গত তিন বছর ধরে সংসার চালাতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠছে রিজওয়ানার। ২৩ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। স্বামী ছিলেন অটোচালক। কিন্তু একদিন অটো চুরি হয়ে যাওয়ার ফলে তিনি ভিক্ষা করতে বাধ্য হন। শারীরিক পরিশ্রম ও সংসারে অনটনের সঙ্গে যুঝতে গিয়ে বিরক্ত হয়ে একদিন তিনি বাড়ি ছেড়ে চলে যান। আর ফেরেননি।
তার পর থেকেই সংসারের হাল রিজওয়ানার কাঁধে। ভাইরাল হওয়া ছবিতে তাঁর কাঁধে সুইগি-র ব্যাগ থাকলেও তিনি কিন্তু সংস্থার কর্মী নন। বরং একাধিক কাজ করতে হয় তাঁকে। লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ, রাস্তার ধারে খাবার ও চা-কফির দোকানে ডিজপোজেবল কাপ ও গ্লাস যোগান দেওয়ার মতো কাজ করেন তিনি। তার পরও সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে যান। জানিয়েছেন সংস্থা হিসেবে সুইগির সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। নিজের জিনিসপত্র রাখার জন্য তাঁর একটি টেকসই ব্যাগ দরকার ছিল। তাই দোকানির কাছ থেকে ৫০ টাকা দিয়ে সুইগি লেখা ব্যাগটি কিনেছেন।
advertisement
রিজওয়ানার লড়াইয়ে আর্দ্র নেটিজেনদের মন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁরা আবেদন করেছেন সুইগি-র কাছে। যাতে তারা রিজওয়ানাকে চাকরির বন্দোবস্ত করে দেন। তাঁরা লিখেছেন, "প্রিয় সুইগি, আপনাদের সংস্থায় প্লিজ এই মহিলার জন্য একটা জায়গা দাও। তিনি যথেষ্ট লেখাপড়া জানেন না বলে আপনাদের সংস্থায় নাম নথিভুক্ত করতে পারছেন না। কিন্তু সংস্থা যদি চায় তাহলে ওঁর নাম নথিভুক্ত করতে পারে।" অনেকে আবার তাঁকে অর্থসাহায্যও করতে চেয়েছেন।
দু’ বছর আগে বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন রিজওয়ানা। মাথা গোঁজার একটিমাত্র কামরায় তাঁর অপেক্ষায় দিনের শেষে বসে থাকে তিনটি মুখ-১৯ বছরের বুশরা, ৭ বছর বয়সি নশরা এবং ছেলে মহম্মদ ইয়াসিন। এদের লেখাপড়া বন্ধ করতে চান না। জানিয়েছেন রিজওয়ানা। তাই যত দিন যায়, তাঁর চোয়াল শক্ত হয়ে ওঠে আরও। লৌহমানবীর লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছেন নেটিজেনরা।