প্রায় পাঁচশো সমর্থক উপস্থিত ছিলেন দমদম বিমানবন্দরে। সঙ্গে ছিল বাজি, লাল হলুদ উত্তরীয়, স্মোক বোম্ব, তিফো এবং অনেক কিছু। কার্লোস বিমানবন্দরের বাইরে বেরোতেই হারিয়ে গেলেন সমর্থকদের সুনামিতে। সবাই একবার স্পর্শ করে দেখতে চান নতুন ম্যানেজারকে। উপস্থিত কর্মকর্তারা তাকে ভালোবাসার অত্যাচার থেকে সরিয়ে নিয়ে গাড়িতে ঢুকিয়ে দিলেন।
গাড়ি রওনা দিল হোটেলে। আসলে কলকাতার ফুটবল এবং তার আবেগ কতটা হতে পারে এই ধারণা বিমানবন্দরে পা দিয়েই বুঝে গেলেন লাল হলুদের নতুন হেড স্যার। সমর্থকরা আদর করে নাম দিয়েছেন প্রফেসর। কার্লোস নিজে বার্সেলোনার মানুষ। যে একাডেমি থেকে বড় হয়েছেন লিওনেল মেসি, ইনিয়েস্তা, জাভির মতো ফুটবলার সেই লা মাসিয়া থেকে তার ফুটবল পাঠ। তাই তার ফুটবল দর্শন যে শুধু জয় নয়, সুন্দর ফুটবল উপহার দেওয়া সেটা বলা নিষ্প্রয়োজন।
advertisement
কার্লোস স্পেনে থাকার সময় জানতেন ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকরা গত চার বছর ধরে দুঃখ কষ্টে আছেন। ফুটবলে সাফল্য আসেনি। মোহনবাগানে একের পর এক সাফল্য, সেখানে ইস্টবেঙ্গল ট্রফিহীন। খুব কঠিন সময় কাটিয়েছেন লাখ লাখ লাল হলুদ সমর্থক। এবার চাকা ঘোরানোর পালা। জবাব দেওয়ার সময়। ইস্টবেঙ্গলের মতো ক্লাবের ১০০ বছর মোটেও ভাল কাটেনি।
অতীতে সুনীল ছেত্রীর বেঙ্গালুরুতে কার্লোস কাজ করে গিয়েছেন। চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। তাই ভারতীয় ফুটবল তার অজানা নয়। তবে বেঙ্গালুরুতে কাজ করা আর ইস্টবেঙ্গলের কোচ হওয়া এক জিনিস নয়। এখানে প্রতিমুহূর্তে চাপ অনেক বেশি, প্রত্যাশা বেশি, সমালোচনাও বেশি। কার্লোস অবশ্য আশাবাদী সব কিছুর সঙ্গে তিনি মানিয়ে নিতে পারবেন। শুধু একটু সময় চেয়েছেন স্প্যানিশ ম্যানেজার।
কথা দিয়েছেন বদলে দেবেন ইস্টবেঙ্গলকে। হাতে অবশ্য বেশি সময় নেই। তাড়াতাড়ি অনুশীলন শুরু করবেন কারণ ফুটবলারদের মধ্যে বোঝাপড়া তৈরি করা সবচেয়ে বড় কাজ। ফুটবলে নাম নয়, শেষ কথা বোঝাপড়া এবং কম্বিনেশন। সেটা বিলক্ষণ জানেন স্প্যানিশ ম্যানেজার। এবার ইস্টবেঙ্গলের দল গত তিন বছরের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী অন্তত কাগজে-কলমে। মাঠের লড়াইতেও যাতে সেটা প্রমাণিত হয় সেই চেষ্টা করবেন কার্লোস। তার সামনে অনেক দায়িত্ব, অনেক প্রত্যাশা।