সাহসী এই ব্যক্তির নাম প্রেম গুপ্তা। তিনি ঝাড়খণ্ডের রাঁচির কৈলাসনগর কুমহারতলির বাসিন্দা। সূত্রের খবর, গত বছরের ২৮ এপ্রিল খুবই জাঁকজমক করে কন্যা সাক্ষীর বিয়ে দিয়েছিলেন। রাঁচির সর্বেশ্বরী নগরের বাসিন্দা পাত্র সচিন কুমার আবার ইলেকট্রিসিটি ডিস্ট্রিবিউশন কর্পোরেশনে সহকারী ইঞ্জিনিয়ার।
আরও পড়ুন– রূপকথা নয়; চিনে নিন পৃথিবীর সব থেকে ছোট দেশ আর তার রাজকুমারীকে
advertisement
প্রেম গুপ্তার অভিযোগ, বিয়ের কয়েক দিন পর থেকেই শুরু হয় তাঁর মেয়ের উপর অত্যাচার। স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির হাতে হামেশাই লাঞ্ছিত হতেন সাক্ষী। এমনকী, বেশ কয়েক বার সাক্ষীকে বাড়ি থেকে বার করে দিয়েছেন তাঁর স্বামী। তবে বিয়ের বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সাক্ষীর সামনে আসে এক কঠোর সত্য! তিনি জানতে পারেন যে, সচিন ইতিমধ্যেই দু’বার বিয়ে করেছেন। এটা শোনার পর থেকেই পায়ের তলার জমি সরে যায় তাঁর।
সাক্ষী বলেন, “সব কিছু জেনে আমি সাহস হারাইনি। বরং কোনওক্রমে সম্পর্কটাকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম। কিন্তু একটা সময় অনুভব করি যে, এভাবে অত্যাচার, লাঞ্ছনা-গঞ্জনায় বেঁচে থাকা মুশকিল! তাই সম্পর্কের বাঁধনটুকু ছিঁড়ে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিই।”
সাক্ষী যখন বিয়ে ভেঙে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন, সেই সিদ্ধান্তে মেয়ের পাশেই ছিলেন মা-বাবা। আদরের কন্যাকে যেভাবে জাঁকজমক করে শ্বশুরঘর করতে পাঠিয়েছিলেন, ঠিক সেভাবেই ধুমধাম করে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিজেদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন। মেয়েকে ফেরানোর সেই শোভাযাত্রা ছিল দেখার মতো। ডাকা হয়েছিল ব্যান্ড পার্টি। আর ছিল আতসবাজির রোশনাই। প্রেম গুপ্তার বক্তব্য, মেয়ে অত্যাচারমুক্ত হওয়ায় এহেন পদক্ষেপ করেছেন।
সেই শোভাযাত্রার ভিডিও নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টেও পোস্ট করেছেন তিনি। পোস্টে প্রেম গুপ্তা লিখেছেন যে, “ধুমধাম করে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু যদি জীবনসঙ্গী এবং তাঁর পরিবার খারাপ হয় কিংবা খারাপ কাজ করে, তাহলে মেয়েকে আদর এবং সম্মান দিয়ে নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে আনা উচিত। কারণ কন্যা সন্তান মূল্যবান সম্পদ!”
প্রসঙ্গত আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য মামলা করেছেন সাক্ষী। এমনকী খোরপোষ দেওয়ার কথা বলেছে সাক্ষীর স্বামী। খুব শীঘ্রই তাঁদের আইনি বিবাহবিচ্ছেদ হবে বলে আশা।