বিপুল সরকার ও সঙ্গীতা সরকার। তাঁদের ন'মাসের পুত্র সন্তানকে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য কলহ চলছে বেশকিছু দিন ধরে। সঙ্গীতার দাবি, সাংসারিক কলহ থেকে বাঁচাতে ৯ মাসের সন্তানকে সোমবার এক আত্মীয়র বাড়িতে রেখে এসেছিলেন তিনি। এরপরই শ্বশুরবাড়ি থেকে চাপ দেওয়া হয় সন্তানকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য। শ্বশুরবাড়ি থেকে গ্রামের অন্যান্য মহিলাদের বিষয়টি জানানো হয়। শ্বশুরবাড়ি ও গ্রামের মহিলাদের চাপে আত্মীয় বাড়ি থেকে সন্তানকে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন ওই গৃহবধূ। এরই মধ্যে গ্রামের মহিলা ও মাতব্বর রা জানতে পারেন এই কাজে ওই গৃহবধূকে সাহায্য করেছে গ্রামের আর এক গৃহবধূ প্রতীমা বিশ্বাস। এরপর প্রতীমা ও শিশুটির মাকে প্রতীমার বাড়িতে আটকে রাখে গ্রামের মহিলা ও মাতব্বররা। তাঁদের অভিযোগ, দাম্পত্য কলহের নামে প্রতীমা ও সঙ্গীতা শিশুটিকে বিক্রি করতে চাইছিল।
advertisement
এই অভিযোগে শুরু হয় তাদের সবক শেখানো। সঙ্গীতার অভিযোগ, বুধবার গ্রামের মহিলারা তাঁদের ব্যাপক মারধোর করেন। বাঁশ ও লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়। একই ভাবে মারা হয় প্রতীমা বিশ্বাসকেও। তাঁর অভিযোগ, মিথ্যা একটা ঘটনাকে সাজিয়ে তাঁদের মারধর করা হয়। এমনকি তাঁর শ্বশুর ও শ্বাশুরিকেও ছাড়েনি উন্মত্ত মহিলা ও মাতব্বররা। প্রতিমার অভিযোগ, তাঁর বাড়িও ভাঙচুর করা হয়। দুই মহিলার কাছে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় বলে অভিযোগ।
এদিকে, গ্রামের যখন আটক করে দুই গৃহবধূ কে মারধর করা হচ্ছে সেই খবর যায় গোপালনগর থানার পুলিশের কাছে। গ্রামে পুলিশ এসে আক্রান্ত দুই গৃহবধুকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশের উপর চড়াও হয় মহিলারা। লাঠি ও বাঁশের আঘাত সহ্য করে পুলিশ ওই দুই মহিলাকে গাড়িতে তোলে। অভিযোগ, সেই সময় উন্মত্ত জনতা কেরোসিনের জার নিয়ে এসে গাড়ির বনেটে ঢেলে দেয়। পুলিশের গাড়ি ঘিরে রেখে বিক্ষোভ দেখায়। কেরোসিন তেল ঢেলে দেওয়ার পরই গ্রামে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঢোকে ওসি গোপালনগরের নেতৃত্বে। কোন রকমে দুই আক্রান্ত গৃহবধূকে নিয়ে গ্রাম ছাড়ে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে থানায় ফিরে পুলিশের পক্ষ থেকে গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধাদান ও এসআই সুবর্ণ বিশ্বাসকে হেনস্তার অভিযোগ দায়ের করা হয়। বুধবার গোপালনগর থানার পুলিশ সঙ্গীতা ও প্রতিমাকে গোপন জবানবন্দির জন্য বনগাঁ মহকুমা আদালতে পাঠায়।