ইডি অনুব্রতকে জেরা করে জানতে চায়, অনুব্রতর অ্যাকাউন্ট থেকে মলয় পিঠের এনজিওতে নয় কোটি টাকা কেন দেওয়া হয়েছিল? মলয় পিঠের স্বাধীন ট্রাস্ট ও সতীর্থ ট্রাস্টে বিনিয়োগ করেছিল কেষ্ট।
অনুব্রত ঘনিষ্ঠ ও অনুব্রত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে নয় কোটি টাকা মলয়ের ট্রাস্টে গিয়েছিল কেন? ২০১৪ সালে নভেম্বর ভোলে বোম রাইস মিলে ৬ দিনে সাড়ে ৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়। যে রাইস মিল অনুব্রতর স্ত্রী ও কন্যা নামে রয়েছে। ইডির প্রশ্ন, ৬ দিনে সাড়ে ৬ কোটি টাকা কোথা থেকে পেল অনুব্রত? ১০ নভেম্বর ২০১৪ সাল থেকে ১৮ নভেম্বর ২০১৪ পর্যন্ত ছয় দিনে সাড়ে ছয় কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিল রাইস মিলে।
advertisement
একাধিক বিষয়ে অনুব্রতকে আরও প্রশ্ন করছে ইডি। ২০১৫-২০১৮ সালের মধ্যে বিপুল পরিমান সম্পত্তি বৃদ্ধি অনুব্রতর কীভাবে হল? রাইস মিল, জমি, বাড়ি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফিক্সড ডিপোজিট কোটি কোটি টাকা কোথা থেকে এল? ব্যাঙ্কের ১৮ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট উৎস কী? প্রাক্তন ব্যাঙ্ক কর্মীকে কেন ছয় কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল? গরু পাচারের প্রটেকশন মানিতেই কি বিপুল সম্পত্তি? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে ইডি।
বুধবারের মতোই ইডির বেশিরভাগ প্রশ্ন উত্তর এড়িয়ে যাচ্ছেন অনুব্রত মণ্ডল। বেশিরভাগ প্রশ্নতে না, জানা নেই, বলতে পারবো না বলে এড়িয়ে যান। তাই এবার যাঁরা (অনুব্রত সিএ মণিশ কোঠারি, রাজীব ভট্টাচার্য, মলয় পিঠ, সুকন্যা মণ্ডল) এর আগে এই বিষয়ে বয়ান দিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে মুখোমুখি বসাতে পারে ইডি। তাই আগামীকাল ফের অনুব্রতকে ইডি হেফাজতের জন্য আবেদন করবে ইডি।
ইডির অভিযোগ, বীরভূমের গরু পাচারে প্রোটেকশন মানি জন্য সায়গল হুসেন অনুব্রত মণ্ডলের নাম করে এনামুল ও আব্দুল লতিফের থেকে বিপুল পরিমান টাকা তুলেছে। গরু পাচারে এনামুল হকের বিজনেস পার্টনার আব্দুল লতিফ। আব্দুল লতিফের সঙ্গে সায়গল হুসেনের যোগসাজস ছিল বলে অভিযোগ। ফলে এই মানি লাউন্ডারিং বিষয়ে জেরা করবে ইডি। টাকার উৎস নিয়ে ইডি তদন্ত লক্ষ্যে পৌছতে চাইছে। ইডির জেরায় অনুব্রত অসহযোগিতা করছেন দাবি, ইডির।
ইডির প্রশ্ন, "আব্দুল লতিফ, এনামুল হক এদের চেনেন ? কীভাবে পরিচয়?"
অনুব্রত জানান, "চিনি না।"
ইডির প্রশ্ন, "সায়গল আপনার দেহরক্ষী কীভাবে বিপুল সম্পত্তি মালিক হল?"
অনুব্রত জানান, 'আমি কী করে জানব? সায়গলের বিষয়ে সম্পত্তি আমার জানা নেই।"
ইডির প্রশ্ন, "আপনার ও আত্মীয়দের বিপুল সম্পত্তি কীভাবে, টাকার উৎস কী?"
অনুব্রত চুপ ছিলেন।
ইডির প্রশ্ন, "সায়গল আপনার নাম করে গরু পাচারে প্রোটেকশন মানি তুলত, জানতেন? কোথায় গেলো সেই টাকা?"
অনুব্রত জানান, "জানি না। এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই।"
ইডির প্রশ্ন, "আপনার ও আত্মীয়দের নামে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্টয়ে কোটি কোটি টাকা লেনদেন? আব্দুল লতিফের বয়ান অনুসারে সায়গল যে টাকা তুলত, সেই টাকা আপনার কাছে যেত?"
অনুব্রত জানান, "আমি কোনও টাকা নেই নি। জানি না কিছু।"
ইডি জেরায় 50 pmLA act অনুসারে অভিযুক্তকে বা সাক্ষীকে নিজেকেই প্রশ্ন উত্তর লিখতে হয়। অফিসারদের প্রশ্নে উত্তর অভিযুক্তকে ( অনুব্রতকে ) লিখতে হবে। গোটা প্রক্রিয়া ভিডিও গ্রাফি করতে হয়। এক্ষেত্রে অনুব্রত সই করতে পারলেও উত্তর লিখতে রাজি নন।
আরও পড়ুন, কুন্তলের টাকাতেই কিনেছেন গাড়ি! ED-র দফতর থেকে বেরিয়ে জানালেন বনি সেনগুপ্ত
আরও পড়ুন, স্কুলে সন্তান পাঠিয়েও শান্তি নেই! মহিলা কর্মচারীর কুপ্রস্তাবের মেসেজ, পরে যা হল
তাই ইডি একজন অফিসার রাখা হয়েছে, যিনি অনুব্রত বয়ান লিখছেন। ভিডিওগ্রাফি করা হচ্ছে। যাতে পরে বয়ান বদলাতে না পারে। কিংবা ইডি চাপ দিয়ে লেখানো হচ্ছে এমন অভিযোগ যাতে না করতে পারেন অনুব্রত। কিন্তু ইডির প্রশ্নোত্তর পর্বে টানা অসহযোগিতা করে চলেছেন অনুব্রত।