এই পুরস্কারের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বনতারার এলিফ্যান্ট কেয়ার সেন্টার। যা প্রায় ২৪০টি উদ্ধার হওয়া হাতির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। আসলে উদ্ধার হওয়া হাতিদের জন্য এটি একটি নিরাপদ এবং সুরক্ষিত পরিবেশ হিসেবে কাজ করে চলেছে। উদ্ধার হওয়া হাতিগুলির মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন সার্কাস থেকে উদ্ধার হওয়া ৩০টি হাতিও। আবার লগিং ইন্ডাস্ট্রি থেকেও ১০০টিরও বেশি হাতিকে উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া রাইড কিংবা রাস্তায় ভিক্ষার কাজে লাগানো হয় কিছু হাতিকে। তাদেরকেও উদ্ধার করা হয়েছে। ৯৯৮ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত বিশেষ ভাবে তৈরি করা জঙ্গল বনতারায় হাতিরা নিরাপদে কোনও বাধাবিপত্তি ছাড়াই ঘুরে বেড়ায়। অন্যান্য হাতিদের সঙ্গও পায়। সেই সঙ্গে চারণ এবং স্নানের মতো স্বাভাবিক কাজগুলিও উপভোগ করে তারা। এখানেই শেষ নয়, বনতারায় এই হাতিরা পেয়ে যায় বিশ্বমানের পশু চিকিৎসা এবং যত্ন-সেবাও।
advertisement
আরও পড়ুনRail: লক্ষ লক্ষ যাত্রীদের জন্য সুখবর! ২০২৫-এর মধ্যেই রেলের দিচ্ছে ‘বিরাট’ উপহার, জানুন আপনিও
নয়াদিল্লির একটি অনুষ্ঠানে এই পুরস্কারটি তুলে দিয়েছেন মৎস্য, পশুপালন ও ডেয়ারি প্রতিমন্ত্রী। আর এহেন সম্মানে ভূষিত হয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বনতারার সিইও ভিভান করণী। সেই সঙ্গে পশুকল্যাণ সংক্রান্ত বিষয়ে বনতারার গভীর অঙ্গীকারও তুলে ধরলেন তিনি। এছাড়া কল্যাণমূলক কাজের মানের উন্নতি এবং ভারতের জীববৈচিত্র্যকে রক্ষা করার লক্ষ্যমাত্রার কথাও বলেছেন। করণীর কথায়, “এই পুরস্কারটি সেই সমস্ত অগণিত মানুষদের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা, যাঁরা নিজেদের জীবনকে প্রাণীদের সুরক্ষা এবং সেবার জন্য উৎসর্গ করেছেন। বনতারায় পশুদের জন্য কিছু করা শুধুমাত্র কর্তব্যই নয়, এটা আমাদের ধর্ম এবং সেবা। আসলে এই অঙ্গীকার গভীর সমবেদনা এবং দায়িত্বের মধ্যে নিহিত। কল্যাণের মান উন্নত করতে, প্রভাবশালী উদ্যোগ চালালিয়ে যেতে এবং পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ভারতের সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য রক্ষার লক্ষ্যে আমরা নিরলস রয়েছি। কর্পোরেট বিভাগে এই ‘প্রাণী মিত্র’ পুরস্কার সেই সমস্ত কর্পোরেশন এবং সংস্থাগুলিকে স্বীকৃতি দেয়, যারা পশু কল্যাণে ধারাবাহিক ভাবে অবদান রেখে চলেছে।”
বনতারার এলিফ্যান্ট কেয়ার সেন্টারে রয়েছে হাতিদের জন্য বিশ্বের সবথেকে বড় হাসপাতাল। সেখানে অ্যাডভান্সড ভেটেরিনারি কেয়ার পাওয়া যায়। এর মধ্যে অন্যতম হল অ্যালোপ্যাথি, আয়ুর্বেদ এবং আকুপাংচার। এর পাশাপাশি এই হাসপাতালে রয়েছে হাইড্রোথেরাপি পন্ড, হাইপারবেরিক অক্সিজেন চেম্বার এবং স্পেশ্যালাইজড ফুট কেয়ার। এছাড়া হাইড্রোলিক সার্জিক্যাল প্ল্যাটফর্ম এবং কাস্টোমাইজড এন্ডোস্কোপ দারুণ কার্যকর এবং চাপমুক্ত কৌশলে সেবা প্রদান করে।
বনতারায় রয়েছে ৭৫টি কাস্টম-ইঞ্জিনিয়ার্ড এলিফ্যান্ট অ্যাম্বুল্যান্স। এই সমস্ত গাড়িতে রয়েছে হাইড্রোলিক লিফট, কমফোর্টেবল ফ্লোরিং এবং অন্যান্য নানা সুবিধা। যাতে উদ্ধার হওয়া হাতিদের অনায়াসে এবং নিরাপদে বহন করা যায়। এই উদ্যোগের মাধ্যমে পশু চিকিৎসা এবং এথিক্যাল এলিফ্যান্ট ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে এক নয়া মানদণ্ড তৈরি করছে বনতারা।
