শনিবার গভীর রাত থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত চলে অস্ত্রোপচার।কিশোরের আত্মীয়রা বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে, বাড়িতে আগাছা মারার জন্য প্যারাকোয়াট ডাইক্লোরাইড নামে এক ধরনের কীটনাশক রাখা ছিল। ভুলক্রমে তা রাখা হয়েছিল একটি ঠান্ডা পানীয়র বোতলে। ১৬ বছরের ওই কিশোর তা বুঝতে না পেরে, কোল্ড ড্রিংকস ভেবেই বোতলের কীটনাশক খেয়ে ফেলে।
চিকিৎসকরা জানান, এতটাই মারাত্মক এই কীটনাশক যে সেটি শরীরে প্রবেশ করে বিভিন্ন অঙ্গ গলিয়ে দেয়। বহুক্ষেত্রেই দ্রুত শারীরিক অবস্থার অবনতি ও মৃত্যু ঘটে। জীবিত থাকলে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ধরা পড়ে দিন সাতেক পর থেকে। তখন কিডনি, লিভার ও ফুসফুস সম্পূর্ণ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই কিশোরের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছিল ফুসফুসে। এক চিকিৎসক বলেন, অভ্যন্তরীণ ছবি দেখলে মনে হবে, কেউ যেন তার ফুসফুসটা জ্বালিয়ে কালো করে দিয়েছে। এই ঘটনার সাতদিন পরে তাকে হাসপাতালে আনা হয়। অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক হওয়ায় টানা ৩৩ দিন কৃত্রিম ফুসফুস বা একমো সাপোর্টে ছিলেন। ফুসফুস দাতার অপেক্ষায় অধীর ছিলেন বাড়ির লোকজন।
advertisement
শনিবার ওড়িশার পথ দুর্ঘটনাগ্রস্ত এক ব্যক্তির ব্রেন ডেথ হয়। তাঁর ফুসফুস ম্যাচ করায় রোটো মারফৎ বার্তা পেয়ে চিকিৎসকদল ওড়িশা গিয়ে ফুসফুস সংগ্রহ করে আনেন। রাতেই শুরু হয় অস্ত্রোপচার। ভোরে তা শেষ হয়।
তবে এধরণের চিকিৎসা অত্যন্ত খরচসাপেক্ষ। ফলে বহু মানুষের ক্ষেত্রেই সম্ভব হয়ে ওঠে না। এই কিশোরের ক্ষেত্রে পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকার। বেসরকারি হাসপাতালের এক আধিকারিক জানান, “স্বাস্থ্যসাথী এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত সদর্থক পদক্ষেপ নিয়েছে। আমাদের বার্তা পেয়ে পুরো পাঁচ লক্ষ টাকার অর্থসাহায্য করছে। ওই যুবকের বাড়ির লোকজন কিছু পরিমাণ অর্থ দিয়েছে। ক্রাউড ফান্ডিং ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে বাকি অর্থ জোগাড়ের চেষ্টা চলছে।”