ভবানীপুর বনাম ইস্টবেঙ্গল ম্যাচে আম্পায়ারের একটি হিউম্যান এররকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া বেয়াদবি স্পোর্টসম্যানশিপের সীমা ছাড়াল ম্যাচের শেষ দিনে! মাঠ ছেড়ে চলে গেলেন ক্রিকেটররা, ম্যাচ বন্ধ রইল পাঁচ ঘন্টা। সিএবি সভাপতি, ফিক্সচার কমিটির চেয়ারম্যানের ব্যর্থতা ঢাকতে ইডেনে ছুটে আসতে হলো সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে! অথচ সৌরভ এখন সিএবির কোন পদে রয়েছেন, তা বটতলারও অজানা!
advertisement
সৌরভের হস্তক্ষেপে ম্যাচ যাওবা শুরু হল, সঙ্গী হল অপেশাদারিত্ব ও সময় নষ্টের নোংরা খেলা। এক ঘন্টায় তিন ওভার ম্যাচ গড়াল! আর শেষ দিন সব সীমা ছাড়িয়ে গেল ইডেনের ড্রেসিংরুমের সামনে ক্রিকেটারদের বেলাগাম ভাষা আর দুই দলের কর্তাদের হাতাহাতিতে অথচ জল এত দূর গড়ানোরই কথা নয়।
সিএবির রুল বুকে উল্লেখ রয়েছে, রিফিউজাল টু প্লে অ্যাক্টের! অতীতের তার প্রয়োগও হয়েছে! কিন্তু এবার আর সাহস দেখাতে পারলেন না স্নেহাশীষ গঙ্গোপাধ্যায়, সঞ্জয় দাস, নরেশ ওঝারা! বছর দুই আগে সিএবি লিগে কুমারটুলি বনাম জর্জ ম্যাচে একই রকম পরিস্থিতিতে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল জর্জ টেলিগ্রাফকে। তখন অবশ্য সিএবির সামনে ভোট ছিল না! এখনকার মতো গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া ছিল না! তাই সেদিন স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়রা হাত খুলে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন! খেলেও ছিলেন! কিন্তু এবার যে সেপ্টেম্বরে সিএবির নির্বাচন! বড় ক্লাবকে চটানোর সাহস দেখাতে পারলেন না স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়, সঞ্জয় দাসরা।
ইডেন সাক্ষী থাকলো এক বেশরম অধ্যায়ের। মুখে অশ্রাব্য গালিগালাজ। কর্তারা তেড়ে যাচ্ছেন
সিএবির বড় বাবুদের ভোট জুজুতেই হাতের বাইরে বেরিয়ে গেল পরিস্থিতি। ইডেন সাক্ষী থাকলো এক বেশরম অধ্যায়ের। মুখে অশ্রাব্য গালিগালাজ। কর্তারা তেড়ে যাচ্ছেন, হাত চালাচ্ছেন প্রতিপক্ষের উদ্দেশ্যে। সৌজন্য বোধের তোয়াক্কা না করে ক্রিকেটাররা জড়িয়ে পড়ছেন অখেলোয়ারাচিত নোংরামিতে। দেখার আর বাকি কি রইল! জগমোহন ডালমিয়া, বিশ্বনাথ দত্ত, চন্ডী গঙ্গোপাধ্যায়রা বেঁচে থাকলে মুখ লুকোতেন বর্তমান কর্তাদের অপদার্থতা আর অযোগ্যতার নিদর্শনে!
কলঙ্কের ম্যাচ শেষে ভবানীপুর ক্লাবের শীর্ষ কর্তা সৃঞ্জয় বোস দায়ী করছিলেন সিএবি কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা আর অপদার্থতাকে। ভাবুন তো, ইডেন থেকে আইপিএল ফাইনাল চলে গেল! বঞ্চনার জিগির তুলে ইডেনের সামনে ধরনায় বসলেন শহরের ক্রিকেট অনুরাগীরা। আর সিএবির সভাপতি, সচিব কোষাধক্ষরা ফ্যালফ্যাল করে আমেদাবাদ উড়ে গেলেন কেড়ে নেওয়া আইপিএল ফাইনালের মজা নিতে! এই তো অবস্থা!
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিএবির এক প্রাক্তন কর্তা তো বলেই বসলেন, আত্মসম্মান, বোধ সব গিয়েছে এদের! না হলে কেড়ে নেওয়া আইপিএল ফাইনাল দেখতে দল বেঁধে আমেদাবাদ ছুটে যায়! ভোট বড় বালাই! না হলে পাঁচ দিন ধরে স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়, সঞ্জয় দাসদের চোখের সামনে বেলাগাম বেয়াদবি চলল! আর জেগে ঘুমোলেন সিএবি কর্তারা। শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে এখন ইস্টবেঙ্গলের ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায়, আকাশ ঘটক, সুরাজ জয়সওয়াল ও ভবানীপুরের শাকির হাবিব গান্ধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার তোড়জোড়। কিন্তু পাঁচ দিন ধরে ইডেনকে সার্কাস তাঁবু বানিয়ে যা চলল, তার কী হবে!
Paradip Ghosh