গঙ্গাকে মা গঙ্গা বলে ডাকা হয়। কারণ প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, মা গঙ্গা একেবারে মায়ের মতো করে দেশের মানুষকে আগলে রাখেন। অন্যদিকে আবার দেশের মানুষের তৃষ্ণাও নিবারণ করেন মা গঙ্গা। আবার গঙ্গার জল চাষবাসের কাজেও লাগে। এখানেই শেষ নয়, গঙ্গা স্নানের আলাদা এক তাৎপর্য রয়েছে। ফলে এহেন পরিস্থিতিতে নিজেদের বিশ্বাস অনুযায়ী মা গঙ্গার জলে ভক্তরা নানা কিছু উৎসর্গ করে থাকেন। এর মধ্যে অন্যতম হল কয়েন বা মুদ্রা। অনেক ভক্ত আবার নিজেদের জীবনের মূল্যবান জিনিসও মা গঙ্গার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন।
advertisement
প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, কারও মনে কোনও ইচ্ছা থাকলে তিনি যদি নদীতে টাকা অথবা মূল্যবান কোনও জিনিস ছুড়ে দেন, তাহলে তাঁর মনোবাসনা পূর্ণ হবে। ফলে মানুষও নিজেদের বিশ্বাস মেনে গঙ্গা নদীতে জিনিসপত্র উৎসর্গ করেন। আর ভক্তদের উৎসর্গ করা সেইসব মুদ্রা এবং মূল্যবান দ্রব্য গঙ্গা থেকে তুলে নিতে দেখা যায় একদল মানুষকে। এর জন্য তাঁরা মূলত চুম্বক ব্যবহার করে থাকেন। এভাবেই নিজেদের সংসার চালান তাঁরা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনই একটি ভিডিও হু-হু করে ভাইরাল হচ্ছে। বলা হচ্ছে যে, এই ভিডিওটি বারাণসীর। সেই ভাইরাল ভিডিও-য় দেখা যাচ্ছে যে, নৌকায় চেপে একেবারে মাঝনদীতে চলে গিয়েছে এক কিশোর। এরপর তাকে চুম্বকে দড়ি বেঁধে তা ছুড়ে দিতে দেখা যায় নদীর জলে। চুম্বকটি যাতে নদীর গভীরে যায়, তার জন্য বেশ খানিকক্ষণ অপেক্ষা করতে দেখা যায় তাকে। কিন্তু যখন সে চুম্বকটি নদীর জল থেকে বার করে আনে, তখন তার মুখের হাসি যেন এক লহমায় চওড়া হয়ে যায়। আসলে গঙ্গায় উৎসর্গ করা মুদ্রাই ওই কিশোরের ছোড়া চুম্বকে আটকে গিয়েছিল। এরপর সে তা সংগ্রহ করে নেয়।
যিনি ভিডিও করছিলেন, তিনি আবার ওই কয়েন সংগ্রহকারী কিশোরের সঙ্গে কথা বলেন। সে জানায় যে, “চুম্বকে আটকে থাকা ওই টাকাতেই আমাদের সংসার চলে। আসলে মানুষ ওই টাকা নদীকে দান করেন, আর আমরা সেটা চুম্বকের সাহায্যে বার করে আনি। শুধু তা-ই নয়, মাঝেমধ্যে তো সোনা অথবা রুপোও পাওয়া যায়।”
@social_sandesh1 নামে একটি অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে ইনস্টাগ্রামে। ইতিমধ্যেই ভিউ ৬২ লক্ষ অতিক্রম করেছে। এমনকী মন্তব্যের বাক্সও ভরে উঠেছে। এক্ষেত্রে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে নেটিজেনদের। অনেকের বক্তব্য, “আগে থেকেই চুম্বকে আটকানো ছিল ওই মুদ্রাগুলি।” কিন্তু কেউ কেউ আবার ইতিবাচক মন্তব্যও করেছেন। একজন লিখেছেন, “এটাই আমাদের সনাতনী ধর্ম। যেখানে প্রত্যেকে বাঁচতে পারেন।” একজন আবার অবাক হয়ে লিখেছেন যে, “সোনাও কি ওই চুম্বকে আটকে যেতে পারে?”