IUML আগেই জানিয়েছিল, সংসদে বিলটি পাস হলেই তারা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবে বিলের বিরুদ্ধে৷ বুধবার বিলটি পাস হয়ে গিয়েছে রাজ্যসভায়৷ সেই মতো তারা দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছে৷ IUML-এর বক্তব্য, ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা করছে সরকার৷
advertisement
বুধবারই রাজ্যসভায় পাস হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল৷ সোমবার বিলটি লোকসভায় পাস হয়ে গিয়েছে৷ এ বার পরীক্ষা ছিল রাজ্যসভায়৷ সেখানেও শেষ হাসি হাসলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ৷ বুধবার দিনভর রাজ্যসভায় বিতর্ক-বিবাদের পরে শেষ পর্যন্ত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হয় সংসদে৷ ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি শিবসেনা৷ বিলের পক্ষে ভোট পড়ে ১২৫, বিপক্ষে ১০৫টি ভোট৷ ৮ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বিতর্কের পর পাস হয় বিলটি৷
বিলটি সংসদে পেশ হওয়া থেকেই উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি বিলের বিরোধিতায় সরব৷ বিল পাস হতেই অসম-সহ উত্তর-পূর্ব ভারতে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ৷ কেন্দ্রকে সেনা নামাতে হয়েছে৷ বিল পাসের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ট্যুইটারে লেখেন,'দেশ ও দেশবাসীর ভাবাবেগ ও ভ্রাতৃত্ববোধের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন আজ। রাজ্যসভায় সিএবি-২০১৯ পাশ হওয়ায় আমি খুশি। বিলের পক্ষে যাঁরা ভোট দিয়েছেন তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। যাঁরা বহু বছর ধরে ধর্মীয় অত্যাচারের শিকার, তাঁদের স্বস্তি দেবে এই বিল৷'
নাগরিকত্ব বিল নিয়ে কতটা জানেন আপনি?
সোমবার লোকসভায় পাশ হয়েছে নাগরিকত্ব বিল ৷ এই ক্যুইজ থেকে জেনে নিন এই বিল সম্পর্কে আপনি কতটা জানেন
নাগরিকত্ব বিল তিব্বতি রিফিউজিদের নাগরিকত্ব দেবে ?
পাকিস্তানে ধর্মীয় নিপীড়নে এদেশে পালিয়ে আসা আহমদিয়া শরণার্থীদের CAB-র অধীনে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া যেতে পারে ?
যে বাংলাদেশী হিন্দু অভিবাসী ২০১৫ সালে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন তাকে সিএবির অধীনে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া যেতে পারে?
বাংলাদেশ থেকে আসা একটি অবৈধ বৌদ্ধ অভিবাসী, যার নাম অসমের জাতীয় নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ ছিল এবং বিদেশি ট্রাইব্যুনালে তার বিরুদ্ধে মামলা বিচারাধীন রয়েছে ৷ সিএবির অধীনে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার কি যোগ্য ?
মেঘালয় ভারতীয় সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের আওতাভুক্ত, যা CAB-র আওতার বাইরে। তাহলে কি মেঘালয়ের শিলংয়ের পুলিশ বাজার এলাকায় বসবাসরত বাংলাদেশ থেকে আসা কোনও অবৈধ হিন্দু অভিবাসী সিএবির অধীনে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন?
ত্রিপুরায় স্থায়ীভাবে বসবাসকারী সমস্ত অবৈধ বাঙালি হিন্দু অভিবাসীরা সিএবির অধীনে ভারতীয় নাগরিকত্ব পেতে পারে ?
পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশে ধর্মের ভিত্তিতে নির্যাতনের শিকার হয়ে হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টানরা যারা ভারতে চলে এসেছিলেন তাদেরকে CAB-র অধীনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
ভারতে যে কোনও হিন্দু অভিবাসী সিএবির অধীনে নাগরিকত্ব দাবি করতে পারেন।
বাংলাদেশ থেকে চাকমা ও হাজং শরণার্থীরা যারা অরুণাচল প্রদেশে পুনর্বাসিত হয়েছেন এবং এখনও ভারতের নাগরিকত্ব পাননি তারা সিএবির অধীনে ভারতীয় নাগরিকত্ব দাবি করতে পারেন।
শ্রীলঙ্কা থেকে আসা হিন্দু তামিলরা কি CAB-র অধীনে ভারতীয় নাগরিকত্ব চাইতে পারেন ?
একজন অসমিয়াভাষী হিন্দু যার শিকড় জোড়হাটে রয়েছে কিন্তু সঠিক দলিলের অভাবে তাকে অসমের ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেন (এনআরসি) থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। তিনি কি সিএবির অধীনে ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন?
বিলের সমর্থনে ভোট দেয় জনতা দল (ইউনাইটেড), শিরোমণি অকালি দল, এআইএডিএমকে, বিজু জনতা দল, তেলুগু দেশম পার্টি ও ওয়াইএসআর কংগ্রেস৷ ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি শিবসেনা৷
নাগরিকত্ব আইন ১৯৫৫-এর সংশোধনী বিলে বলা হয়েছে, সেই সব হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে, যাঁরা ধর্মীয় নিপীড়নের জেরে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে ভারতে এসে আশ্রয় নেন৷ ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য ১২ মাস টানা ভারতে থাকতে হত৷ একই সঙ্গে গত ১৪ বছরের মধ্যে ১১ বছর ভারতবাস জরুরি ছিল। সংশোধনী বিলে দ্বিতীয় নিয়মে পরিবর্তন ঘটানো হচ্ছে। ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্থান থেকে আনা নির্দিষ্ট ৬টি ধর্মাবলম্বীদের জন্য ১১ বছর সময়কালটিকে নামিয়ে আনা হচ্ছে ৬ বছরে। বেআইনি অভিবাসীরা ভারতের নাগরিক হতে পারে না। এই আইনের আওতায়, যদি পাসপোর্ট বা ভিসা ছাড়া কেউ দেশে প্রবেশ করে থাকেন, বৈধ নথি নিয়ে প্রবেশ করার পর নির্দিষ্ট সময়কালের বেশি এ দেশে বাস করে থাকেন, তা হলে তিনি বিদেশি অবৈধ অভিবাসী বলে গণ্য হবেন।