TRENDING:

'পশু ও মানুষ একই ছাদের নীচে প্রাণ হাতে,' জলের নীচে অসম, ভেসে যাচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম

Last Updated:

অসম বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, ধুবরি, বরপেটা, মরিগাঁও, লখিমপুর, দারাং, গোলাঘাট, গোয়ালপাড়া ও বঙ্গাইগাঁওয়ের পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ৷ শুধু ধুবরিতেই ৮.৭ লক্ষ মানুষ বন্যা কবলিত৷ ৩ হাজার ২০১টি গ্রাম জলের তলায়৷ সম্পূর্ণ ভেসে গিয়েছে৷

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#গুয়াহাটি: অসমে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিয়েছে৷ ইতিমধ্যেই বন্যায় মৃতের সংখ্যা সরকারি হিসেবে ৭৩৷ বেসরকারি হিসেবে সংখ্যাটা আরও বেশি বলেই আশঙ্কা৷ গত কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রবল বৃষ্টিতে ব্রহ্মপুত্র নদ ফুঁসছে৷ বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে৷ যার নির্যাস, ২৬টি জেলা জলের তলায়৷ ৩৭ লক্ষ মানুষ বন্যা কবলিত৷ গ্রামের পর গ্রাম, চাষের জমি, বন্যপ্রাণী-- ব্রহ্মপুত্রের গ্রাসে৷ পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, মানুষ ও বন্যপ্রাণী একই ছাদের তলায় আশ্রয় নিচ্ছে প্রাণের তাগিদে৷
advertisement

কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানে ৮৬টি বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হয়েছে বন্যায়৷ সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, কাজিরাঙা জঙ্গলের ৮৫ শতাংশের বেশি অংশই জলের নীচে৷ ২৩৩টির মধ্যে ৮০টি শিকার-দমন ক্যাম্প ভেসে গিয়েছে জলে৷ কাজিরাঙা সংলগ্ন জাতীয় সড়কে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে৷ কারণ, গাড়ি চাপা পড়েই মৃত্যু হয়েছে ১৪টি হরিণের৷ ৪টি একশৃঙ্গ গণ্ডার জলের ডুবে মারা গিয়েছে৷ তিনটি বাঘ পার্শ্ববর্তী গ্রামে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে গিয়েছিল৷ তাদের জঙ্গলে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷ রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, গণ্ডার-সহ ১২৫টি বন্যপ্রাণীকে এখনও পর্যন্ত উদ্ধার করা গিয়েছে৷

advertisement

কাজিরাঙা জলের তলায়

অসম বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, ধুবরি, বরপেটা, মরিগাঁও, লখিমপুর, দারাং, গোলাঘাট, গোয়ালপাড়া ও বঙ্গাইগাঁওয়ের পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ৷ শুধু ধুবরিতেই ৮.৭ লক্ষ মানুষ বন্যা কবলিত৷ ৩ হাজার ২০১টি গ্রাম জলের তলায়৷ সম্পূর্ণ ভেসে গিয়েছে৷ বঙ্গাইগাঁও জেলাটি ব্রহ্মপুত্রের উত্তর অববাহিকায় অবস্থিত৷ ওই জেলার যোগীঘোপা শহরের এক বাসিন্দা News18-কে বললেন, 'আমরা অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতির মুখে৷ আমরা আবার একসঙ্গে হয়েছি৷ আমাদের গ্রাম জলের তলায়৷ তাই কয়েকশো মানুষের সঙ্গে পশুগুলিও এক ছাদের নীচে কোনও ক্রমে প্রাণের বাঁচার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি৷ পশুগুলিকে উদ্ধার না করতে পারলে, ওরা জলে ডুবেই মারা যাবে৷ প্রতিবছরই এটা ঘটে৷'

advertisement

অসমে বন্যা

বরপেটা জেলার চন্দনপুর গ্রামের বাসিন্দা ৩৫ বছর বয়সি আনওয়ার আলির কথায়, 'আমরা ঘরের বাইরে বেরতে পারছি না৷ কারণ গোটা গ্রামই জলের তলায়৷ এখানে কয়েকশো পরিবারের বাস৷ আমরা রিলিফ ক্যাম্পে আমাদের গবাদি পশুগুলিকে বেঁধে রেখেছি৷ আমরা প্রাণ হাতে ঘরে আশ্রয় নিয়েছি৷ কারণ, রিলিফ ক্যাম্পে ওতো জায়গা নেই৷' বরপেটা জেলায় ৩৬০টির বেশি গ্রাম জলের তলায়৷

advertisement

রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০ লক্ষের বেশি বড় ও ছোট গবাদি পশু, ১২.৮৫ লক্ষ পোলট্রি ফার্ম বন্যা কবলিত বিভিন্ন জেলায়৷ গরু, শুয়োর, ছাগল, মুরগি, হাঁস-- সব বন্যায় ভেসে গিয়েছে৷ ২৪টি জেলার ৩০০ রিলিফ ক্যাম্পে শুক্রবার পর্যন্ত ৪৯ হাজার ৯৭৭ মানুষকে আশ্রয় দেওয়া গিয়েছে৷ এর মধ্যে ৪ হাজার ৫২৬ জন শিশু৷ তাদের অস্থায়ী রিলিফ ক্যাম্পে মা-বাবার সঙ্গে রাখা হয়েছে৷ ৪৪৫টি রিলিফ ডিস্ট্রিবিউশন ক্যাম্প থেকে চাল, ডাল, নুন, সরষের তেল, গম, বেবি ফুড, ত্রিপল, গবাদি পশুর খাবার, স্যানিটারি ন্যাপকিন-সহ নানা অত্যাবশ্যক পণ্য বিতরণ করা হচ্ছে৷

advertisement

কিন্তু অভিযোগ উঠছে পানীয় জলের অপ্রতুলতা৷ মরিগাঁও জেলার ময়রাবাড়ি শহরের এক বন্যা কবলিত ব্যক্তির কথায়, 'আমরা খাওয়ার জল পাচ্ছি না৷ ন্যূনতম শৌচাগারটুকুও জুটছে না৷ এই পরিস্থিতি অসহ্য৷ আর আপনি বলছেন Covid-19 বিধি মানতে?' বলতে বলতে ভয়ে ও উত্তেজনায় কাঁপছিলেন তিনি৷

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
লালগোলাতে রাজরাজেশ্বরী রূপে পূজিতা হন মা কালী! দেওয়া হয় ইলিশের ভোগ
আরও দেখুন

প্রসঙ্গত, চরম বন্যার মধ্যে ভিটেমাটি হারানো মানুষদের করোনা ভাইরাস রুখতে বিধি মানার পরামর্শও দিচ্ছে রাজ্য প্রশাসন৷

বাংলা খবর/ খবর/দেশ/
'পশু ও মানুষ একই ছাদের নীচে প্রাণ হাতে,' জলের নীচে অসম, ভেসে যাচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল