একসঙ্গে এয়ার ইন্ডিয়ার ড্রিমলাইনার বিমানের দুটি ইঞ্জিন কীভাবে বিকল হয়ে গেল, সেই প্রশ্নই সবথেকে বেশি করে ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের৷ সেই কারণেই অন্তর্ঘাতের সম্ভাবনাটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ জানার ক্ষেত্রে যাতে কোনওরকম সংশয় না থাকে, সেই কারণেই অন্তর্ঘাতের তত্ত্বের উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে৷
কীভাবে হয়ে থাকতে পারে অন্তর্ঘাত?
জ্বালানিতে ভেজাল মেশানো- অন্তর্ঘাতের সবথেকে জোরাল সম্ভাবনা হিসেবে জ্বালানিতে ভেজাল মেশানোই উঠে আসছে৷ বিমানের জ্বালানি যেখান মজুত করা হয়, যে পদ্ধতিতে বিমানবন্দরে পৌঁছয় তার গোটা প্রক্রিয়াই এখন তদন্তের আওতায়৷ জ্বালানিতে কোনওরকম রাসায়ণিক অদলবদল ঘটানো হয়েছিল কি না অথবা ইচ্ছাকৃত ভাবে ভেজাল মেশানো হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ আহমেদাবাদ বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড স্টাফ, জ্বালানি সরবরাহের দায়িত্বে থাকা সংস্থাগুলির ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে, চলছে জিজ্ঞাসাবাদ৷
advertisement
রক্ষণাবেক্ষণে ঘাটতি?
ড্রিমলাইনার বিমানের রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত জটিল একটি প্রক্রিয়া৷ ফলে রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে কোনও ইচ্ছাকৃত অথবা অনিচ্ছাকৃত কোনও ঘাটতি থেকে গিয়েছিল কি না, সেই সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা৷ বিমানটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে কারা ছিলেন, কী কী যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়েছিল, সেই সমস্ত সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷
সাইবার অন্তর্ঘাত?
ড্রিমলাইনারের মতো বিমানের স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা যে সফটওয়্যার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় তাতে যদি কোনও অদলবদল করা হয়, অথবা ম্যালওয়ার দিয়ে প্রভাবিত করা হয় সেক্ষেত্রেও এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে৷ এই সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে ইঞ্জিন কন্ট্রোল ইউনিট, ফ্লাইট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের সাইবার অডিট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷
বিমানবন্দরের ভিতরে নিষিদ্ধ এলাকায় বহিরাগতের উপস্থিতি
ঘটনার দিন বিমানবন্দরের ভিতরে বহিরাগত কারও অনুমোদনবিহীন প্রবেশ অথবা সন্দেহভাজন কারও উপস্থিতি ছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ বিমানবন্দরের কর্মী, আধিকারিক, বিমানসংস্থার কর্মীদের ওই দিনের উপস্থিতি জানতে বায়োমেট্রিক তথ্য, সিসিটিভি ফুটেজ বিশেষত বিমানটি উড়ে যাওয়ার আগের ছবি, তথ্য সবই খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা৷
এআই ৭৫৭-ই ছিল লক্ষ্য?
কোনও কারণে এয়ার ইন্ডিয়ার ওই বিমানটিকে ধ্বংস করা অথবা বিমানটির ক্ষতি করার কোনও কারণ থাকতে পারে কি না, তা জানতে রাজনৈতিক, গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া তথ্য, সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷
বিদেশি শক্তির হাত?
বিমানটিকে শুধু ভারতীয় নয়, প্রচুর সংখ্যক ব্রিটিশ নাগরিকও ছিলেন৷ ফলে বিমান ভেঙে পড়ার পিছনে বিদেশি কোনও রাষ্ট্রবিরোধী শক্তির ভূমিকা আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷
এটিসি-র ভূমিকায় হস্তক্ষেপ?
উপরোক্ত কারণগুলির পাশাপাশি এটিসি-র সঙ্গে বিমানটির যোগাযোগের ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃত কোনও বাধা সৃষ্টি করা হয়েছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ বিমানটির জিপিএস ব্যবস্থায় কারসাজি, সিগন্যাল জ্যাম করে দেওয়ার মতো চেষ্টা হয়েছিল কি না, খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা৷
রবিবারই অসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী মুরলিধর মহল জানিয়েছিলেন, আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে অন্তর্ঘাতের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না৷ গত ১২ জুন আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে ওড়ার পর পরই ভেঙে পড়েছিল এয়ার ই্ন্ডিয়ার লন্ডনগামী ড্রিমলাইনার বিমান৷ ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় ২৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল৷