পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের কোগ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন কবি কুমুদ রঞ্জন মল্লিক। বর্তমানে তাঁর জন্মভিটে অনেকের কাছে দর্শনীয় স্থান। মঙ্গলকোটের নতুনহাট বাসস্ট্যান্ড থেকে সামান্য দুরত্বেই অবস্থিত কোগ্রাম এবং গ্রামের একদম শেষ সীমান্তে অজয় নদের কিনারে অবস্থিত কবির জন্মভিটে। কবির গ্রামের পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে অজয় ও কুনুর নদী। কবির সঙ্গে নদ-নদীর যোগ আজন্মকাল। যার ফলস্বরূপ মন ছুঁয়ে যাওয়া এমন চরণ আমরা উপহার পাই। তাঁর কবিতায় সহজ-সরল পল্লীরূপের বর্ণনা, আপামর বাঙালি পাঠকের মন খুব সহজেই জয় করে নেয়। গ্রাম-বাংলার স্নিগ্ধ আন্তরিকতা কবি কুমুদরঞ্জনের কবিতায় অন্য এক সুর বহন করে চলে।
advertisement
ছোটবেলায় অনেকেই কবি কুমুদরঞ্জনের লেখা বহু কবিতা হয়ত পড়েছেন। কবি কুমুদরঞ্জন মল্লিকের লেখা কবিতাগুলোর মধ্যে ‘ছুটি’, ‘হয়তো ’, ‘শেষদান ’, ‘আমাদের সঙ্গী ’ এইগুলি বেশ জনপ্রিয় ৷ এ ছাড়াও নূপুর , উজানী , বনতুলসির মতো কাব্যগ্রন্থও বাঙালিদের মনে এক বিশেষ জায়গা করে নিয়েছিল৷ ‘দ্বারাবতী ’ নাটকও কবির রচনা ৷ কবির লেখা কবিতাগুলো দিয়ে পরবর্তীকালে একটি কালজয়ী গানের অ্যালবামও বানানো হয়েছিল। যার পরিচিতি রয়েছে ‘কুমুদ কাব্যগীতি ’ নামে৷ এছাড়াও বিভিন্ন সম্মানে ভূষিত করা হয় কবিকে , তাঁর মধ্যে জগত্তারিণী স্বর্ণপদক এবং স্বাধীনতার পর ভারত সরকারের ‘পদ্মশ্রী ’ উল্লেখযোগ্য৷ তাঁর লেখা দারুণ দারুণ কবিতার মধ্য দিয়ে তিনি আমাদের মধ্যে চিরকালের জন্য তাঁর বিশেষ অবদান রেখে গেছেন ।
আপনাদেরও ইচ্ছে হলে একবার ঘুরে দেখে আসতে পারেন কবি কুমুদরঞ্জন মল্লিকের জন্মভিটে। এই জায়গায় আসার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে আসতে হবে পূর্ব বর্ধমানের নতুনহাটে। নতুনহাটে আসার পর, সেখান থেকে গুসকরা যাওয়ার যে রাস্তা রয়েছে সেই রাস্তায় বেশ কিছুটা এলেই চোখে পড়বে একটি ব্রিজ। ব্রিজের নাম কুমুদ সেতু। এই ব্রিজ পার করলেই রাস্তার ডান দিকে পড়বে একটি গ্রাম। আর এই গ্রামটিই হল কোগ্রাম। গ্রামের একদম শেষ প্রান্তে রয়েছে কবির জন্মভিটে। এছাড়াও নতুনহাট থেকে টোটো করলে সহজেই পৌঁছে যাবেন কবির বাড়িতে। নির্জন পরিবেশে নদীর ধারে অবস্থিত কবির বাড়ি দেখলে মুগ্ধ হবেন আপনারাও।
আরও পড়ুন : টাকা গুনে শেষ হবে না! সামনেই বিদেশভ্রমণ! রাত পোহালে জ্যৈষ্ঠ সংক্রান্তিতে বাম্পার মালামাল এই ৫ রাশি
তবে কবির বাড়িতে রাত্রিযাপনের অথবা খাওয়ার কোনও ব্যবস্থা নেই। তবে চিন্তা করবেন না। কবির বাড়ির একদম পাশেই রয়েছে ৫১ সতীপীঠের একপীঠ সতীপীঠ উজানী। আপনারা এই সতীপীঠে রাত্রি যাপন করতে পারেন। এছাড়াও ভোগ প্রসাদ গ্রহণের ব্যবস্থাও রয়েছে মন্দির প্রাঙ্গণে। তবে ভোগপ্রসাদ গ্রহণ এবং রাত্রি যাপনের জন্য আগে থেকে ৮৩৪৮৯৬৮২৪৪ এই নাম্বারে ফোন করে জানাতে হবে। বর্তমানে কবির জন্মভিটেতে বংশধররা কেউ থাকেননা । তবে বাড়ি দেখাশোনা করার জন্য রয়েছে কেয়ারটেকার। কেয়ারটেকারদের কাছে জানা গিয়েছে কর্মসূত্রে কবির বংশধরেরা সকলেই কলকাতায় থাকেন। তবে শীতের সময় তাঁরা অনেকেই আসেন পৈতৃক ভদ্রাসনে।