দলের কোচ তিতে নিজেও চান না এই কঠিন সময়ে এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করুক ব্রাজিল। দলের সবচেয়ে বড় তারকা নেইমার প্রাণের ঝুঁকি নিতে নারাজ। দলের তরফ থেকে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে দিন তিনেক পর প্যারাগুয়ের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের পর এই নিয়ে মিডিয়ার সামনে মুখ খুলবে ফুটবলাররা। ব্রাজিল ফুটবল প্রেসিডেন্টের সঙ্গেও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। কলম্বিয়া এবং আর্জেন্টিনায় কোপা আয়োজন নিয়ে সমস্যা দেখা দেওয়ায় একেবারে শেষ মুহূর্তে তা স্থানান্তরিত হয় ব্রাজিলে।
advertisement
দক্ষিণ আমেরিকা ফুটবল সংস্থার (কনমেবল) প্রধান আলেসান্দ্রো দোমিনিগেস এই ঘোষণা করে ধন্যবাদ দেন ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি জ়ায়ের বোলসোনারোকে। কিন্তু কোপা আয়োজনে রাজি হওয়ায় রাষ্ট্রপতি এখন চাপে। ব্রাজিলে এখনও প্রত্যেক দিন ৬০,০০০ করে মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। গত তিন মাসে শুধু স্বাস্থ্য কর্মীদের মধ্যেই মৃতের সংখ্যা দু’লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। সংক্রমণ প্রতিরোধ করা বা প্রতিষেধক দেওয়ার অভিযানে পুরোপুরি ব্যর্থ বোলসোনারোর সরকার। গোটা দেশে মাত্র দশ শতাংশ মানুষ টিকা পেয়েছেন।
মানুষ ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন সরকারের বিরুদ্ধে। বিরোধীরা দাবি তুলেছেন, ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের প্রধানকে তলব করে প্রশ্ন করা হোক যে, দেশে করোনা নিয়ে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে কোপা আমেরিকা করার সম্মতি দিলেন কেন ? মামলা গড়িয়েছে সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, কোপা আয়োজনের বিশদ পরিকল্পনা জানাতে। কীভাবে করোনা স্রোতের মধ্যে কোপা আমেরিকা করা সম্ভব, তা জানাতে হবে বোলসোনারো সরকারকে।
কোপা আমেরিকা ব্রাজিলে হবে ঘোষণা হওয়া মাত্র তীব্র প্রতিক্রিয়া হয় সাধারণ মানুষের মধ্যেও। গণমাধ্যমে অনেকে একটি ছবি তৈরি করে দিতে থাকেন। কফিন লাথি মারছে ফুটবলের আদলে গোলাকৃতি ভাইরাসে। ফুটবল সংগঠকদের বিরুদ্ধে প্রচার চালু হয়েছে ‘কোভা-আমেরিকা’ নাম দিয়ে। পর্তুগিজ ভাষায় ‘কোভা’ শব্দের অর্থ কবর।
শেষপর্যন্ত যদি নিজেদের দেশেই টুর্নামেন্ট খেলতে অস্বীকার করে সেলেকাও ব্রিগেড, তাহলে আর এই টুর্নামেন্টের জৌলুস হারাবে।
এমনিতেই আর্জেন্টিনার তারকা স্ট্রাইকার সার্জিও আগুয়েরো কয়েকদিন আগে স্পষ্ট জানিয়েছিলেন ব্রাজিলে খেলতে তিনি যাবেন না। তাতে শাস্তি পেতে হলেও তিনি রাজি। ব্রাজিল সরকার শুধু নাম কেনার জন্য এরকম হঠকারী সিদ্ধান্ত কেন গ্রহণ করেছে জানতে চাইছে দেশের সাধারণ মানুষ।