১৫ নভেম্বর বিরসা মুন্ডার জন্মবার্ষিকী। আর সেই দিনই তাঁর জন্মভূমি ঝাড়খণ্ডের খুঁটি জেলার উলিহাতু গ্রাম থেকে ‘বিকশিত ভারত সঙ্কল্প যাত্রা’ নামে ওই প্রকল্প চালু করবেন প্রধানমন্ত্রী।
মোদিই প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি প্রথম বারের জন্য উলিহাতু সফরে যাচ্ছেন। প্রাথমিক ভাবে যেসব জেলায় উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ বা আদিবাসীর সংখ্যা বেশি, সেই সব জেলা থেকেই এই যাত্রা শুরু হবে। আগামী বছরের ২৫ জানুয়ারির মধ্যে দেশের সমস্ত জেলায় এই যাত্রার সঙ্কল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন: রোজ যত খুশি হাঁটলে উল্টে শরীরের ক্ষতি! বয়স অনুযায়ী হাঁটার পরিমাণ আলাদা, কতটা হাঁটবেন জানুন
এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে থাকবে প্রায় ৩০০০ ভ্যান। যা মাত্র দুই মাসে দেশের ২.৫ লক্ষ গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ১৫০০০ শহরাঞ্চলে ঘুরবে। প্রতিটি ভ্যান এক-একটি গ্রাম পঞ্চায়েতে থাকবে ২ ঘণ্টার জন্য। মূলত এই যাত্রার মাধ্যমে সেই সব সুবিধাভোগী পর্যন্ত পৌঁছনো হবে, যাঁরা এখনও সরকারি স্কিমের সুবিধা পাননি। আর এর সঙ্গে তাঁরা যাতে সেই সুবিধা পান, সেটাও নিশ্চিত করা হবে। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হল নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির কাছে পৌঁছনো।
আরও পড়ুন: আপনার কি শীতকালে নাক থেকে রক্ত পড়ে? কখনও ভেবেছেন কেন? অবশ্যই জানুন
আসলে অনেক সময় কোনও কারণে অনেকেই সরকারি প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকেন। তাঁরা যাতে সেই সুবিধাটুকু পান, সেটা নিশ্চিত করা এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। আগামী ২২ নভেম্বর, ২০২৩ তারিখ পর্যন্ত ২১টি রাজ্য অথবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৬৯টি জেলার ৩৯৩টি ট্রাইবাল ব্লক এবং ৯০০০ গ্রাম পঞ্চায়েত কভার করা হবে। এর পরে গ্রামাঞ্চলগুলির পাশাপাশি শহরাঞ্চলেও এই অভিযান চালানো হবে। এই যাত্রার কালে মুখ্যমন্ত্রীরা, কেন্দ্রীয় ও প্রতিমন্ত্রীরা এবং রাজ্যপালেরা বিভিন্ন এলাকায় উপস্থিত থাকবেন। আর ভোটমুখী রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে এই যাত্রা সম্পন্ন হবে আদর্শ আচরণবিধির সমাপ্তির পরেই।
আগামী ১৫ নভেম্বর, ২০২৩ তারিখে মোট ১১৮টি ভ্যান এই যাত্রা শুরু করতে চলেছে। গত সোমবার মধ্যপ্রদেশের এক জনসমাবেশে গিয়ে নিজের ঝাড়খণ্ড সফরের কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি জানিয়েছেন যে, “নির্বাচনের একেবারে শেষ দিন চলে এসেছে। কিন্তু এর দুদিন পরে আমি বিরসা মুন্ডার গ্রামে যাচ্ছি। এটা আমাদের অগ্রাধিকার।”
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি (পিএম কিষাণ)-র আওতায় ১৫-তম কিস্তির প্রায় ১৮০০০ কোটি টাকা ৮ কোটিরও বেশি সুবিধাভোগীর মধ্যে বণ্টন করবেন।
আদিবাসীদের ক্ষমতায়নের জন্য
আদিবাসীদের ক্ষমতায়নের জন্য বড়সড় পদক্ষেপ করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বুধবার তিনি বিরসা মুন্ডার গ্রামেই আদিবাসীদের জন্য পিএম পিভিটিজি (পার্টিকুলারলি ভালনারেবল ট্রাইবাল গ্রুপস) ডেভেলপমেন্ট মিশন চালু করবেন। স্বাধীনতার পর থেকে প্রথম ধরনের এহেন মিশনে মোদি সরকার জন জাতীয় গৌরব দিবস উপলক্ষে পিভিটিজি বা বিশেষ ভাবে দুর্বল উপজাতি গোষ্ঠীর সামগ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ২৪০০০ কোটি টাকার প্রকল্প চালু করবেন।
২০২৩-২৪ বাজেটে পিভিটিজি বা বিশেষ ভাবে দুর্বল উপজাতি গোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক অবস্থানের অগ্রগতির জন্য প্রধানমন্ত্রী পিভিটিজি ডেভেলপমেন্ট মিশন চালু করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। ১৮টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে মোট ৭৫টি পিভিটিজি রয়েছে। আর এই গোষ্ঠীর জনসংখ্যা প্রায় ২৮ লক্ষ, যাঁরা মোট ২২৫৪৪টি গ্রামে বসবাস করেন।
সরকারি এক সূত্রের বক্তব্য, এই উপজাতি গোষ্ঠীর মানুষ মূলত বিক্ষিপ্ত ভাবে, প্রত্যন্ত এবং দুর্গম জায়গায় বসবাস করে। এমনকী কিছু কিছু এলাকায় জঙ্গলের মধ্যেই তাঁদের বাস। আর সেই কারণেই পিভিটিজি বা আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠীগুলি যাতে মৌলিক সুবিধাটুকু পায়, তার জন্য এই মিশন পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই মৌলিক সুবিধাগুলির মধ্যে অন্যতম হল রাস্তাঘাট, টেলিকম সংযোগ, বিদ্যুৎ, নিরাপদ আবাস, পরিষ্কার পানীয় জল, স্যানিটেশন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি এবং স্থায়ী জীবিকার সুযোগ।
আধিকারিকরা জানাচ্ছেন যে, ৯টি মন্ত্রকের ১১টি পদক্ষেপের মাধ্যমেই এই মিশনকে বাস্তবায়িত করা হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, পিএমজিএসওয়াই, পিএমজিএওয়াই, জল জীবন মিশন ইত্যাদির আওতায়। এই প্রত্যন্ত বাসস্থানগুলিকে কভারেজ দেওয়ার জন্য কয়েকটি স্কিমের নিয়ম শিথিল করা হবে। এখানেই শেষ নয়, এর পাশাপাশি পিএমজেএওয়াই, সিকল সেল ডিজিজ এলিমিনেশন, টিবি এলিমিনেশন, ১০০ শতাংশ ইমিউনাইজেশন, পিএম সুরক্ষিত মন্ত্রিত্ব যোজনা, পিএম মাতৃ বন্দনা যোজনা, পিএম পোষণ, পিএম জন ধন যোজনা ইত্যাদির জন্য আলাদা ভাবে স্যাচুরেশন নিশ্চিত করা হবে।