প্রবন্ধ: বিষাক্ত হাওয়ার ফলাফল: দিল্লির নির্মম বাতাস এখন মানুষের প্রাণের শত্রু হয়ে উঠেছে। এই ধোঁয়ায় ভরা দিল্লি-এনসিআর-এ শ্বাস নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। আমরা সবাই জানি এই বিষাক্ত হাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর খুব খারাপ প্রভাব ফেলছে, কিন্তু ডাক্তাররা এক চমকপ্রদ তথ্য সামনে এনেছেন যা খুবই ভয়ানক। ডাক্তাররা কিছু মানুষের CT-SCAN করার পর জানতে পেরেছেন, এই বিষাক্ত হাওয়ার কারণে মানুষের ফুসফুসে যেভাবে করোনা সময়ে প্যাচ তৈরি হতো, ঠিক সেরকম প্যাচ এখনো তৈরি হচ্ছে। এই রিপোর্ট খুবই ভয় পাওয়ার মতো, কারণ আমরা সবাই জানি করোনার ফল কী হয়েছিল। এই পুরো বিষয় নিয়ে আমাদের লোকাল 18 ইন্ডিয়ার সহকর্মী রবি সিংহ বিখ্যাত রেডিয়োলজিস্ট ডঃ সন্দীপ শর্মার সঙ্গে কথা বলেছেন।
advertisement
ক্যান্সারেরও ঝুঁকি বেড়েছে
লোকাল 18 ইন্ডিয়ার সঙ্গে কথোপকথনে সিনিয়র রেডিয়োলজিস্ট ডঃ সন্দীপ শর্মা জানিয়েছেন, যেভাবে কোভিডের সময় ফুসফুসে প্যাচ দেখা যেত, এখন ঠিক সেরকম অবস্থা দূষণের জন্যও দেখা যাচ্ছে। বাতাস যত খারাপ হচ্ছে, আমাদের ফুসফুসের অবস্থাও তত খারাপ হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, CT-SCAN আর চেস্ট এক্স-রে-তে আগের তুলনায় এখন বেশি প্যাচ দেখা যাচ্ছে। এর সবচেয়ে বড় কারণ বাতাসে থাকা PM ২.৫-এর মতো খুব সূক্ষ্ম কণা, যা শ্বাসের মাধ্যমে সরাসরি ফুসফুসে চলে যায় এবং রক্তেও মিশে যায়। এতে শুধু শ্বাসকষ্টই নয়, ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়ছে।
ফুসফুস ঠিকমতো কাজ করতে পারছে না
ডঃ সন্দীপ জানিয়েছেন, যখন AQI ৩০০-র কাছাকাছি পৌঁছে যায়, তখন তার প্রভাব এমন হয়, যেন কেউ দিনে ১৫ থেকে ২০টা সিগারেট খাচ্ছে। দূষিত হাওয়া শ্বাসনালিতে জ্বালা আর ফোলা তৈরি করে। ধীরে ধীরে ফুসফুসের কাজ করার ক্ষমতা কমে যায়। মানে, লাংসের ফাংশন দুর্বল হয়ে পড়ছে। খারাপ হতে থাকা ফুসফুস অনেক গুরুতর রোগের কারণ হয়ে উঠছে। দিল্লির মতো বড় শহরে এখন নন-স্মোকারদের মধ্যেও ফুসফুসের ক্যান্সারের ঘটনা বাড়ছে। অনুমান করা হচ্ছে, ২০২৫ সালে দেশে ফুসফুসের ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা প্রায় ৮১,২০০-তে পৌঁছাতে পারে।
বাচ্চা আর বয়স্কদের ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব
ডঃ সন্দীপ শর্মা জানিয়েছেন, দূষণের কারণে COPD আর অ্যাজমার রোগীদের বারবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে। বাচ্চাদের মধ্যে এতে ফুসফুসের বৃদ্ধি বাধা পাচ্ছে, আর বয়স্কদের জন্য এই অবস্থা প্রাণঘাতী হতে পারে। দূষণের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে বাচ্চা আর বয়স্কদের ওপর। বিশেষ করে যাদের আগে থেকেই শ্বাসকষ্ট বা কোনো গুরুতর রোগ আছে, তাদের জন্য এই বিষাক্ত হাওয়া বড় বিপদের চেয়ে কম কিছু নয়। মানে, পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, যদি বাতাস পরিষ্কার না হয়, তাহলে CT-SCAN আর এক্স-রে-তে ফুসফুসের ছবি আরও ভয়ঙ্কর হতে থাকবে।
