সৌদি এবং পাকিস্তান-সহ কুড়িটিরও বেশি ইসলামিক দেশে তাৎক্ষণিক তিন তালাকের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। মিশরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাবকে বেআইনি করার কথা ভাবা হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়া চাইছে ‘কাফির’-এর মতো শব্দ নিষিদ্ধ করতে যা মানবতার বিপক্ষে।
আরও পড়ুনঃ অভিন্ন বিধির পক্ষে মত! ধর্মের উর্ধ্বে মুসলিম মহিলাদের আকাঙ্ক্ষার বাস্তব চিত্র সমীক্ষায়
advertisement
কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে, অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড (এআইএমপিএলবি)-এর মতো সংগঠন অসাংবিধানিক ভাবে সাম্প্রদায়িক আদালত চালাচ্ছে। রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রগতিশীল পদক্ষেপের বিরোধিতা করে চলেছে৷
সেক্ষেত্রে ভারতীয় সংবিধানের দ্বারা অভিন্ন দেওয়ানি বিধি জারি করাই একমাত্র পথ। ‘এক জাতি এক আইন’-এর বিরোধিতা করছে বেশ কিছু সংগঠন। তাদের যুক্তি, এটি ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর আঘাত হানবে এবং ‘সংখ্যাগরিষ্ঠের নীতিবোধ’ ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকারকে নষ্ট করবে।
সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদি সরকার ঘোষণা করেছে, আইন কমিশন অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিষয়ে আলোচনা শুরু করবে। এই পরিস্থিতিতে বিরোধিতাও বাড়ছে।
কিন্তু অভিন্ন দেওয়ানি বিধির মূল অংশগুলি সম্পর্কে মুসলিম মহিলারা ঠিক কী ভাবছেন! তা জানতে নিউজ ১৮-এর তরফে ভারতের ২৫টি রাজ্যে মোট ৮,০৩৫ জন মুসলিম মহিলার সঙ্গে কথা বলেছিলেন ৮৮৪ জন সাংবাদিক। এই মহিলারা মুসলিম সমাজের নানা স্তর থেকে উঠে এসেছেন, বয়স ১৮-৬৫ বা তার বেশি।
আরও পড়ুনঃ বিবাহবিচ্ছেদে বিধিনিষেধ ছাড়াই পুনর্বিবাহের অধিকার চান ৭৪ শতাংশ মুসলিম মহিলা
প্রাথমিক ভাবে বলা হয়েছিল চাইলে অংশগ্রহণকারীরা তাঁদের নাম গোপন করতে পারেন। কিন্তু দেখা যায় ৯০ শতাংশ মহিলাই তাঁদের নাম প্রকাশ করেছেন। প্রত্যেক সাংবাদিক গড়ে ৯ জন মহিলার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন।
এই সমীক্ষায় জিজ্ঞাসা করা সাতটি মূল প্রশ্নে কোথাও অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কথাটি উল্লেখ করা হয়নি। মুসলিম নারীদের দৃষ্টিভঙ্গি আরও ভাল ভাবে বোঝার জন্য শুধু বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নই করা হয়েছিল। সেখানেই যে চিত্র ধরা পড়েছে তা, এআইএমপিএলবি এবং অন্য গোষ্ঠীগুলির দাবিকে নস্যাৎ করে দিতে পারে।
সমীক্ষায় দেখা যায়, অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রধান নীতিগুলি বেশিরভাগই সমর্থন করছেন সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম নারী। যদিও সাধারণ নারীদের তুলনায় উচ্চশিক্ষিত নারীরা শতকরা হিসেবে বেশি সমর্থন করছেন এই বিষয়গুলি।
নিউজ ১৮ নেটওয়ার্কের সমীক্ষার রিপোর্ট দৃঢ়ভাবে কয়েকটি বিষয়ের ইঙ্গিত দেয়।
প্রথমত, এআইএমপিএলবি- এর মতো গোষ্ঠী এবং ব্যক্তিরা সাধারণ মুসলমানদের, বিশেষ করে মহিলাদের প্রতিনিধিত্ব করছে না।
দ্বিতীয়ত, বাইরের এবং অভ্যন্তরীণ শক্তি রয়েছে যারা ভারতের ২০ কোটি মুসলিম সম্প্রদায়কে অন্ধকারে রাখতে অত্যন্ত সক্রিয়। এটি তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক উদ্দেশ্য।
এক সময় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকরা শাসন কায়েম করতে ভারতে হিন্দু-মুসলমান বিভাজন জিইয়ে রাখতে এই আইন বজায় রেখেছিল। এখনও বহিঃশত্রুরা স্বার্থ কায়েম করতে এই বিভাজন বজায় রাখতে চাইছে।
একাংশ বিশেষজ্ঞ মনে করছেন ভারতীয় রাজনৈতিক দলগুলিও কোনও স্বার্থেই এর বিরোধিতা করতে চাইছে।