সুইডেনে ইতিমধ্যেই জারি রয়েছে ভলান্টারি ইমিগ্রেশন স্কিম। এর আওতায় শরণার্থী এবং অভিবাসীদের ১০০০০ স্যুইডিশ ক্রোনা দিয়ে থাকে। ভারতীয় মুদ্রায় যার মূল্য ৮০ হাজার টাকা। শুধু প্রাপ্তবয়স্কদের জন্যই নয়, শিশুদের জন্যও রয়েছে এই সুবিধা। দেশ ছাড়লে তাদেরকেও দেওয়া হয় ৫০০০ স্যুইডিশ ক্রোনা। ভারতীয় মুদ্রায় যার মূল্য ৪০ হাজার টাকা। তবে একবারই তাঁদের দেওয়া হয় এই অর্থ। শুধু তা-ই নয়, দেশ ছেড়ে যাওয়ার জন্য সরকারের তরফে তাঁদের বিমান ভাড়াও দেওয়া হয়ে থাকে। তবে এবার এই স্কিমের আওতায় আনা হচ্ছে সে দেশের নাগরিকদেরও। এমনকী সেই প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন: এসির জল ফেলে দিচ্ছেন? অনেক কাজে লাগাতে পারবেন এই জল, জানলে চমকে উঠবেন
যদিও শুধুমাত্র অস্থায়ী বা স্থায়ী বসবাসের পারমিটের হোল্ডারদেরই নয় – বরং সুইডিশ নাগরিক এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এই প্রোগ্রামটি সম্প্রসারণের সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিশন। চলতি সপ্তাহে রিপোর্ট জমা করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে যে, যাঁরা টাকা নিয়েও দেশ ছেড়ে যাননি, তাঁদের ঋণ পরিশোধ করতে হবে। একই সময়ে আবার এটি পরিমাণ বাড়ানোর একটি প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেছে। কারণ তাদের উদ্বেগ হল, এতে অভিবাসীরা একটি ‘ভুল ইঙ্গিত’ পাবেন যে, তাঁরা সুইডেনে ‘স্বাগত নন’।
অভিবাসন মন্ত্রী মারিয়া মালমার স্টেনগার্ড এক্স সোশ্যাল মিডিয়া (পূর্বে ট্যুইটার) প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন যে, মিনিস্ট্রি অফ জাস্টিসে এই তদন্তের প্রস্তাব বিশ্লেষণ করে দেখা হবে। সেই সঙ্গে তিনি এ-ও মেনে নিয়েছেন যে, বর্তমান প্রোগ্রাম তেমন কার্যকর নয়। কারণ খুব কম সংখ্যক মানুষই দেশের এই সহায়তার কথা জানেন।
নয়া প্রস্তাবে বলা হচ্ছে যে, এখন সমস্ত নাগরিককে এই স্কিমের আওতায় আনা হবে। দেশ ছাড়ার জন্য ১০ হাজার সুইডিশ ক্রোনা গ্র্যান্ট বাড়ানোর আলাপ-আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু সরকার তা নাকচ করে দিয়েছে। সরকারের বক্তব্য, এর মাধ্যমে একটা বার্তা দেওয়া হবে যে, দেশ তাঁদের পছন্দ করে না। বিভিন্ন দেশ থেকে আগত মানুষ সুইডেনে বসতি স্থাপন করেন। যার জেরে বিগত ২০ বছরে সে দেশের জনসংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে যে, শরণার্থীদের সংখ্যা ২০ লক্ষেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। যা সুইডেনের মোট জনসংখ্যার পাঁচ ভাগের এক ভাগ। এমন পরিস্থিতি দেখে ২০১৫ সালে সরকার একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। কিন্তু তাতেও কোনওরকম লাভ হয়নি। আসলে ওই বছর রেকর্ড সংখ্যক অভিবাসীর আগমন ঘটেছিল সেখানে। যার জেরে স্টকহোম ওই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। আর সে দেশের অভিবাসন নীতিই ছিল ইউরোপের মধ্যে সবথেকে কড়া।
আরও পড়ুন: ভারতের ১ টাকা মানে এই দেশের ৫০০, ইতিহাস সমৃদ্ধ এই দেশে ঘুরতে গেলে বিপুল লাভ
যদিও গত বছর দেখা যায় যে, সুইডেনে আগত মানুষের সংখ্যার তুলনায় দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া মানুষের সংখ্যা বেশি। যা বিগত ৫০ বছরে প্রথমবার দেখা গিয়েছে। অভিবাসন মন্ত্রী বলছেন যে, মানুষ আসছেন ঠিকই। কিন্তু তাঁরা সুইডিশ সমাজকে মেনে নিতে পারছেন না। এই ধরনের মানুষদের সামনে দেশ ছেড়ে যাওয়ার পথ খোলা রয়েছে। আর সরকারও আর্থিক সাহায্য করবে। আবার সুইডেনে এমন অনেক মানুষ রয়েছেন, যাঁদের সন্তানদের জন্ম হয়েছে ইরাক, সিরিয়া এবং সোমালিয়ার মতো দেশে। কিন্তু এখন তাঁরা সইডেনে এসে এখানেই থিতু হতে চাইছেন। এই ধরনের মানুষদের জন্যও রয়েছে সরকারের এই সুযোগ।