হিন্দু বিবাহ আইনের ধারা ২৪ অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীর কাছ থেকে ভরণপোষণ দাবি করতে পারেন না যদি না তিনি শারীরিক বা মানসিক ভাবে উপার্জনে অক্ষম হন। কর্ণাটক হাই কোর্টের বিচারপতি এম নাগপ্রসন্ন বলেন, ‘একজন সক্ষম পুরুষের দায়িত্ব হল তাঁর নিজের এবং স্ত্রী সন্তান থাকলে তাঁদেরও যত্ন নেওয়া।’
advertisement
গত ২০২২ সালের ৩১ অক্টোবর বেঙ্গালুরু গ্রামীণ জেলার সালুহুনাস গ্রামের বাসিন্দা এক ব্যক্তি পারিবারিক আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তিনি তাঁর বিবাহবিচ্ছিন্না স্ত্রীর কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা ভরণপোষণের দাবি করেছিলেন। কিন্তু পারিবারিক আদালতে সেই দাবি গ্রাহ্য করা হয়নি। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই হাই কোর্টে মামলা করেন ওই ব্যক্তি।
নিজের রায়ের ক্ষেত্রে বিচারপতি উল্লেখ করেছিলেন যে, চাকরি নেই মানেই এই নয় যে ওই ব্যক্তি কোনওদিন চাকরি পাবেন না। হিন্দু বিবাহ আইনের ২৪ নম্বর ধারার লিঙ্গ নিরপেক্ষতার দিক থেকে বিচার করে যদি এই ব্যক্তির স্ত্রীকে ভরণপোষণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় তবে তা যুক্তিসঙ্গত হবে না, কারণ উক্ত ব্যক্তি কোনও ভাবেই শারীরিক বা মানসিক ভাবে অপারগ নন।
সুপ্রিম কোর্টে অঞ্জু গর্গ বনাম দীপককুমার গর্গ মামলার উল্লেখ করে কর্ণাটক হাই কোর্টের বিচারপতি জানান, কোনও সুস্থ ব্যক্তি কোনও ভাবেই তাঁর স্ত্রী সন্তানের ভরণপোষণের দায় অস্বীকার করতে পারেন না।
জানা গিয়েছে, ওই দম্পতির বিয়ে হয়েছিল ২০১৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি। কিছুদিন পর থেকে অশান্তি শুরু হয়ে। তারপরেই ওই মহিলা বাপের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। এদিকে তাঁর স্বামী বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করেন। তখন মহিলাও তাঁর অধিকার বুঝে নিতে মাসিক ২৫ হাজার টাকা ভরণপোষণ এবং আইনি খরচের জন্য ১ লক্ষ টাকা দাবি করেন। এরই পাল্টা হিসেবে ওই ব্যক্তি স্ত্রীর কাছ থেকে মাসিক ২ লক্ষ টাকা এবং আইনি খরচ হিসেবে ৩০ হাজার টাকা চান। মহিলা জানান, ওই ব্যক্তি মাসিক ৫০-৬০ হাজার টাকা রোজগার করেন। এ ছাড়া স্থাবর সম্পত্তি থেকে তাঁর প্রায় ৭৫ হাজার টাকা রোজগার হয় প্রতি মাসে।