নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্টের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়েছিল মধ্যপ্রদেশ সরকার এবং কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো বা CBI। পুলিশি হেফাজতে ২৫ বছর বয়সি দেবা পারধির মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। অবশেষে সেই নির্দেশের চাপে পড়ে দুই পুলিশ কর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
advertisement
গত ১৫ মে ওই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তার পরে দীর্ঘদিন কেটে গেলেও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হচ্ছিল না। সেই কারণেই রাজ্য সরকার ও CBI-কে তীব্র ভর্ৎসনা করেছিলেন বিচারপতি বিভি নাগরত্না এবং বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চ। অবশেষে গ্রেফতার হলেন ওই দুই পুলিশ কর্তা। তবে সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন তুলেছে, কেন তারা এতদিন দুই পুলিশ কর্তাকে গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয়েছে? কেনই বা আদালত সরকার বা সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনার হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরই পদক্ষেপ নিল?
দেশের শীর্ষ আদালত মন্তব্য করেছে, “আমরা দেখতে পাচ্ছি, আদালতের কঠোর এবং শক্তিশালী মন্তব্যের কারণে এই গ্রেফতার করা হয়েছে। সত্য হল, গত ১৫ মে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। শুধুমাত্র এই আদালত অবমাননার পিটিশন এবং এই আদালতের পর্যবেক্ষণের পরই গ্রেফতার করা হয়েছে।” ডিভিশন বেঞ্চ আদেশে বলেছে, এ বিলম্বের কারণ রাজ্য এবং তদন্তকারী সংস্থাকে জানাতে হবে।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর, আদালত, মৃতের আত্মীয়দের দ্বারা দায়ের করা আদালত অবমাননার আবেদন শুনানির সময় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের জন্য ৭ অক্টোবর পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করেছিল। যদিও CBI-এর পক্ষ থেকে আদালতে দাবি করা হয়েছিল, অভিযুক্তরা পলাতক এবং তাঁদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ২ লক্ষ টাকার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু CBI-এর ভূমিকাতেও অসন্তুষ্ট হয় আদালত।
হেফাজতে নির্যাতনের এই মামলায় তদন্ত কেন্দ্রীয় সংস্থাকে স্থানান্তর করার সময়, সুপ্রিম কোর্ট এই বছরের ১৫ মে নির্দেশ দিয়েছিল যে মৃত্যুর জন্য দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাদের এক মাসের মধ্যে গ্রেফতার করা উচিত। গত ২৬ সেপ্টেম্বর, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, মধ্যপ্রদেশের অতিরিক্ত প্রধান সচিব (স্বরাষ্ট্র) এবং CBI তদন্তকারী অফিসারকে ৮ অক্টোবর আদালতে উপস্থিত থাকতে হবে যদি দুই পুলিশ কর্মচারী নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে গ্রেফতার না হয়। যদিও অবশেষে সিবিআই জানিয়ে দিল, দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার, CBI আদালতে জানায়, দুই পলাতক পুলিশ কর্মকর্তার একজনকে ২৭ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করা হয়েছে, অন্যজনকে ৫ অক্টোবর হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বেঞ্চ তখন জানতে চায়, কেন তাদের গ্রেপ্তার করতে এত সময় অপেক্ষা করতে হল সিবিআই-কে? আদালতের প্রশ্ন, “ওই দিনগুলোতে কী ঘটেছিল? কেন আপনি তাদের খুঁজে বের করতে পারেননি? আমরা আপনাকে পদক্ষেপ নিতে প্রায় আদালত অবমাননার অভিযোগ আনতে হয়েছিল। তাদের গ্রেফতার করার জন্য তিন বিচারকের বেঞ্চের আদেশ ছিল।” বিচারপতি মহাদেবন জানতে চান, “দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কি বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?” এই মামলার পরবর্তী শুনানি ৬ নভেম্বর।