংচ্যাং।