সংসদ ভবন চত্বরে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় মহুয়া মৈত্র বলেন, ‘‘আজ ভারতীয় গণতন্ত্রের অন্যতম কালাদিবস৷ গতকাল রাত ৯টার সময় বিজেপি সরকার জানায় তারা সংসদে এই বিল আনতে চলেছে৷ দুই শরিকের সাহায্যে ২৪০টা সাংসদ নিয়ে সংবিধান সংশোধনী বিল সংসদে আনার প্রস্তাব রাখে ওরা৷’’
মহুয়ার দাবি, গত বছর থেকেই বিরোধীরা জানিয়ে আসছিল যে বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে সংবিধান, কেন্দ্রীয় সরকারের এই কাজ বিরোধীদের সেই কথাই প্রমাণ করলেন বলে দাবি করেন তৃণমূল সাংসদ৷ মহুয়া জানান, ভারতীয় আইন বলে, যতক্ষণ না পর্যন্ত কোনও মানুষের অপরাধ প্রমাণিত হয়, ততক্ষণ তিনি নির্দোষ৷ কিন্তু, এই নতুন বিলে বলা হচ্ছে, যে কোনও মুখ্যমন্ত্রী যাঁর বিরুদ্ধে কোনও অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, তাঁকে গ্রেফতার করা যাবে এবং ৩০ দিনের মধ্যে তাঁকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে সেই রাজ্যের সরকার ফেলে দেওয়া যাবে৷ এই গোটা বিষয়টি বিচারব্যবস্থাকে এক ধারে সরিয়ে রেখে করা হয়েছে৷ কারণ, এতে কারওকে দোষী বা নির্দোষ প্রমাণ করার কোনও প্রয়োজন হচ্ছে না৷
মহুয়া মৈত্র বলেন, ‘‘এই বিষয়টি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর৷ আমরা আনুষ্ঠানিক ভাবেই এখন একটা সুপার এমারজেন্সি পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি৷’’
দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো অর্থাৎ, ফেডারেল স্ট্রাকচারের কথা মনে করিয়ে দিয়ে মহুয়া মৈত্র বলেন, ‘‘আমাদের ফেডারেল স্ট্রাকচার বলে, ৮ কোটি ৯ কোটি লোক ভোট দিয়ে একজন মুখ্যমন্ত্রীকে নির্বাচিত করেন৷ কেন্দ্র এক্ষেত্রে সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে হাতিয়ার করে যে কারওকে গ্রেফতার করতে পারে৷ তারপরে ৩০ দিন আটকে রেখে, তারপর তাকে পদ থেকে সরিয়ে দিতে পারে৷ তাহলে এখানে বিচার প্রক্রিয়া, আদালত, দোষ প্রমাণের কোনও প্রয়োজন থাকছে না৷’’
এপ্রসঙ্গে, দিল্লির প্রাক্তন মন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনের কথা মনে করিয়ে দেন মহুয়া, যাঁর গ্রেফতারির ৪ বছর পরে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও মামলা খাড়া করতে পারেনি সিবিআই৷
শুধুমাত্র, বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীদেরই নয়, এই বিল পাশ হলে ‘বিক্ষুব্ধ’ বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদেরও চাপে রাখতে পারবে বিজেপি, মনে করছেন মহুয়া মৈত্র৷