বছর ঘুরতেই আবারও সমস্যা। ক্লাব কর্তা বনাম বিনিয়োগকারীদের ঠোকাঠুকি। পরিস্থিতি এমন যে, ফেডারেশন ফুটবল ক্যালেন্ডার ঘোষণা করলে ইস্টবেঙ্গলের ভবিষ্যৎ ঘিরেও ধোঁয়াশা। চুক্তি সই জটে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সাবেকি ক্লাবকর্তাদের সংঘাত চরমে। বিনিয়োগকারী শ্রী সিমেন্ট কর্তৃপক্ষ বারে-বারে সরে দাঁড়ানোর হুমকি দিচ্ছেন। অন্যদিকে ক্লাব কর্তারাও বিনিয়োগকারীদের শর্তে চুক্তিপত্রে সই করতে নারাজ। সাবেকি ক্লাব কর্তাদের একাংশ এটিকে-মোহনবাগানের ধাঁচে চুক্তিপত্র সই করতে চাইলেও বেঁকে বসেছেন বিনিয়োগকারীরা।
advertisement
এটিকে-মোহনবাগানের চুক্তিতে ক্লাবের সত্ব রয়ে গিয়েছে সৃঞ্জয় বোস, দেবাশীষ দত্তদের হাতে। শুধু মাত্র ফুটবলের সত্ব রয়েছে নতুন সংস্থার হাতে। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের ক্ষেত্রে ফুটবলসহ ক্লাবের মালিকানা চাইছেন বিনিয়োগকারী শ্রী সিমেন্ট কতৃপক্ষ। গোল বেধেছে সেখানেই।
লাল-হলুদের (East Bengal Red Yellow) সাবেকি কর্তাদের মতে ফুটবল সংক্রান্ত যাবতীয় সত্ব নতুন কোম্পানিতে হস্তান্তর করতে কোন আপত্তি নেই। কিন্তু ক্লাবের জাকুজি, ক্লাব তাঁবু, ক্যাফেটেরিয়া কিংবা গ্যালারির কোন মতেই বিনিয়োগকারীদের হাতে দিতে রাজি নন তারা। শ্রী সিমেন্ট কর্ণধার বাঙ্গুর সাহেব নন, লাল-হলুদের সাবেকি কর্তাদের অভিযোগ, কলকাতায় বসে কলকাঠি নাড়ছেন বিনিয়োগকারীদের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি। দুই পক্ষের ব্যবধান বাড়ার পিছনেও কার্যকরী ভূমিকা রয়েছে ওই ব্যক্তির।
ইস্টবেঙ্গল আর শ্রী সিমেন্ট (Sree Cement)। চুক্তি কি সই হবে? কোটি টাকার প্রশ্ন। জট বেড়েই চলেছে। ময়দানের খবর নবান্নের দ্রুত হস্তক্ষেপ ছাড়া পরিস্থিতি উন্নতি হওয়া মুস্কিল। গত কয়েক মাস ধরেই ফাইনাল টার্মশিট দ্রুত সই করার জন্য চাপ দিচ্ছে বাঙ্গুর গোষ্ঠী। সই না হলে তাঁরা বিচ্ছেদ ঘটাবেন। আইএসএল থেকেও নাম তুলে নেবেন। প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়েই রেখেছেন। ক্লাব কর্তারা অনড়। তাঁদের যুক্তি ফুটবল দল চালানোর অছিলায় ক্লাবের দখল নিতে চাইছে শ্রী। ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার অবশ্য বলছেন,"আলোচনার দরজা সব সময় খোলা। আমরা ইতিবাচক ও সদর্থক মনোভাব নিয়েই আলোচনার টেবিলে বসে জট খুলতে আগ্রহী।"
দীর্ঘ মেল চালাচালিতে বরফ গলেনি। অদূর ভবিষ্যতেও সমাধান সূত্র মেলার সম্ভাবনা কম। এটা বুঝেই জট খুলতে উভয় পক্ষেরই বাজি সেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তৃতীয় বারের জন্য রাজ্যে সরকার গঠনের পর পারিপার্শ্বিক রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যস্ততা সামলে মুখ্যমন্ত্রী সময় দিতে পারবেন কী না, তার ওপরেই অনেকাংশে নির্ভর করে রয়েছে লাল-হলুদের ভবিষ্যত।