রিয়েল এস্টেট ফার্মে সহকারী হিসাবে কাজ করত নীতেশ সুব্বা। মাস খানেক আগে তার চাকরি চলে যায়। তারপর থেকে তেমন কোনও কাজ করত না, মূলত বাড়িতেই থাকত। ঘটনার সূত্রপাত ৩ জুলাই রাতে। নীতেশের পাশেই ফ্ল্যাট দেরাদুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬২ বছর বয়সী অধ্যাপক সুরেশ আইয়ারের। সেখানেই সাংঘাতিক কাণ্ড ঘটায় নীতেশ সুব্বা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুরেশ দেরাদুনের থাকছিলেন গত চার মাস ধরে। বেঙ্গালুরুতে তাঁর বাড়ি বন্ধ ছিল। তাঁর স্ত্রী মাঝে মধ্যে আসতেন দেখাশোনা করার জন্য। শেষবার এসেছিলেন ২১ জুন। সেদিন দিনভর থেকে ঘর পরিষ্কার করে, সেখানে তালা লাগিয়ে দেরাদুন ফিরে যান। এরপর ৪ জুলাই এক প্রতিবেশী সুরেশের স্ত্রীকে ফোন করে জানান, তাঁদের বাড়ির মূল দরজা ভাঙা।
advertisement
পুলিশি তদন্তে সুরেশের স্ত্রী জানিয়েছেন, প্রতিবেশীর ফোন পেয়ে তিনি তৎক্ষণাৎ তাঁর ভাগ্নেকে ফোন করেন বাড়িতে সব ঠিক আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে বলেন। ভাগ্নে এসে দেখেন, বাড়ির মূল দরজা, আলমারির স্লাইডিং দরজা ও শোয়ার ঘরের সিন্দুক ভাঙা। সোনা ও হীরের গয়না উধাও। তিনি তৎক্ষণাৎ ৫ হেব্বাগোদি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
নীতেশের চুরির পদ্ধতি ছিল একেবারে অন্যরকম। সুরেশের আইয়ারের ফ্ল্যাটই প্রথম টার্গেট নয়, আগেও তিনি এই কাজ করেছেন। নীতেশ প্রথমে ফ্ল্যাটের ডোরবেল বাজাতেন। যাকে সে টার্গেট করতে চেয়েছে, তিনি দরজা খুললে অজুহাত দেখিয়ে অন্য কাজে ব্যস্ত করে দিত। কেউ সাড়া না দিলে জুতোর র্যাকে চাবি খুঁজত। চাবি না পেলে লোহার রড দিয়ে দরজা ভেঙে ফেলত। একইরাতে নীতেশ আরও দুটি বাড়িতে চুরি করে। ২২ জুন রাতে আরও দুটি ফ্ল্যাটে হানা দেয়।
আরও পড়ুনঃ চলন্ত ট্রেনে খুব ‘বাথরুম’ পেলে লোকো পাইলটরা কোথায় যান? ৯০% মানুষেরই উত্তর অজানা, আপনি জানেন?
নীতেশের বোনের ফ্ল্যাট ছিল সুরেশের বাড়ির একেবারে পাশেই। এই কারণে অ্যাপার্টমেন্টের প্রতিটি কার্যকলাপের ওপর নজর রাখার সুযোগ পেত সে। তিনি জানতেন কোন ফ্ল্যাট খালি, কখন তার মালিক শহরের বাইরে থাকেন সেই তথ্য কাজে লাগিয়ে চুরির ঘটনা ঘটায় সে।
পুলিশ ইন্সপেক্টর সোমশেখর জি ঘটনার তদন্তে নেমে জানান, তারা অ্যাপার্টমেন্টের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে, ফুটেজ দেখে টি-শার্ট এবং শর্টস পরা এক যুবক কয়েকটি ফ্ল্যাটের সামনে কিছু খুঁজতে দেখা যায়। পুলিশ তাকে নীতেশ সুব্বা হিসাবে চিহ্নিত করে এবং সোমবার তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় সে সমস্ত অপরাধ স্বীকার করে নেয়। পুলিশ নীতেশের কাছ থেকে চুরি যাওয়া জিনিসগুলি উদ্ধার করেছে। ৬২১ গ্রাম, ১৫.৮ গ্রাম হীরা, ৪.৩ গ্রাম প্ল্যাটিনাম, ৫৬ গ্রাম রুপো এবং ২৮,০০০ টাকা নগদ ফেরত দেয় সে। সেই সমস্ত জিনিস তার ফ্ল্যাটে লুকিয়ে রেখেছিল নীতেশ।