মাত্র এক বছর আগেও তাঁর পথ এমন মসৃণ ছিল না। তাঁর বাবাকে ঘিরে ধর্মীয় বিতর্ক সৃষ্টি হয়। তিনিও তাতে জড়িয়ে পড়েছিলেন। এর পর খার জিমখানা ক্লাবের সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছিল তাঁর বাবার।
বিতর্কটি শুরু হয়েছিল গত বছরের অক্টোবর মাসে। খার জিমখানার বার্ষিক সাধারণ সভা চলাকালীন। জানা যায়, জেমাইমার বাবা ইভান রদ্রিগেস প্রায় ১৮ মাসের মধ্যে ব্রাদার ম্যানুয়েল মিনিস্ট্রিজ-এর সঙ্গে যুক্ত প্রায় ৩৫টি সভার আয়োজন করেছিলেন। অভিযোগ ওঠে, ওই সভাগুলিতে ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হত, তা ক্লাবের নিয়মবিধি অনুযায়ী নিষিদ্ধ, কারণ সেখানে কোনো রাজনৈতিক বা ধর্মীয় অনুষ্ঠান আয়োজন করা যায় না।
advertisement
ক্লাবের কমিটি সদস্য শিব মালহোত্রা বলেন, “এখানে এমন অনুষ্ঠান হচ্ছিল যা সত্যিই অবাক করার মতো। দেশের অন্য জায়গায় এমন ঘটনার খবর শোনা যায়, কিন্তু আমাদের ক্লাবের ভেতরে এমন কিছু ঘটছে দেখে উদ্বেগজনক মনে হয়েছে।”
ঘটনাটি আরও তীব্র হয় যখন এক কর্মচারী প্রাক্তন সভাপতি নিতিন গাদেকরকে এই সমাবেশগুলির বিষয়ে অবহিত করেন। এরপর জিমখানা ক্লাব বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং সদস্যদের ভোটাভুটির মাধ্যমে রডরিগেজ পরিবারের সদস্যপদ বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করে।
এক বছর পর জেমিমা এক অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের গল্প রচনা করেন। উদ্বেগ ও মানসিক চাপের সঙ্গে লড়াই করে তিনি ক্রিকেটের অন্যতম শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে অপরাজিত ১২৭ রান করেন।
আরও পড়ুন- অ্যাংজাইটির সঙ্গে টানা লড়াই, কান্নায় ভেজা গাল, কণ্ঠে কৃতজ্ঞতা! জেমাইমা মনে করালেন…
তাঁর অনবদ্য এই ইনিংসে ছিল ১৪টি বাউন্ডারি, যা ভারতের মহিলা ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ সফল রান তাড়ার রেকর্ড গড়ে দিয়েছিল। ম্যাচসেরা পুরস্কার পাওয়ার পর জেমাইমা নিজের মানসিক লড়াই ও অভ্যন্তরীণ সংগ্রামের কথা শেয়ার করেন। তিনি বলেন, “এই সফরে আমি প্রায় প্রতিদিন কেঁদেছি। মানসিকভাবে ভাল অবস্থায় ছিলাম না, উদ্বেগে ভুগছিলাম। কিন্তু জানতাম, মাঠে আমাকে নিজের সেরাটা দিতে হবে। বাকিটা ঈশ্বর নিজেই সামলে নিয়েছেন।”
এটি ছিল তাঁর ওয়ানডে কেরিয়ারের তৃতীয় শতরান, এবং সম্ভবত সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ইনিংস। এটি শুধু ম্যাচ নয়, তাঁর ব্যক্তিগত যাত্রাকেও নতুন মাত্রা দিয়েছে যেন!
