পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরার তাজপুর ছোটনলগেড়্যা বিদ্যাসাগর স্মৃতি সংঘ তাদের ৪৬তম বর্ষে এক অসাধারণ উদ্যোগ নিয়েছে, যা এই বছরের দুর্গাপুজোকে এক ভিন্ন মাত্রা দেবে। শহরের কোলাহল থেকে দূরে, এই গ্রামের পুজো এখন দর্শনার্থীদের কাছে এক বিশেষ আকর্ষণ। তাদের এই বছরের থিম হল তিরুপতি বালাজি মন্দির, যার আদলে তৈরি হচ্ছে তাদের সুবিশাল মণ্ডপ। এই মণ্ডপটি ইতিমধ্যেই পুজোর প্রস্তুতিতে থাকা কারিগরদের দক্ষ হাতের ছোঁয়ায় রূপ পেতে শুরু করেছে। মন্দিরের স্থাপত্যশৈলী এবং কারুকার্যকে নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে, যা দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করবে।
advertisement
তবে এ বছরের পুজোর প্রধান আকর্ষণ হল দেবী কালীর ৩১টি রূপের প্রদর্শন। শিল্পী বেণীমাধব জানা তাঁর অসাধারণ শিল্প নৈপুণ্য দিয়ে এই রূপগুলি তৈরি করছেন। মা কালীর এই বিভিন্ন রূপগুলি সাধারণত একসঙ্গে দেখা যায় না, যা এই প্রদর্শনকে আরও বিরল এবং গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। এই ৩১টি রূপের মধ্যে যেমন দক্ষিণাকালী, শ্মশানকালী, রক্ষাকালী রয়েছে, তেমনই থাকছে অন্যান্য অপ্রচলিত রূপগুলিও। এই রূপগুলির মাধ্যমে মা কালীর বিভিন্ন শক্তি ও মহিমা তুলে ধরা হবে, যা শুধু সাধারণ দর্শনার্থীদের নয়, ধর্মপ্রাণ মানুষের কাছেও এক গভীর আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা নিয়ে আসবে।
পুজোর প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে। মণ্ডপ ও প্রতিমা তৈরির কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। শিল্পী ও কারিগররা দিনরাত এক করে কাজ করছেন, যাতে চতুর্থীর দিন থেকে দর্শনার্থীদের জন্য মণ্ডপের দরজা খুলে দেওয়া যায়। চতুর্থী থেকে শুরু করে দশমী পর্যন্ত এই বিশেষ প্রদর্শন সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। গ্রামের এই পুজোতে শহরের পূজার মতো জাঁকজমক না থাকলেও, এর মৌলিকতা এবং থিমের গভীরতা প্রতি বছরই হাজার হাজার মানুষকে আকর্ষণ করে। গত বছরগুলোর মতো এবারও দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা ছুটে আসবেন এই অসাধারণ শৈল্পিক ও আধ্যাত্মিক সমন্বয় দেখতে।
আরও পড়ুন : মোহর-সহ দেড় কেজি সোনায় তৈরি কনকদুর্গার চালচিত্রে দেড় মণ রুপো! জঙ্গলমহলের এই পুজো ঘিরে থাকে কড়া নিরাপত্তা
এই পুজোর আয়োজন শুধু স্থানীয়দের মধ্যেই নয়, পার্শ্ববর্তী এলাকাতেও ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সব মিলিয়ে, বলা যায়, এই বছর দুর্গাপুজোয় পূর্ব মেদিনীপুরের এই ছোট গ্রামটি হয়ে উঠতে চলেছে এক তীর্থক্ষেত্র, যেখানে শিল্প, ধর্ম এবং সংস্কৃতির এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটবে।