গত আড়াই বছরে দেশ জোড়া পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে অনেকটাই ৷ পাল্টে গিয়েছে সামগ্রিক ছবি৷ রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে আলগোছে চুলটা বেঁধে নিয়ে প্রথমে রান্না৷ টিফিন গুছনো৷ নিজের, বাকিদের৷ সন্তানের স্কুল যাওয়ার বন্দোবস্ত করে তড়িঘড়ি দৌড়নো অফিসের পথে৷ কখনও শিশু বাড়িতে, মা ছুটছেন অফিসের পথে৷ জানলার গরাদে হয়তো মুখ ঠেকিয়ে বসে আছে ছোট শিশু৷ যেন বলছে, 'যেতে আমি দেব না তোমায়৷' মা যেন বলছেন, 'কিন্তু হায় তবু যেতে দিতে হয়৷' সে সব দিন পার হয়েছে অনেকদিনই ৷ অতিমারি মুহূর্তের মধ্যে উল্টে দিয়েছে যাপন৷ যেন কোনও এক ভয়, কোনও ভীতি কিংবা কোনও অশরীরী শক্তি শিকল পরিয়েছে পায়ে৷ টেনে দিয়েছে লক্ষণ রেখা৷ যার বাইরে পা রাখলেই সমূহ বিপদ৷ এই ভয় আবালবৃদ্ধবণিতার৷ এই ভয় থেকেই উঠে এসেছে বাড়ি বসে কাজের ধারণা৷ সময়টা অনেকটাই৷ মানুষ ধীরে ধীরে আকৃষ্ট হচ্ছে ওয়ার্ক ফ্রম হোমে৷ অভ্যস্তও হচ্ছে বই কী! শিশুরাও স্বাচ্ছন্দ্য অনলাইন পড়াশোনায়৷ হ্যাঁ, মুখ হয়তো ভার৷ হয়তো টিফিন ভাগ হয় না অনেকদিন৷ হয়তো ক্লাস মনিটর হয়ে দাদাগিরি ফলানো বন্ধ, কিন্তু বিকল্প আর আছেটাই বা কী!
advertisement
প্রথম বা দ্বিতীয় ঢেউকে অনেকদিনই ছাপিয়ে গিয়েছে মহামারির তৃতীয় ঢেউ৷ আগের বার যেটা ছিল ভয়, এবার সেটাই হয়েছে বাস্তব৷ কেরলে সংক্রমণ রেকর্ড গড়েছে ৷ আক্রান্তদের অনেকে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টেও আক্রান্ত ৷ বাদ যায়নি কোনও স্তরই ৷ চাপ পড়েছে স্বাস্থ্যব্যবস্থার উপরেও৷ এই মুহূর্তে কেরলের জেলাগুলিকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে৷ প্রথম শ্রেণিভুক্ত জেলাগুলিতে সর্বোচ্চ ৫০ জন মানুষ সামাজিক, ধর্মীয়, রাজনৈতিক সমাবেশে জমায়েত করতে পারে৷ দ্বিতীয় শ্রেণিভুক্ত জেলাগুলিতে কোনওরকম জমায়েত করা যাবে না ৷ একমাত্র বিয়েবাড়ি বা শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের ক্ষেত্রে মাত্র ২০ জন অংশগ্রহণ করতে পারেন৷ এই মুহূর্তে তৃতীয় শ্রেণির আওতায় কোনও জেলাকে রাখা হয়নি৷ সংক্রমণের হার দেখে সেই বিষয়টি ঠিক করা হবে৷ সেক্ষেত্রে একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণি বাদ দিয়ে সমস্ত ক্লাস অনলাইন হবে৷ কেরলের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ (Veena George) ৷