আর পরিবেশের এই ক্রমাগত উষ্ণ হয়ে ওঠার মূল উপাদান হিসাবে কার্বন ডাই অক্সাইডের কথাই বলছেন বিজ্ঞানীরা। যা মানুষের সভ্যতার নানা কিছু পরিবেশে ক্রমাগত সঞ্চয় করেই চলেছে, অন্য দিকে, উদ্ভিদজগৎ হাজার চেষ্টা করেও বাতাস থেকে তার সবটুকু সরাসরি শুষে নিতে পারছে না। তবে যান্ত্রিক জোরে প্রকৃতিকে বশে এনেছে মানুষের সভ্যতা, ফলে বাতাস থেকে সরাসরি কার্বন ডাই অক্সাইড শুষে নেওয়ার মতো যান্ত্রিক পদ্ধতিও আবিষ্কার হয়ে গিয়েছে। একে বলা হচ্ছে ডায়রেক্ট এয়ার ক্যাপচার (Direct Air Capture) প্রযুক্তি। এবার এই পদ্ধতিকে সঙ্গী করেই আইসল্যান্ডে বাতাসের কার্বন ডাই অক্সাইড সরাসরি শুষে নেওয়ার কাজ শুরু করল বিশ্বের বৃহত্তম কারখানা।
advertisement
জানা গিয়েছে যে সুইস স্টার্ট-আপ সংস্থা ক্লাইমওয়ার্কস এজি (Climeworks AG) এই ব্যাপারে হাত মিলিয়েছে আইসল্যান্ডের কার্বন স্টোরেজ ফার্ম কার্বফিক্সের (Carbfix) সঙ্গে। আপাতত, এই সংস্থা কাজ শুরুও করে দিয়েছে। এদের লক্ষ্যমাত্রা হল প্রতি বছরে সরাসরি বাতাস থেকে চার হাজার টন কার্বন ডাই অক্সাইড শুষে নেওয়া। এই জায়গায় এসে সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন ওঠে যে এই সংখ্যাটা কি প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট? সেই প্রশ্নের উত্তর একটু অন্য ভাবে দিয়েছে সংস্থা। জানিয়েছে যে ৭৯০টা গাড়ি থেকে প্রতি বছরে যে পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ হয়, এই চার হাজার টন কার্বন ডাই অক্সাইড তার সমতুল্য।
অন্য দিকে, ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির (International Energy Agency) পরিসংখ্যান বলছে যে গত বছরেও বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের নিঃসরণের পরিমাণ ছিল ৩১.৫ বিলিয়ন টন। ফলে, এখনও পর্যন্ত যা দেখা যাচ্ছে, উদ্যোগ প্রশংসনীয় হলেও তার ফলাফল প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়।
ক্লাইমওয়ার্কস এজি এবং কার্বফিক্স, এই দুই সংস্থাই এক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত ব্যয়ের দিকে তর্জনী নির্দেশ করছে। জানা গিয়েছে যে এই কাজে আইসল্যান্ডের কারখানায় বসানো হয়েছে আটটি বৃহদাকার কন্টেনার, যার মধ্যে উন্নত প্রযুক্তির ফিল্টার এবং ফ্যান থাকবে, যা বাতাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড শুষে নিতে সাহায্য করবে। এর পরে তা মিশিয়ে দেওয়া হবে জলের সঙ্গে, পরের ধাপে সেই জল মাটির অতি গভীর স্তরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে, সেখানেই ওই কার্বন ডাই অক্সাইড ধীরে ধীরে পাথরে রূপান্তরিত হবে। অনুমান করতে অসুবিধা নেই যে এই পদ্ধতি বেশ ব্যয়বহুল, তবে ক্লাইমওয়ার্কস এজি জানিয়েছে যে ভবিষ্যতে এই পদ্ধতি সুলভ হয়ে উঠবে।