ঝাড়খন্ডে উৎপত্তি, পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে সুবর্ণরেখা নদী। নদী কেন্দ্রিক এলাকায় নদীর উপর ভরসা তীরবর্তী মানুষজনের। তবে জানেন, এই নদীতেই নাকি পাওয়া যেত সোনা? এখনও অল্প বিস্তর পাওয়া যায় কোথাও কোথাও! তবে আপনিও যাবেন নাকি সোনার খোঁজ করতে? সুবর্ণরেখা নদীর সঙ্গে সোনার সম্পর্ক বহুদিনের। ঝাড়খন্ড হোক কিংবা পশ্চিমবঙ্গ বিভিন্ন জায়গায় বহু মানুষ এই নদীর বালি থেকে সোনা আহরণ করে বিক্রি করে নিজেদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করতেন। শুনতে যতটা সহজ মনে হলেও আদতে সেই প্রক্রিয়া এতটা সহজ নয়। তবে আদৌ কি সোনা পাওয়া যায়?
advertisement
পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা কিংবা প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের অন্যতম এক নদী সুবর্ণরেখা। নদীটির নামের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সোনা কথাটি। মনে করা হয় নদীর বালিতেই পাওয়া যেত সোনা যা এখনও পাওয়া যায়। নদীর বালি থেকে সোনা বের করে তা বিক্রি করে সংসার চালান বহু মানুষ। তবে কোথা থেকে আসছে সোনা? আদৌ কি সোনা পাওয়া যায়? সেই প্রশ্ন এখন প্রত্যেকের। তবে ভূবিজ্ঞানীদের কাছে এখনও প্রতিষ্ঠিত কোনও তথ্য নেই। মনে করা হয়, নদীর জলে দ্রবীভূত হয় সোনা। যা মিশে যায় বালির সঙ্গে। বহু প্রক্রিয়ার পর সেই সোনা উদ্ধার করেন গ্রামের মানুষ, যা একটা চাল দানার থেকেও ছোট।
আরও পড়ুন: মাত্র ২৫,০০০ টাকা দিয়ে শুরু করুন এই ব্যবসা, বাড়িতে বসেই প্রতি মাসে আয় হবে লক্ষ লক্ষ টাকা
ঝাড়খণ্ডে এমন কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে স্থানীয় আদিবাসীরা সকালে এই নদীতে যান এবং সোনার কণা সংগ্রহ করতে নদীর বালিতেই সারাটা দিন কাটিয়ে দেন। যুগ যুগ ধরে তাঁরা এই কাজ করে চলেছেন। তমাড় ও সারান্ডা এলাকার নারী-পুরুষ ও শিশুরা ভোরে উঠে নদী থেকে সোনা আহরণ করেন। শুধু তাই নয় পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রাম সহ একাধিক জায়গায় দেখা যায় সোনা আহরণ করতে। তবে বিষয়টা ঠিক কী? গবেষকেরা মনে করছেন, সোনার আকরিক পাওয়া যেতে পারে নদীর বালিতে। যা বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সামান্য খুব ছোট একটা দানা হয়তো পাওয়া যেতে পারে। তবে অত্যন্ত চকচকে সোনা নয়, খনিজ সোনা হতে পারে। যদিও এখনও তা সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি।
গবেষকদের অনুমান, এই নদীটি বহু পাথরের খণ্ডের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত যায়, সেই সময়ে ঘর্ষণের ফলেই নাকি সোনার কণা জলে দ্রবীভূত হয়ে যায়। শুনতে যতটা সহজ বলে মনে হয়, সুবর্ণরেখা নদী থেকে সোনা তোলা কিন্তু ততটাই কঠিন। নদীর বালি থেকে সোনা তুলতে হয় অনেক কষ্ট করে। এই কণাগুলি এক একটি চালের দানার সমান বা তার চেয়েও ছোটো। স্বাভাবিকভাবে কয়েক হাজার বছর ধরে এই সোনা রহস্যর কোনও সমাধান হয়নি, তবুও ভাষা সংস্কৃতি যেমন এক সোনালী ইতিহাস সৃষ্টি করেছে তেমনি সুবর্ণরেখাও বয়ে চলেছে সোনার গল্প।