২৬ বছর বয়সের একজন ফুটবলার, এখন পর্যন্ত যিনি ইউরোপের নামীদামি কোনো ক্লাবেই খেলেননি, কোনো ক্লাবের হয়ে কোনো ট্রফিও নেই এবং যাঁর জার্মানির জার্সিতেও অভিষেক মাত্র গত বছরের সেপ্টেম্বরে, তাঁর একটা আত্মজীবনী থাকা একটু বিস্ময়কর বৈকি। জার্মান ভাষায় গোসেনস নিজের আত্মজীবনীর যে নাম দিয়েছেন, সেটার বাংলা করলে অবশ্য জীবনী লেখার উদ্দেশ্য কিছুটা বোঝা যায়। ‘ট্রয়মেন লোনট জিশ’ মানে ‘স্বপ্ন দেখা সার্থক’। খুব বড় স্বপ্ন গোসেনস দেখেননি যদিও। স্বপ্ন বলতে ফুটবলার হওয়া এবং জার্মানির জার্সি গায়ে খেলা। তা সেই স্বপ্ন তো তাঁর সত্যি হয়েছেই।
advertisement
৪-২ গোলে জার্মানির জয়ের পর তিনিই ম্যাচ সেরা। গোসেনসও ভাবেননি, দেশের হয়ে মাত্র নবম ম্যাচ খেলতে নেমেই এত কিছু পেয়ে যাবেন ! ফুটবলার হওয়ার স্বপ্নটা অবশ্য গোসেনসের ‘প্ল্যান বি’ ছিল। ‘প্ল্যান এ’ ছিল দাদার মতো পুলিশ হওয়ার। জার্মান মা ও ডাচ বাবার ঘরে জন্ম নেওয়া গোসেনস ছোটবেলায় দাদাকে পুলিশের পোশাকে দেখতে দেখতে নিজেকেও একসময় সেই পোশাকে কল্পনা করতে শুরু করেন। কিন্তু কপাল মন্দ, স্থানীয় এক পুলিশ অফিস থেকে বলা হলো, শরীরের তুলনায় তাঁর পা দুটো বেখাপ্পা, পুলিশের শারীরিক পরীক্ষায় তিনি উতরাতে পারবেন না।
অগত্যা প্ল্যান ‘বি’তেই যেতে হলো। আত্মজীবনীতে গোসেনস দাবি করেছেন, লোর আগেই তাঁকে নেদারল্যান্ডস দলে খেলার জন্য ডেকেছিলেন তখনকার কোচ রোনাল্ড কোমান। পৈতৃক সূত্রে তাঁর একটা ডাচ পাসপোর্টও আছে। তবে মন বলছিল, মাতৃভূমি ও জন্মস্থান জার্মানির কথা। মনের কথাই শুনেছেন গোসেনস।
ফুটবলার পরিচয়ের বাইরে আরও একটা পরিচয় আছে গোসেনসের। মনোবিজ্ঞানে ডিগ্রিধারী তিনি। খেলা না থাকলে তিনি মনোবিদই হয়ে যান। মানুষের মনস্তত্ত্ব ঘাঁটাঘাঁটি করা গোসেনসের প্রিয় শখগুলোর একটি। মুখ দেখে মানুষের মনের ভেতর আন্দাজ করতে পারেন। তাহলে কী রোনাল্ডোর মুখ দেখেই বুঝেছিলেন চেপে ধরলেই খেই হারিয়ে ফেলবে পর্তুগাল ? হাসিতে ফেটে পড়েন জার্মান যোদ্ধা।