হার্টের গুরুতর সমস্যা, ডায়াবেটিক, স্নায়ুর জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারে ওই শিশু। এই ধরণের সমস্যা থাকলে তাকে দ্রুত চিকিৎসক দেখানোর কথা বলা হচ্ছে।
শিশুদের ঘুমের সমস্যাকে বেশিরভাগ সময়ই বাবা, মা বা পরিবার সেরকম গুরুত্ব দেয় না। কিন্তু পড়াশোনায় হঠাৎ করে অমনোযোগী হয়ে পড়া, মেজাজ খিটখিটে,অতিরিক্ত দুষ্টুমি করলে অবশ্যই নজর রাখতে হবে। ঘুমের সমস্যার জন্যই আচরণগত এইসব পরিবর্তন ঘটে বলছেন চিকিৎসকরা।
advertisement
আরও পড়ুন- প্রায়ই পোস্ট করেন সামাজিক মাধ্যমে, বলুন তো সেলফি-র বাংলা কী? জানেন না প্রায় কেউই
*শিশুদের ঘুমের রোগ*
চিকিৎসা পরিভাষায় বলে অবস্ট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ানাক ডাকা, হা করে ঘুমোনো, দিনের বেলা অতিরিক্ত ঘুমের ভাব, অতিরিক্ত চঞ্চলতা, ২৫ শতাংশ শিশুই এই রোগের শিকার। স্থূলকায় শিশুদের চিন্তা বেশি। বড় হয়ে হার্টের সমস্যা,ডায়াবেটিক, স্নায়ুর, কিডনির সমস্যা দেখা দিতে পারে। করোনার পর এই সমস্যা আরও বেড়েছে।
করোনার সময় ঘরের বাইরে না বেরোনো, মাঠে খেলাধুলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে অতিরিক্ত মোবাইল, ল্যাপটপে, টিভিতে আসক্তি শিশুদের ঘুমের দফারফা করে দিয়েছে। আর সেটাই অশনি সংকেত বলে জানাচ্ছেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা।
অ্যাপোলো হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ পল্লব চট্টোপাধ্যায় জানান, "শিশুকে রাতে ঘুমোনোর উপযুক্ত পরিবেশ দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঘুমের আগে কোনোভাবেই মোবাইল,কম্পিউটার, টিভি দেখা উচিত নয়, বরং হালকা গরম জলে স্নান করিয়ে গল্প বা গান শুনিয়ে শিশুকে ঘুম পাড়ানো উচিত। নয়তো এই শিশুরাই পরবর্তীতে নানা গুরুতর শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত হবে।
আরও পড়ুন- ভয়ঙ্কর দৃশ্য, চক্ষু চড়ক গাছ, বাথরুমে মানুষের সঙ্গে কেউটে, সাপের হাড়হিম ভিডিও
আগে যৌথ পরিবার থাকায় বাড়ির বয়স্করা শিশুদেরকে গানে গল্পে ভুলিয়ে ঘুম পাড়াতেন। এটা অত্যন্ত বৈজ্ঞানিক। খাওয়া দাওয়ার পর নূন্যতম এক ঘন্টা বাদে শিশুর ঘুমানো উচিত আর এই সময় ঘুমের উপযুক্ত পরিবেশ থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শুভাশীষ রায় বলেন, "আগের থেকে অনেক সচেতনতা বেড়েছে বাবা মায়ের। বাচ্চাদের ঘুমের মান নির্ণয়ের জন্য এখন স্লিপ স্টাডি বা পলিসনোগ্রাম পরীক্ষা অনেক বাবা,মাই করাচ্ছেন।"
তবে ছোট হোক বা বড় হোক, অবস্ট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া এখনো কোনও চিকিৎসা বিমায় অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন চিকিৎসকরা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে এই বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠিও পাঠানো হয়েছে।
অন্যদিকে বেলেঘাটার ইনস্টিটিউট অফ স্লিপ সাইন্স এর ডিরেক্টর সোমনাথ মাইতি জানাচ্ছেন, শিশুদের ঘুমের সমস্যা এখন সর্বজনীন। অর্থনৈতিক অবস্থান যাই হোক না কেন, ধনী-গরীব নির্বিশেষে শিশুরা মারাত্মক একাকিত্বে ভুগছে। তাদেরকে কেউ সময় দিতে চায় না খেলাধুলো শরীর চর্চা দৌড়ঝাঁপ করা সমস্ত কিছুই এখনকার শিশুরা করে না বললেই চলে।
উল্টে অনিয়ন্ত্রিত লাইফ স্টাইল খাওয়া-দাওয়া বেশি হত শারীরিক পরিশ্রম না করে যথেচ্ছহারে কোল্ড ড্রিংকস, চিপস্, প্রিজারভেটিভ দেওয়া খাবার খেয়ে ঘুমের দফারফা করছে এই শিশুরা। আমাদের ক্লিনিকে প্রতিদিন যেভাবে এই অবসট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে, তা অত্যন্ত আশঙ্কার।