উত্তরপ্রদেশের এটওয়ার সাইফাই থেকে নয়াদিল্লি। দীর্ঘ পাঁচ দশকের রাজনৈতিক কেরিয়ারে একের পর এক বাধা টপকেছেন মুলায়ম সিং যাদব। রাজনীতির যুদ্ধে সাময়িক হার হলেও, পরের লড়াইয়ে এগিয়ে গিয়েছেন নেতাজি। উত্তরপ্রদেশ তো বটেই, দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে জাতীয় রাজনীতিরও নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠেন তিনি। রাম মনোহর লোহিয়া আর রাজ নারায়ণের হাত ধরে রাজনীতিতে উত্থান মুলায়ম সিং যাদবের। রাম মনোহর লোহিয়ার লেখা ভাবনা বদলে দিয়েছিল মুলায়মের। পিছড়ে বর্গ, দলিত আর মুসলিমদের পক্ষে কথা বলা অভ্যাস হয়ে উঠেছিল বছর পনেরোর ওই কিশোরের।
advertisement
রাজনীতিতে মুলায়ম
- ১৯৬৭ সালে বিধায়ক হন মুলায়ম সিং যাদব
- ১৯৭৫ সালে জরুরী অবস্থার সময় বিধায়ক থাকাকালীন গ্রেফতার হন মুলায়ম
- ১৯ মাস জেলে কাটানোর পর ছাড়া পান তিনি
- ১৯৭৭ সালে লোক দলের প্রেসিডেন্ট হন মুলায়ম
- ওই বছরেই প্রথম মন্ত্রিত্বের স্বাদ পান মুলায়ম
- ১৯৮০ সালে তিনি জনতা দলের প্রেসিডেন্ট হন
- ১৯৮২-৮৫ সাল পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশের বিরোধী দলনেতাও ছিলেন তিনি
- ১৯৮৯ সালে উত্তরপ্রদেশের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হন মুলায়ম
- ১৯৯২ সালে জনতা দল থেকে বেরিয়ে সমাজবাদী পার্টি গঠন করেন মুলায়ম
- ১৯৯৩ সালে বিজেপি-কে ঠেকাতে মায়াবতীর হাতও ধরেন মুলায়ম
- ১৯৯৬ সালে মৈপুরী লোকসভা কেন্দ্র থেকে জেতেন মুলায়ম
- ওই বছরই কেন্দ্রে যুক্তফ্রন্ট সরকারের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হন
- ২০০৩ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীও ছিলেন তিনি
- বর্তমানে আজমগড় লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ মুলায়ম
উত্তরপ্রদেশ হোক বা জাতীয় রাজনীতি, বর্ণময় চরিত্রের মুলায়ম। কথায় বলা হয়, উত্তরপ্রদেশ যার, দিল্লি তার। সেই সূত্র মেনেই জাতীয় রাজনীতিতে নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠেন মুলায়ম। একাধিকবার বিতর্কেও জড়ান।
বিতর্কে মুলায়ম
- ২ অক্টোবর, ১৯৯৪ সালে পৃথক উত্তরাখণ্ড রাজ্যের দাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে মুলায়মের সরকারের বিরুদ্ধে
- ২০০৩ সালে কোটি কোটি টাকার শস্য কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠে মুলায়মের সরকারের বিরুদ্ধে
- ২০১২ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়ালেও, কয়েকঘণ্টার মধ্যেই ডিগবাজি খান মুলায়ম
জাতীয় রাজনীতিতে বরাবর ইউ টার্নে অভ্যস্ত মুলায়ম। একাধিক ঘটনায় বারবার অবস্থান বদলান নেতাজি।
দলের রাশ হাতে রাখা নিয়ে ছেলে অখিলেশের সঙ্গে বিরোধ শুরু হয় মুলায়মের। সোমবার, রাজনীতির এমন বর্ষীয়ান কুস্তিগিরকে ধোবিপাটে আছাড় খেতে হয় ছেলের কাছেই। তাতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এই ছাত্রের আধাশতকের রাজনৈতিক কেরিয়ার শেষ হয়ে গেল কিনা সেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।