টানা ২৯ ম্যাচ অপরাজিত। চলতি ইউরো কাপের প্রথম ম্যাচে তুরস্ককে উড়িয়ে দেওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচেও সুইজারল্যান্ডকে নিয়ে ছেলেখেলা করেছে ইতালি। স্বপ্ন দেখাচ্ছেন ইমমোবাইল, ইনসিগনে, লোকাতেল্লির মত ফুটবলাররা। টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার আগে যাঁদের নিয়ে খুব একটা শব্দ খরচ করার প্রয়োজন মনে হয়নি, টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার পর তাঁরাই শিরোনামে। কিন্তু কী করে সম্ভব হল ? কোন ফর্মুলায় বদলে ফেললেন সবকিছু ?
advertisement
প্রশ্নটা শুনে একগাল হাসছেন মানচিনি। ঠান্ডা মাথার অভিজ্ঞ ম্যানেজার পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন তিনি ম্যাজিক জানেন না। দলের দুর্বলতা খুঁজে বের করে তার মেরামতি করতে জানেন। পেশাদার ম্যানেজার। তাই বলতে চাইলেন না কোন মন্ত্রে পাল্টে দিয়েছেন দলটাকে। শুধু জানিয়েছেন প্রতিটা পজিশনে বুঝে ফুটবলার নেওয়ার পাশাপাশি নিজের দেশের অতীত ইতিহাস মনে গেঁথে দিয়েছেন ফুটবলারদের। ইতালির জার্সির মাহাত্ম্য কত বড়, সেটা বুঝিয়েছেন। আর যে ফরমেশনে খেলাতে চান, তা অনুশীলন করেছেন দীর্ঘদিন ধরে।
তবে প্রথম দল হিসেবে শেষ ১৬ নিশ্চিত করেও নিশ্চিন্ত নন মানচিনি। জানিয়েছেন এই টুর্নামেন্টে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স রয়েছে। রয়েছে ইউরোপ সেরা পর্তুগাল এবং ফিফার এক নম্বর দল বেলজিয়াম। তাই এত শক্তিধর প্রতিপক্ষ থাকার কারণে কোনও অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস এবং গা-ছাড়া মনোভাব আসার জায়গা নেই তাঁর কাছে। তিনি শুধু ছেলেদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রতিপক্ষ বুঝে নিজেদের খেলা বদলানো এবং প্রয়োগ ঘটানোর ব্যাপারে। পাশাপাশি রিজার্ভ বেঞ্চ এবং প্রথম একাদশের ফুটবলারদের ড্রেসিংরুমে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা সাফল্যের অন্যতম কারণ।
অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার চিয়েলিনি চোট পেয়েছেন সুইজারল্যান্ড ম্যাচে। নিজেই উঠে আসেন তিনি। মানচিনি মনে করেন অভিজ্ঞ এই ডিফেন্ডারকে প্রয়োজন রয়েছে দলের। তবে তাঁকে ছাড়াও অন্য অপশন রয়েছে তাঁদের হাতে। তিনি পরিষ্কার জানিয়েছেন বর্তমান ইতালি দলটায় পিরলো, দেল পিয়েরও, ফ্রান্সিস্কো টোটির মতো তারকা কেউ নেই। কিন্তু টিম স্পিরিট এবং দলগত খেলায় ভাল করে দেখানোর মত চ্যালেঞ্জ নেওয়ার ক্ষমতা আছে। ইতিহাস সাক্ষী আছে। বহু দল ব্যক্তিগত প্রতিভাবান ফুটবলার নিয়ে যেখানে ধাক্কা খেয়েছে, সেখানে দলগত ফুটবল উপহার দেওয়া অন্য দল চ্যাম্পিয়নের মুকুট পড়েছে। এবারও সেরকম কিছু হলে অবাক হওয়ার থাকবে না।